নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের পুঁজিবাজারকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে গঠিত ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড (সিএমএসএফ) এর তহবিলে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ ও শেয়ার জমা না হওয়ায় ইস্যুয়ার কোম্পানিদের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ফান্ডের অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস ম্যানেজমেন্ট কমিটি (এএএমসি)I
তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর দীর্ঘ দিনের অবণ্ঠিত লভ্যাংশের বিপুল পরিমাণ অর্থ ও শেয়ার এ ফান্ডে আসার কথা থাকলেও অদ্যাবধি ৪৬০ কোটি টাকা এবং বর্তমান মার্কেট ভ্যালুতে ৩৩৮ কোটি টাকার সমপরিমাণ শেয়ার এই ফান্ডে জমা হয়েছে যা খুবই নগণ্য। নিরপেক্ষ অডিট কমিটির এক সভায় কমিটির প্রধান মোঃ আবদুর রউফ, সাবেক অতিরিক্ত সচিব, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি), অর্থ মন্ত্রণালয়, এই মন্তব্য করেন I তিনি বলেন ৩১শে মে, ২০২২ তারিখ পর্যন্ত বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে ইস্যুয়ার কোম্পানি সমূহ সিএসএফের ফান্ডে অর্থ ও শেয়ার ট্রানস্ফার না করলে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এর সাথে সম্পৃক্ত হয়ে নিয়ম অনুযায়ী যে অর্থ ও শেয়ার এই ফান্ডে আসার কথা তা কিভাবে আনা যায় সে বিষয়ে মনিটরিংসহ সার্বিক তত্ত্বাবধান করা হবে। অডিট কমিটির অন্যান্য সদস্যগণ হচ্ছেন এ.কে.এম. দেলোয়ার হোসেন এফসিএমএ, আইসিএমএবি সদস্য এবং সিএমএসএফ বোর্ড সদস্য, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম.এ. মহি, পিএসসি, ইঞ্জি (এলপিআর), মিসেস শাহেদা খানম, সিনিয়র ফিন্যান্স কন্ট্রোলার, বাংলাদেশ নৌবাহিনী (অবসরপ্রাপ্ত), গ্রেড-৩, বিসিএস অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস ক্যাডার এবং জনাব মুহাম্মদ তাজদিকুল ইসলাম, এফসিএমএ, পরিচালক, সিসিবিএল, সকলেই একমত পোষণ করেন।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর দীর্ঘ দিনের অবণ্ঠিত লভ্যাংশের বিপুল পরিমাণ অর্থ রয়েছে। এই অর্থ একসঙ্গে করে বাজারের উন্নয়নে কাজে লাগাতে বিএসইসি ‘ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড’ নামে বিশেষ এই তহবিল গঠন করেছে । সেই সঙ্গে ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড রুলস, ২০২১ গ্রেজেট আকারে প্রকাশ করে। ফান্ডটির রুলস অনুসারে তা পরিচালনার জন্য ১০ সদস্যের একটি শক্তিশালী কমিটি রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রাক্তন সফল চেয়ারম্যান মোঃ নজিবুর রহমান বর্তমানে এই ফান্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।
সিএমএসএফ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষা এবং একটি দক্ষ পুঁজিবাজার গঠনে কাজ করে যাচ্ছে। সিএমএসএফ তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজ ইস্যুকারীর কাছ থেকে অদাবীকৃত এবং অবন্টিত নগদ বা স্টক ডিভিডেন্ড, অফেরত পাবলিক সাবস্ক্রিপশনের অর্থ এবং অ-বরাদ্দকৃত রাইট শেয়ার স্থানান্তর করার মাধ্যমে প্রাপ্ত বিনিয়োগকারীদের পক্ষে নগদ এবং স্টকের অভিভাবক হিসাবে কাজ করছে।
পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি এর নির্দেশে দেশের সরকারি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আইসিবির মাধ্যমে স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডের ১৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। পুঁজিবাজারের সেকেন্ডারি মার্কেটে তারল্য প্রবাহ নিশ্চিত করতেই এই অর্থ বিনিয়োগ করা হয়েছে। বাজার স্থিতিশীলতায় সিএমএসএফ “আইসিবি এএমসিএল সিএমএসএফ গোল্ডেন জুবিলি মিউচুয়াল ফান্ড” নামে একটি ক্লোজড-এন্ড মিউচুয়াল ফান্ড গঠন করেছে। এই ফান্ডের আকার ১০০ (একশত) কোটি টাকা, যার ইউনিট প্রতি অভিহিত মূল্য ১০ (দশ) টাকা। সিএমএসএফ স্পন্সর হিসেবে ৫০ (পঞ্চাশ) কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে।
এছাড়াও বিনিয়োগকারীদের দাবি নিষ্পত্তি এই ফান্ডের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। সিএমএসএফ কার্যক্রম শুরুর পর থেকে অদ্যাবধি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে মোট ২২,৯৬,৮৮০ (বাইশ লাখ ছিয়ানব্বই হাজার আটশ আশি) টাকার অমীমাংসিত দাবি নিষ্পত্তির আবেদন গ্রহণ করেছে এবং ইতোমধ্যে ২১,৩৩,২২৬ (একুশ লক্ষ তেত্রিশ হাজার দুইশত ছাব্বিশ) টাকার দাবি নিষ্পত্তি করেছে যা মোট দাবীর ৯৩ শতাংশ।
বিনিয়োগবার্তা/এসএএম//