Biniyougbarta | বিনিয়োগবার্তা: ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-বিনিয়োগের খবর প্রতিদিন সবসময়
Biniyougbarta | বিনিয়োগবার্তা: ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-বিনিয়োগের খবর প্রতিদিন সবসময়
Saturday, 12 Apr 2025 21:54
Biniyougbarta | বিনিয়োগবার্তা: ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-বিনিয়োগের খবর প্রতিদিন সবসময়

মুহাম্মদ জাভেদ হাকিম: বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস। বর্তমানে তা নানান দেশে মহামারী আকার ধারণ করেছে। শুরুটা চীন হতে। যা এখন ভয়ঙ্কর রুপে তান্ডব চালাচ্ছে ইতালিতে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ইরানে প্রতি দশ মিনিটে একজন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও সারা বিশ্বে এগারো হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

আক্রান্তর শিকার দুই লাখ বাহাত্তর হাজারেরও বেশী। বাংলাদেশও এর বাহিরে নয়। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন আক্রান্তসহ একজনের মৃত্যু। কিছুকিছু অঞ্চল করা হয়েছে লকডাউন। আতংকিত সারাদেশ। দিশেহারা বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা। নানান বিজ্ঞ ব্যক্তিরা দিচ্ছেন প্রতিকারমূলক মতামত। বিভিন্ন সভা সেমিনারে চলছে সচেতেনতামূলক প্রচারণা। এত কিছুর পরেও থেমে নেই করোনার বিস্তার। এপর্যন্ত ১৮০টি রাষ্ট্রের মানুষ হয়েছে আক্রান্ত। আমেরিকাসহ পৃথিবীর পরাশক্তি রাষ্ট্রগুলোও করোনার ছোবলের বাইরে নয়।

এতকিছুর পরেও এখনো মানুষ বুঝতে পারতেছে না, আসলে এই করোনার ধ্বংসলীলার শক্তির উৎসটা কোথায়। সল্প সংখ্যক বাদে অধিকাংশই শুধু সায়েন্টিফিক সমাধানে ব্যস্ত।

এক্ষেত্রে ইসলাম কি বলে :

করোনা হল আসমানি বালা-মুসিবত। এরকম গজব যা বান্দাদের জন্য শাস্তিস্বরুপ আসে। আবার কখনোবা বান্দাকে সঠিক পথে ফিরে আসার সুযোগ হিসেবেও আসে। যেসব রোগের শুরুতেই কোন প্রতিষেধক নেই, সেসব রোগে মানুষ আক্রান্ত হবার ভয়ে, খাটি মুমিন বাদে অনেকেই এলামেলো বকতে শুরু করে। এতে বান্দা/বান্দিদের ঈমানী শক্তি লোপ পাবার সঙ্গে সঙ্গে, কখনো কখনো ঈমানহারা হয়ে যায়।

তবে ধৈর্য হারা হলেই শেষ। খাঁটি মুমিন কখনো আযাবে ধৈর্যহারা কিংবা আতংকিত হন না। বরং তারা আরো বেশী আল্লাহর পথে নিজেকে রুজু করে। বান্দাদের কৃতকর্মের কারণে যখন আযাব/গজব আসে,তখন পরহেজগার ব্যক্তি সহ শিশু-বৃদ্ধ কেউই রেহাই পায় না। বরং অন্যদের আহবান না জানিয়ে, নিজের আমল ভারী করা বজুর্গরা, অনেক সময় আগেভাগে গজবের শিকার হন। এই দেখে কম আমল বা গাফেল ব্যক্তিদের মনে বিশ্বাস সৃষ্টি হয়, এবাদত বন্দেগী করে লাভ কি। গজবের শিকার হয়ে অনেক সময় পরহেজগার হয়ে যান গাফেল, আর গাফেল হয়ে উঠেন পরহেজগার।

