নিজস্ব প্রতিবেদক, বিনিয়োগবার্তা: “শোনো, একটি মুজিবরের থেকে লক্ষ মুজিবরের কন্ঠস্বরের ধ্বনি, প্রতিধ্বনি আকাশে বাতাসে ওঠে রণি। বাংলাদেশ আমার বাংলাদেশ।।”
গৌরী প্রসন্ন মজুমদার গানের ছন্দে যে বজ্রকন্ঠের ছবি এঁকেছেন, সেই বজ্রকন্ঠ কি মুহূর্তেই গড়ে উঠেছিল, নাকি ধীরে ধীরে ছেলেবেলা থেকেই তৈরি হচ্ছিলেন স্বাধীনতার মহানায়ক? একজন দেশপ্রেমিক যেমন একদিনে সৃষ্টি হয় না, তাঁর মন, চারপাশের জগতের সাথে তাঁর মিথস্ক্রিয়া তাঁকে যোগ্য বীর হিসেবে গড়ে তোলে। কেমন ছিল জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের ছেলেবেলা? কিভাবে ধীরে ধীরে বাংলার মাটি ও মানুষের সাথে তাঁর নাড়ীর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিলো? বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মবার্ষিকে রাজনীতির কবি বাংলার মহানায়কের জীবন নিয়ে নির্মিত হয়েছে আগামীল্যাবস এর এনিমেশন “খোকা থেকে বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা”।
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিশুকাল থেকেই স্বভাবসুলভ নেতৃত্বগুণে, অনন্য সাধারণ ও স্বতন্ত্র দর্শনে এবং বহু ত্যাগের বিনিময়ে আদরের খোকা থেকে হয়ে উঠেন বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা। শিশুকাল থেকে তাঁর নেতৃত্বের মধ্যে দেখা যায় সকলের জন্য মঙ্গলজনক স্বতন্ত্র সামাজিক দর্শন, সকল ধর্মের মানুষের প্রতি সহমর্মিতা, জাতীয়তাবাদী মনোভাব ও গণতন্ত্রের প্রতি অগাধ আস্থা। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর এই বর্ণিল শৈশব ও কৈশোর এখনো অনেক শিশুকিশোর ও তরুণদের অজানা। আগামী-প্রজন্ম তথা আজকের শিশুকিশোরতরুণসহ সবার কাছে প্রাণপ্রিয় নেতা স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও দর্শন এনিমেশনের মাধ্যমে সহজে বোধগম্য করে উপস্থাপন করা এই চলচ্চিত্রের মূল লক্ষ্য। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীতে আগামীল্যাবসের নিবেদন প্রায় ৪০ মিনিট দৈর্ঘ্যের এনিমেশন “খোকা থেকে বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা”।
এই এনিমেশনে উপস্থাপন করা করা হয়েছে শিশু মুজিবের মনে প্রতিটি মানুষকে সমমর্যাদা দেবার এক ব্যতিক্রমী চিত্র এবং গতানুগতিক পারিবারিক নিয়মের বাইরে গিয়ে মানব সেবার কাজে তার বাবা মায়েরও ছিল প্রবল সমর্থন। যা বর্তমান সময়ের বাবা-মায়েদের জন্য একটি অনুসরণীয় দিক হতে পারে। বঙ্গবন্ধুর শৈশব, কৈশোর ও তারুণ্য আজকের শিশু-কিশোর-তরুণদের ভবিষ্যৎ সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পথ দেখাবে। তাঁর আদর্শ এসময়ের শিশু-কিশোর ও তরুণদের যথার্থ নেতা অথবা আদর্শ শিক্ষক কিংবা অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ময়দানে প্রতিবাদী সঙ্গী হয়ে ওঠার প্রেরণা যোগাবে। তখনকার কলকাতার হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা বঙ্গবন্ধুর মনে গভীর রেখাপাত করেছিল বলে তিনি সকল ধর্মের মানুষের জন্য হিতকর ধর্মনিরপেক্ষতার কথা ভেবেছিলেন। দেশভাগ তাঁর মনোজগতে প্রবলভাবে রেখাপাত করেছিল এবং সমসাময়িক রাজনীতি তাঁকে আরো পরিপক্ক ও জাতীয়তাবাদী করে তুলেছিল। শৈশব কৈশোর ও তারুণ্যের সমস্ত পালাক্রমের মধ্যে দিয়েই টুঙ্গিপাড়ার খোকা হয়ে উঠেন বিশ্বনেতা, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
উল্লেখ্য, এনিমেশন চলচ্চিত্রের প্রথম ২২ মিনিট ২০২০ সালের ১৭ই মার্চ তারিখে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে প্রথম সম্প্রচারিত হয় জনপ্রিয় টেলিভিশন একুশে টিভিতে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালের ১৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে একুশেটিভিতে সম্প্রচারিত হতে যাচ্ছে ৪০ মিনিট দৈর্ঘের এই এনিমেশন চলচ্চিত্রটি। কোভিড-১৯ এর করাল থাবায় যখন বিশ্ব স্থবির হয়ে পড়েছিল, তখনো আগামীল্যাবসের সকল কুশীলব ঘরে বসেই এই চলচ্চিত্রটির নির্মাণকাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। চলচ্চিত্র পরিচালকের দক্ষতা ও আগামীল্যাবসের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ঐকান্তিক ইচ্ছায় অর্থকষ্টসহ শত বাধা ডিঙ্গিয়ে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলে এনিমেশনের কাজ। আগামীল্যাবস সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে চলচ্চিত্রটি তৈরি করে বঙ্গবন্ধুর প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা নিবেদন করছে।
আগামীল্যাবস প্রযোজিত “খোকা থেকে বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা” এনিমেটেড চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন প্রফেসর ড. মোঃ হানিফ সিদ্দিকী। কাহিনী সম্পাদনা করেছেন আগামীল্যাবসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও এই চলচ্চিত্রের প্রযোজক তসলিমা খানম, বিশিষ্ট লেখক রুদ্র সাইফুল, ও সানজিদা শারমিন প্রমি। এনিমেশনের মত জটিল কাজে নেতৃত্ব দিয়েছেন একঝাঁক তরুণ এনিমেটর ও চিত্রশিল্পী। নাট্যকলার সাথে সম্পৃক্ত একঝাঁক তরুণ অভিনেতার কণ্ঠে ফুটে উঠেছে কাহিনীচিত্র। পৃথ্বিরাজ রঞ্জন নাথের মিউজিক ডিরেকশন ও শব্দ কৌশলে নির্মিত হয়েছে “খোকা থেকে বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা”।
(এসএএম/১৭ মার্চ ২০২১)