Biniyougbarta | বিনিয়োগবার্তা: ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-বিনিয়োগের খবর প্রতিদিন সবসময়
Biniyougbarta | বিনিয়োগবার্তা: ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-বিনিয়োগের খবর প্রতিদিন সবসময়
Thursday, 01 Jan 1970 06:00
Biniyougbarta | বিনিয়োগবার্তা: ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-বিনিয়োগের খবর প্রতিদিন সবসময়

শামীম-আল-মাসুদ, হেড অব নিউজ, বিনিয়োগবার্তা: দেশে বর্তমানে ব্যবসা বাণিজ্য বান্ধব একটি সরকার রয়েছে। তারপরেও নানা কারণে দেশে শিল্প- বিনিয়োগ বাড়ছে না। গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকট, দূর্বল অবকাঠামো ব্যবস্থা, ব্যাংক লোনের উচ্চ সুদ এসবের মধ্যে অন্যতম। এছাড়া নানা ধরনের ইমেজ সংকটের কারণে বাংলাদেশ ব্যবসা বাণিজ্যের কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছাতে পারছে না। কয়েকমাস আগে ব্লগার বা বিদেশী হত্যাকান্ডের মাধ্যমে এ সংকট আরো প্রকট হয়েছে। আমাদের প্রতিবেশি দেশ বা বহিবিশ্বের অনেক দেশই চায় না বাংলাদেশ এগিয়ে যাক। এ সংকট থেকে উত্তোরনে সরকার ও ব্যবসায়িদের মধ্যে সু-সমন্বয় করতে হবে। আর এই সমন্বয়ের মাধ্যমে সকল সমস্যা কাটিয়ে আমাদের কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছাতে হবে।

একান্ত আলাপচারিতায় বিনিয়োগবার্তাকে এসব কথা বলছিলেন দেশের ব্যবসায়িদের সবচেয়ে বড় সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) পরপর পাঁচ বার নির্বাচিত পরিচালক খন্দকার রুহুল আমিন। তিনি এসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে নির্বাচিত পরিচালক। সাক্ষাৎকারটি গ্রহন করেছেন বিনিয়োগবার্তার হেড অব নিউজ শামীম-আল-মাসুদ।

গ্যাস বিদ্যুতের সংকট আর ব্যাংকের উচ্চ সূদের কারণে শিল্পায়ণ বাড়ছে না উল্লেখ করে খন্দকার রুহুল আমিন বলেন, বর্তমানে দেশে বিদ্যুতের উৎপাদন বেড়েছে। ফলে বিদ্যুৎ সরবরাহ কিছুটা নিরবচ্ছিন্ন হয়েছে। কিন্তু গ্যাসের বিষয়টি নিয়ে আসলে একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রয়োজন। আমাদের দেশে যে পরিমান গ্যাস মজুদ রয়েছে তা দিয়ে আমরা আর কতদিন চলতে পারবো। কতদিন পরে গ্যাস সংকট দেখা দিতে পারে- এসব বিষয় নিয়ে সুনির্দিষ্ট বিশ্লেষণ বা দিক নির্দেশনা থাকা উচিত। তাহলে শিল্প উদ্যোক্তাদের মধ্যে আর কোনো সংশয় থাকবে না। এরফলে শিল্পোদ্যোক্তারা কারখানায় গ্যাসের বিকল্প পদ্ধতি রাখবে। তখন গ্যাস সংকট থাকলেও উৎপাদনে কোনো ভাটা পড়বে না। এছাড়া অবকাঠামো খাতে বড় বড় প্রকল্পের পাশাপাশি তৃনমূলের রোস্তাঘাটের দিকেও নজর দিতে হবে। পুরোনো শিল্পঞ্চলগুলোর রাস্তাঘাটের বেহাল দশা। এগুলো সংস্কার করা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, ব্যাংক লোনের সূদ হার কমাতে এফবিসিসিআই সরকারের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছে। ইতোমধ্যে আমানতের সূদ হার কমানো হয়েছে। আর লোনের সুদ হারও সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হচ্ছে। অচিরেই এর সুফল ব্যবসায়িরা ভোগ করতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

