বিনিয়োগবার্তা ডেস্ক, ঢাকা: নর্থ লন্ডনের কেনসিংটন এলাকার গ্রেনফেল টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত ব্যক্তির প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে নানা প্রশ্ন দানা বাঁধছে। বিক্ষুব্ধ ব্যক্তিদের অভিযোগ-জনরোষ দমিয়ে রাখতে নিহত ব্যক্তির প্রকৃত সংখ্যা গোপনের চেষ্টা হচ্ছে।
গত মঙ্গলবার মধ্যরাতের পর নর্থ লন্ডনের কেনসিংটন এলাকার গ্রেনফেল টাওয়ারে আগুন লাগে। ভবনটির ১২০টি ফ্ল্যাটে ছয় শর বেশি লোক বাস করত বলে ধারণা। এ পর্যন্ত ৩০ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয় সরকারের (কাউন্সিল) আবাসন-সুবিধা পাওয়া বাসিন্দারা গ্রেনফেল টাওয়ারে বসবাস করত। বিক্ষুব্ধ জনতা গত শুক্রবার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কেনসিংটন অ্যান্ড সেলটি কাউন্সিলের সামনে বিক্ষোভ করে। একপর্যায়ে তারা কাউন্সিলের ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। তাদের অন্যতম দাবি ছিল, গ্রেনফেল টাওয়ারের বাসিন্দাদের তালিকা প্রকাশ করা। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তা করেনি।
স্থানীয় বাসিন্দা সংগীতশিল্পী লিলি অ্যালেন বলেন, নিহত ব্যক্তির সংখ্যা কমপক্ষে ১৩০ হবে বলে তিনি জেনেছেন। অথচ শুরুতে বলা হলো ছয়জন নিহত হয়েছে, এটা অবিশ্বাস্য।
রয়টার্স জানিয়েছে, ভবনটিতে বহিরাবরণ (ক্লেডিং) লাগানোর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আবরণ প্রস্তুতকারী কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অ্যানকোনিকের সতর্কতা মানা হয়নি।
সমালোচনা সামলাতে থেরেসা মে গত শুক্রবার আবারও একটি আশ্রয়কেন্দ্রে যান। তুমুল বিক্ষোভের মুখে তাঁকে দ্রুত ফিরে আসতে হয়। প্রধানমন্ত্রী ভুক্তভোগীদের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু করা হবে বলে জানিয়েছেন। কিন্তু ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা না বলে ফিরে আসার সমালোচনা তাঁর পিছু ছাড়ছে না।
ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর কারণে নতুন সরকার গঠন নিয়ে নানামুখী চাপের মধ্যে থেরেসা মেকে এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হলো। দক্ষিণ আয়ারল্যান্ডের রক্ষণশীল দল ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়নিস্টস পাটির (ডিইউপি) সঙ্গে জোট করে সরকার গঠনের ঘোষণা দিয়েছিলেন মে, কিন্তু গত ১০ দিনেও তাঁরা সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেননি।
১৯ জুন সংসদে রানির ভাষণের মাধ্যমে নতুন সরকারের যাত্রা শুরু হওয়ার কথা। একই দিন ব্রেক্সিট (ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ) সমঝোতা নিয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু জোট নিয়ে জটিলতায় রানির ভাষণ পিছিয়ে যাবে বলে ধারণা। আবার ব্রেক্সিট প্রশ্নে থেরেসা মের কনজারভেটিভ পার্টি ও ডিইউপি অবস্থানের গরমিল রয়েছে। এই পার্থক্য দূর করে নতুন সরকার কবে ব্রেক্সিট আলোচনা শুরু করতে পারবে, তা নিয়েও তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
বিতর্কিত আদর্শের অধিকারী ডিইউপির সঙ্গে জোট গঠনের বিরোধিতায় লন্ডনে বড় ধরনের বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এদিন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ নিজের জন্মদিন উপলক্ষে দেওয়া বিবৃতিতে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাজ্য একের পর এক কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়েছে, যা প্রমাণ করেছে প্রতিকূলতার বিপরীতে যুক্তরাজ্য কতটা শক্তিশালী।
(এসএএম/ ১৮ জুন ২০১৭)