করোনার মত আজাব যখন বিধর্মী রাষ্ট্রে আগে শুরু হয়, তখন মুসলিম রাষ্ট্রের নাগরিকরা তাদের নানান অত্যাচারের ডালি মেলে ধরে। মূলত, এরকম পরিস্থিতিতে ধর্ম না টেনে, মুসলিমদের কর্তব্য তাদেরকে সহায়তা করা। কারণ, মৃত্যুর আগ মূহুর্ত পর্যন্ত বলা যাবে না, কার মৃত্যু কিভাবে হবে।

জগতের সকল ধর্মের মানুষই এক আল্লাহর সৃষ্টি। কোন অবস্থাতেই ভিন্ন ধর্মাবলম্বীর কাউকে নিজের চাইতে অধম ভাবা যাবে না। করোনা ভাইরাসের মত কঠিণ রোগ-বালাইর সময় চিকিৎসক, সরকার ও ধর্মীয় নিয়মাবলীগুলো অনুসরণ করা কর্তব্য।

ধর্মীয় গোড়ামি হতে চিকিৎসকের পরামর্শ ও সরকারের আইন অমান্য করাটাও ইসলামের দৃষ্টিতে অত্যন্ত গহীর্ত হিসেবে বিবেচ্য। মুমিন বান্দাদের এই সময়ে ধৈর্যের সঙ্গে আরো বেশী বেশী আমল বাড়িয়ে দিতে হবে। সেই সঙ্গে আমলের বরকত সম্পর্কে অন্যদের মাঝেও ছড়িয়ে দিতে হবে। প্রত্যেক আসমানি রোগবালাইর সময়েই কতিপয় হক্কানী আলেম সমাজ হতে প্রতিকারের বিশেষ আমল আসে। যা তারা অবস্থার উপরে বলে থাকেন। কখনো বা স্বপ্নযোগেও পেয়ে থাকেন।

এবারের মহামারী করোনা’য় বিখ্যাত আলেম সুপরিচিত ইসলামী ব্যক্তিত্ব হযরত মুফতি তাকী ওসমানী [দাঃমাঃ] করোনা হতে রক্ষা পাবার জন্য আমল দিয়েছেন।

যথাক্রমে:  ১/সুরা ফাতিহা তিনবার ২/ সুরা এখলাস তিনবার ও হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি’মাল ওয়াকিল ৩১৩ বার পাঠ করতে হবে।

এই আমল হুজুরে পাক মুস্তফা করিম [সাঃ] হতে করোনা মহামারীর প্রেক্ষিতে স্বপ্নযোগে পাওয়া। মুমনিদেরকে সর্বাস্থায় খেয়াল রাখতে হবে, আমার আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট। সুতরাং হতাশ হবার সুযোগ নেই। হতাশাগ্রস্থরা বিপথগামী।

আসুন, দেশের এই ক্রান্তীলগ্নে বাড়িতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার মজুদ না করে, স্বাস্থ্য কর্মীদের পরামর্শ পালনের পাশাপাশি বেশী বেশী এস্তেগফার পড়ায় অভ্যস্ত হই। সেই সঙ্গে ওলামায়ে দেওবন্দ ইসলামী সকল মহলে গ্রহণযোগ্য আলেমে দ্বীন হযরত মুফতি তাকী ওসমানী [ দাঃ] কর্তৃক জানিয়ে দেয়া করোনা হতে বাঁচার বিশেষ আমলে, নিজেরা সহ অন্যদেরকেও ব্রত করার চেষ্টা করি। করোনার প্রকোপে স্বাস্থ্যঝুঁকি, মৃত্যু তথা সমগ্র বিশ্বে অর্থনৈতিক বিনিয়োগ স্থবির। সুতরাং মুসলিমদের আস্থা রাখতে হবে পরম করুণাময় আল্লাহপাকের শক্তিমত্তার উপর। সকল ক্ষমতার উৎস একমাত্র তিনিই। তিনিই পারেন এই মহামারী করোনা হতে মুক্তি দিতে।

(মুহাম্মদ জাভেদ হাকিম/২১ মার্চ ২০২০)