বিনিয়োগবার্তা ডেস্ক, ঢাকা: সৌদি আরব, মিশর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, লিবিয়া ও ইয়েমেন যে অভিযোগে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে তা ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে কাতার। দেশটি বলছে, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের পেছনে উপযুক্ত কোনো যুক্তি নেই।
সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণার মাধ্যমে ওই ছয় রাষ্ট্র কাতারের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এর আগে সোমবার রিয়াদের রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সির মাধ্যমে দেশটির বাদশা কাতারের সঙ্গে কূটতৈনিক সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দেন। জাতীয় নিরাপত্তার জন্য এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে এতে জানানো হয়।
সৌদি প্রেস এজেন্সি একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে, যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, এই অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা তৈরির লক্ষ্যে সন্ত্রাসী ও সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে কাতার আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে আসছে। এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কাতার এক বিবৃতিতে বলছে, তাদের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করা হয়েছে। তবে দেশটির নাগরিক ও বাসিন্দারা এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, আমাদের ওপর অবিচার করা হয়েছে। যে অভিযোগ করা হয়েছে তার কোনো ভিত্তি নেই। এতে করে কাতারের নাগরিকদের স্বাভাবিক জীবন-যাপনে কোনো রকম প্রভাব পড়বে না।
সৌদি আরবের ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পরই কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওই বিবৃতি দিয়েছে। প্রথমে আরব বিশ্বের চার দেশ কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিলেও পরে ইয়েমেন ও লিবিয়া কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে।
এদিকে, কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের ফলে দোহার সঙ্গে ওই ছয় দেশের আকাশ ও সমুদ্র পথে যান চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়েছে। প্রথমে সৌদিগামী সব ফ্লাইট স্থগিত করে কাতার এয়ার ওয়েজ। এরপর শারজাহ ও দোহাগামী এয়ার অ্যারাবিয়ার বিমানের ফ্লাইট স্থগিতের ঘোষণা আসে আমিরাত থেকে।
আমিরাতের বেসরকারি বিমান সংস্থা ইতিহাদ এয়ার ওয়েজ বলছে, মঙ্গলবার থেকে কাতারগামী বিমানের ফ্লাইট চলাচল করবে না। দুবাইভিত্তিক বিমান সংস্থা এমিরেটস এয়ার লাইন্স, ফ্লাই দুবাইও শিগগিরই তাদের ফ্লাইট বন্ধ করে দিতে পারে বলে আল-জাজিরা জানিয়েছে। তবে অারও কতগুলো বিমান সংস্থা প্রতিক্রিয়া দেখাবে সে বিষয়টি এখনো পরিষ্কার নয়।
কাতারের বিরুদ্ধে নিজেদের পদক্ষেপকে সমর্থনের জন্য ভ্রাতৃপ্রতিম দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সৌদি আরব। তবে পাকিস্তান কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করবে না বলে ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যে নিযুক্ত অাল জাজিরার জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধি হাসেম অাহেলবারা বলেন, কয়েক বছরের মধ্যে এই অঞ্চলে এটা বড় ধরনের রাজনৈতিক সংকট। কাতারের ওপর চাপ বাড়ানোর দুটি দিক অাছে এখানে; রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক।
(এসএএম/ ০৫ জুন ২০১৭)