এক প্রশ্নের জবাবে খন্দকার রুহুল আমিন বলেন, ব্লগার বা মুক্তমনা লেখকদেরতো কত কিছু নিয়েই লেখার সুযোগ রয়েছে। শুধু ধর্মীয় অনুভূতি নিয়ে তাদের সুরসুরি দিতে হবে কেন। দেশের অনান্য ইস্যু নিয়েতো তারা লিখতে পারে। দেশের সমস্যা সম্ভাবনা, ব্যবসা-বাণিজ্য, সামাজিক, রাজনৈতিক হাল অবস্থাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তারা লিখতে পারে। আমার মনে হয়, ব্লগারদের উচিত ধর্ম নিয়ে কোনো বিতর্ক সৃষ্টি না করা। ধর্ম অত্যন্ত স্পর্শকাতর ইস্যু। তাই ধর্ম নিয়ে কোনো ধরনের বিতর্কিত কথা না বলা কিংবা কোনো ধরনের বিতর্কিত লেখায় না যাওয়াই উচিত।

এফবিবিসিআইর এই পরিচালক বলেন, পৃথিবীর সব দেশেই কমবেশি সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ঘটে থাকে। সম্প্রতি ফ্রান্সের মতো উন্নত দেশেও হামলা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও প্রায়ই সন্ত্রাসী হামলা হয়। লন্ডনেও একাধিকবার হামলা হয়েছে। এসব উন্নত দেশেতো নিরাপত্তার কোনো সমস্যা নাই। তারপরেও তো হামলা হচ্ছে। কিন্তু তাদের ক্ষেত্রেতো এমন ইমেজ সংকট সৃষ্টি হয় না। সকল সমস্যা আামদের এখানে।

সাম্প্রতিক আইএস এর উত্থান সম্পর্কে তিনি বলেন, আইএস কার সৃষ্টি। আমিতো মনে করি, ইউরোপ আমেরিকাই এ ধরনের চরমপন্থি সংগঠনের সৃষ্টি করছে। তিনি বলেন, ইরাক, সিরিয়ার মতো দেশগুলোতো ভালভাবেই চলছিল। তারাতো কোনো দেশের ক্ষতি করেনি। তারপরেও এসব দেশে কেন হামলা করা হচ্ছে। জোড় করে বা প্রভাব খাটিয়ে তাদেরকে কাবু করে একটি আধিপত্যবাদ কায়েম করার নামই কি শান্তি ফিরিয়ে আনা। চাপ প্রয়োগ করে কোনো কিছু আদায় করলে তার ফল ভালো আসে না। চাপা ক্ষোভ থেকেই একদিন জনবিস্ফোরণ ঘটে।

ঢাকার নবাবগঞ্জের কৃতি সন্তান খন্দকার রুহুল আমিন এফবিসিসিআইর মোট পাঁচবার নির্বাচিত পরিচালক। এ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে নির্বাচিত এ পরিচালক বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতির প্রতিনিধি হিসাবে এফবিসিসিআইতে চার নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু চলতি মেয়াদে বাংলাদেশ অটো রিকসা ও সিএনজি চালিত অটো রিকসার যন্ত্রপাতি আমদানীকারকেদের সংগঠন থেকে প্রতিনিধি করছেন তিনি।
বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে তার রয়েছে অত্যন্ত নিবির সম্পর্ক। তিনি একাধারে খন্দকার হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট, খন্দকার কনভেনশন সেন্টার, খন্দকার টি কোম্পানি, খন্দকার ইলেকট্রিক এন্ড ইলেকট্রনিক্স, খন্দকার ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, খন্দকার ট্রেডার্স, খন্দকার প্যালেস ইন্টারন্যাশনাল হোটেল, হোটেল ইয়ামেনি ইন্টারন্যাশনাল, খন্দকার গেস্ট হাউজ, খন্দকার গার্মেন্টসসহ আরো কিছু প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারি।

(শামীম/ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, পূণ:প্রকাশ ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭)