বিনিয়োগবার্তা ডেস্ক: তৈরি পোশাক থেকে শুরু করে রত্নপাথর, জুয়েলারি, কৃষিপণ্যের মতো ভারতের শীর্ষস্থানীয় রফতানি পণ্যগুলো গত পাঁচ বছরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাজার শেয়ার হারিয়েছে। সব মিলিয়ে এ তালিকায় মোট ৬১ ধরনের পণ্য রয়েছে। বলা হচ্ছে, চাহিদা হ্রাসের পাশাপাশি প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির কারণেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। খবর ইকোনমিক টাইমস।
২০১১ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে ভারতের ৬১ ধরনের রফতানি পণ্য আন্তর্জাতিক বাজার শেয়ার হারিয়েছে। এর মধ্যে দেশটি যেমন তাদের তৈরি দামি গাড়ি ও হাতব্যাগের চাহিদা বাড়াতে ব্যর্থ হয়েছে, তেমনি চীনের মতো প্রতিযোগীদের কারণে ভারতের স্বর্ণ ও রুপার অলঙ্কার বাজার শেয়ার হারিয়েছে। এর মধ্যে ভারতের তৈরি গাড়ির ২০১১ সালে বাজার শেয়ার ছিল ৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ; ২০১৬ সালে যা ৫ দশমিক ৭৭ শতাংশে নেমে আসে। মূলত এক্ষেত্রে যাত্রীবাহী গাড়ি নির্মাণে শীর্ষস্থানে থাকা দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের কাছে হেরে গিয়েছে ভারত।
কারিগরদের দক্ষতার ঘাটতির কারণে ভারতের রত্নপাথর ও অলঙ্কার খাত আন্তর্জাতিক বাজারে পিছিয়ে পড়ছে। বিশেষ করে হীরের তৈরি অলঙ্কারে এ ঘাটতি বেশি চোখে পড়ে। ফলে এদিক থেকে চীন ও ভিয়েতনামের কাছে প্রতিযোগিতায় হেরে যাচ্ছে ভারতের জুয়েলারি খাত। গত বছর আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতের তৈরি অলঙ্কারসামগ্রী ও রত্নপাথরের দখল কমে ৩০ দশমিক ৭৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। সব মিলিয়ে ৬১ ধরনের পণ্য নিয়ে ভারতকে সতর্ক করে দিয়েছেন রফতানিকারকরা। পণ্যগুলোর চাহিদা বাড়াতে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে কৌশল পরিবর্তনের অনুরোধ জানিয়েছে তারা।
ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনের মহাপরিচালক অজয় সাহাই এ প্রসঙ্গে জানান, সংশ্লিষ্ট পণ্যগুলোর চাহিদা বাড়াতে এর কৌশল খতিয়ে দেখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে এক্সপোর্ট প্রমোশন কাউন্সিল ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে।
অন্যদিকে ভুট্টা ও খৈলের মতো কৃষিপণ্যের বাজার শেয়ার হারানোর পেছনে মুদ্রামানের ওঠানামা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। যেমন ব্রাজিলের মুদ্রা রিয়ালের মান দুর্বল হওয়ার পর দক্ষিণ আমেরিকার এ দেশটির কাছে বাজার শেয়ার হারিয়েছে ভারত। এ ধরনের পরিস্থিতি সামলে নিতে অভ্যন্তরীণ সক্ষমতা বৃদ্ধি অথবা বাজারে দখল অব্যাহত রাখতে প্রণোদনা দিতে হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদির ইউরোপ সফর শুরু: গতকাল থেকে ইউরোপ সফর শুরু করেছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রথম দিনই ইউরোপের পাওয়ারহাউজ হিসেবে খ্যাত জার্মানিতে পা রেখেছেন তিনি। আশা করা হচ্ছে, তার এ সফরের সুবাদে ইউরোপের শীর্ষস্থানীয় দেশটির সঙ্গে ভারতের অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরো গাঢ় হবে। খবর এএফপি।
জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল প্রায়ই জোর দিয়ে বলেছেন, জার্মানি ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ) অবশ্যই উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক আরো জোরদার করবে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ব্রেক্সিটের এ আমলে জার্মানি আর গতানুগতিক ঘরানার মিত্র যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল হবে না। এ অবস্থায় দেশটি ভারতের সঙ্গে মিত্রতা বাড়াবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
মোদির সফর তালিকায় স্পেন, ফ্রান্স ও রাশিয়াও রয়েছে।
(এমআইআর/ ৩১ মে ২০১৭)