নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারের ব্রোকারেজ হাউজ বা ট্রেকহোল্ডারদের সমন্বিত গ্রাহক হিসাবের (সিসিএ) অবণ্টিত মুনাফার তথ্য চেয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। সেই সঙ্গে সর্বশেষ বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বিনিয়োগকারী সুরক্ষা তহবিলে (ইনভেস্টর প্রোটেকশন ফান্ড) যথাযথভাবে অর্থ জমা হয়েছে কি না এবং এর বর্তমান স্থিতির বিষয়ে জানতে চেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

সম্প্রতি ডিএসইর সব ট্রেকহোল্ডারের কাছে এ বিষয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। ট্রেকহোল্ডারদেরকে আগামী ১১ মের মধ্যে এ তথ্য ডিএসইতে দিতে বলা হয়েছে।

ট্রেকহোল্ডারদের দেওয়া ডিএসইর চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এর আগে এ বিষয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) একটি সিদ্ধান্ত নেয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ডিএসইর কাছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ইনভেস্টর প্রোটেকশন ফান্ড) আইন, ২০১৪ অনুযায়ী যে সকল উৎস থেকে তহবিলে অর্থ জমা হওয়ার বিধান রয়েছে, সেসব উৎস থেকে তহবিলে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত যথাযথভাবে অর্থ জমা হয়েছে কি না এবং এর বর্তমান স্থিতির বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদানের জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।

এর আগে ২০২১ সালের জুন মাসে বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী ট্রেকহোল্ডার কোম্পানির সিসিএ হিসাবের অবণ্টিত মুনাফা থেকে অর্থ সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে জমা করার বিধান করা হয়েছে। সে অনুযায়ী ৩১ জানুয়ারি, ২০২৩ পর্যন্ত জমাকৃত অর্থের ব্যবহার সংক্রান্ত তথ্য জমা দিতে বলা হয়েছে। এজন্য চিঠিতে উল্লেখিত ছক অনুযায়ী আগামী ১১ মের মধ্যে সে তথ্য দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ডিএসই।

এদিকে, দেশের পুঁজিবাজার ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই-সিএসই) বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা তহবিলের (ইনভেস্টর প্রোটেকশন ফান্ড) ট্রাস্টি বোর্ড পুনর্গঠন করা হয়েছে। প্রতি বছর এ বোর্ড পুনর্গঠন করা হয়ে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় ডিএসই ও সিএসইর বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা তহবিলের ট্রাস্টি বোর্ডে নতুন দুই চেয়ারম্যান নিয়োগের অনুমতি দেয় বিএসইসি। স্টক এক্সচেঞ্জ বিনিয়োগকারী সুরক্ষা তহবিল প্রবিধান, ২০১৪ এর প্রবিধান ৫ অনুযায়ী ডিএসইর বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা তহবিলের চেয়ারম্যান হিসেবে বাংলাদেশ হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. আবদুস সামাদকে মনোনয়নের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। একইভাবে কমিশন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক এবিএম আবু নোমানকে সিএসইর বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা তহবিল ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছে।

তথ্য মতে, মার্চেন্ট ব্যাংক, ব্রোকার এবং ডিলারদের কাছ থেকে পাওয়া বার্ষিক তালিকাভুক্তি ফি’র একটি অংশ এই তহবিলে জমা রাখা হয়। এছাড়া, পুঁজিবাজারের লেনদেন, বিভিন্ন মাধ্যম থেকে পাওয়া ফি’র একটি অংশও এই তহবিলে জমা করা হয়ে থাকে। আর কোনো ব্রোকারেজ হাউজ দেউলিয়া হয়ে গেলে বা বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কিংবা তাদের জমা রাখা অর্থ ফেরত দিতে ব্যর্থ হলে এ তহবিল থেকে বিনিয়োগকারীদের সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত দেওয়া হয়ে থাকে।

এর আগে বন্ধ বা দেউলিয়া হয়ে যাওয়া ডিএসইর সদস্যভুক্ত বেশ কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউজের ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদেরকে এ তহবিল থেকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে কিছু টাকা দেওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি ইউনাইটেড এয়ারওয়েজকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নেয় বিএসইসি। এর ধারাবাহিকতায় ডিএসই তাদের ইনভেস্টর প্রোটেকশন ফান্ড বা অন্য কোনো উৎস থেকে কোম্পানিটিকে ২০ লাখ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেয় বিএসইসি। ওই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে ডিএসই কোম্পানিটিকে ২০ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছে।

বিনিয়োগবার্তা/ডিএফই//