মো: শাহাদাৎ হোসেন রাজু, নরসিংদী: নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার বাঁশগাড়ী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দুই লাঠিয়াল বাহিনীর মধ্যে বন্দুক ও টেটাযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে প্রতিপক্ষের গুলিতে জয়নাল (২২) ও আরশ আলী (২৫) নামে দুই জন নিহত এবং কমপেক্ষে ২৫ জন আহত হয়েছে। একই ঘটনায় ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ হয়েছে কমমেশী ১৭টি বাড়ীতে। আহতদের মধ্যে কাউছার নামে এক জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকীদের নরসিংদী সদর, জেলা হাসপাতাল ও নবীনগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কেউ কেউ বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা নিচ্ছে বলে জানা গেছে।
এই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজহারুল ইসলাম সরকার।
বাঁশগাড়ী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মিনহাজ জানান, বিগত ১৯ এপ্রিল দুই আওয়ামী লীগ নেতার মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বাঁশগাড়ী ইউনিয়নে টেটা ও বন্ধুক যুদ্ধের পর বর্তমান চেয়ারম্যান সিরাজুল হক সরকার গ্রুপ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় এবং সাহেদ সরকার গ্রুপ এলাকা দখলে আসে। রোববার বেলা ১২ টার দিকে সিরাজুল ইসলাম গ্রুপ আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে এলাকা দখলের চেষ্টা চালালে সাহেদ সরকার গ্রুপ বাধার সৃষ্টি করে। এতে দু’পক্ষের মধ্যে টেটা ও বন্ধুক যুদ্ধ শুরু হয়। এই টেটা ও বন্ধুক যুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হয়ে রাজনগর গ্রামের জহর মিয়ার পুত্র জয়নাল মিয়া ও ছোবানপুর গ্রামের শুক্কুর আলীর পুত্র আরশ আলী নিহত হয় এবং কমবেশী ২৫ জন টেটা ও গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়। আহতদেরকে নরসিংদী, নবিনগরসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বন্ধুক ও টেটা যুদ্ধ চলাকালে দুটি বাড়ী আগুন লাগিয়ে পুড়ে ফেলা হয় এবং ১৫টি বাড়ী ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে।
ঘটনার খবর পেয়ে রায়পুরা সার্কেলের এএসপি মোঃ বিল্লাল হোসেন, রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম বিপুল সংখ্যক পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বেলা চার টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। বর্তমানে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। যে কোন সময়ই পূনরায় বড় ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে। ইতি পূর্বে বাঁশগাড়ী আওয়ামী লীগের এই দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে মোট ছয় জন খুন হয়েছে। পুড়ে ফেলা হয়েছে দুই শতাধিক বাড়ীঘর। ভাংচুর ও লুটপাট হয়েছে অর্ধ সহস্রাধিক বাড়ী।
(এসএইচআর/ এসএএম/ ০৮ মে ২০১৭)