বিনিয়োগবার্তা ডেস্ক: ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলার এক হোটেলের ক্যাসিনোতে গতকাল শুক্রবার বন্দুকধারীর হামলায় ৩৬ জন নিহত হয়েছে। অজ্ঞাতনামা ওই বন্দুকধারী ক্যাসিনোর টেবিলে আগুন লাগিয়ে দিলে হোটেল কমপ্লেক্স ও এর ক্যাসিনোতে ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে বেশির ভাগ লোক মারা যায়।
রিসোর্ট ওয়ার্ল্ড ম্যানিলা নামের হোটেলে বন্দুকধারী ব্যক্তি প্রথমে টিভি মনিটরগুলোতে গুলি করে। পরে নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যা করে।
পুলিশের ভাষ্য, এটা সন্ত্রাসমূলক হামলা বলে মনে হচ্ছে না। ডাকাতির ঘটনা হতে পারে।
৫০ জনেরও বেশি মানুষকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, বন্দুকধারী বেশ দীর্ঘকায় ছিল। গায়ের রং ছিল ফ্যাকাশে এবং সে ইংরেজিতে কথা বলছিল। তবে সে কোন দেশের, তা এখনো জানা যায়নি। অজ্ঞাতনামা ওই ব্যক্তি গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যরাতের পর ক্যাসিনোতে প্রবেশ করে এবং টেলিভিশনের স্ক্রিনে তার বন্দুক দিয়ে গুলি করতে থাকে। এতে ক্যাসিনোতে আগত ব্যক্তিরা প্রাণভয়ে পালাতে থাকে।
এরপর ওই ব্যক্তি জুয়া খেলার টেবিলে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং তার ব্যাকপ্যাকে ১১৩ মিলিয়ন পেসো (ফিলিপিনো মুদ্রা) বা ২৩ লাখ ডলার সমমূল্যের জুয়ার চিপস ভরে নেয়। পরে সে কমপ্লেক্সের হোটেল সেকশনে পালিয়ে যায় এবং ব্যাকপ্যাকটি ফেলে হোটেলের একটি কক্ষে প্রবেশ করে।
দেশটির পুলিশ প্রধান রোনাল্ড ডেলা রোসা বলেন, ওই ব্যক্তি একটি বিছানায় শুয়ে নিজেকে একটি ভারী কম্বল দিয়ে ঢেকে নেয় এবং এতে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। প্রায় পাঁচ ঘন্টা পর কমপ্লেক্সের ভিতরের একটি কক্ষ থেকে বন্দুকধারীর দগ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ প্রধান বলেন, এটাকে ডাকাতির ঘটনা হিসেবেই দেখা হচ্ছে। কারণ ওই ব্যক্তি কাউকে গুলি করেনি, আঘাত করেনি। সে সোজা ক্যাসিনোর চিপস রাখার কক্ষে চলে যায়।
হোটেল কর্তৃপক্ষ শুরুতে এক বিবৃতিতে জানায়, নিজের শরীরে আগুন লাগানোর পর ওই ব্যক্তি নিজেকে গুলিও করে।
ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলে সাম্প্রতিক সংকটের কারণে দেশটি সন্ত্রাসবাদের উচ্চ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলা হচ্ছে। গত ২৩ মে থেকে সেখানে ইসলামি বিদ্রোহী গ্রুপের সঙ্গে লড়াই করছে সরকার। গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুদার্তে দক্ষিণাঞ্চলের দ্বীপ মিনদানায়োতে সামরিক আইন জারি করেন।
এদিকে বন্দুকধারীর হামলার আগেই ফিলিপাইনে সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্র সেখানে বসবাসরত মার্কিন নাগরিকদের সতর্কতার সঙ্গে চলাফেরা করতে বলেছিল।
(এমআইআর/ ০২ জুন ২০১৭)