নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বিদেশী বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বেড়ে চলেছে। বিগত মার্চ মাসের তুলনায় চলতি বছরের এপ্রিল মাসে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের লেনদেন বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মোট টার্নওভার এপ্রিল মাসে ১৮২ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, যা আগের মাসে ছিল ৮৭.৫১ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত মাস থেকে ১০৮ শতাংশ বেশি বিনিয়োগ বেড়েছে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘসময় ধরে বাজারে অস্থিরতার পরে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা বেড়েছে যে বাজার ঘুরে দাঁড়াবে এবং তারা ভাল রিটার্নের আশায় নতুন বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে।
ডিএসইর সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বিদেশী বিনিয়োগকারীরা, বিশেষ করে দুবাইভিত্তিক বিনিয়োগকারীরা গত মাসে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে প্রচুর পরিমাণে নতুন করে বিনিয়োগ করেছেন। এটি সম্প্রতিক বছরগুলিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিদেশিদের বিনিয়োগে আকৃষ্ট করার মত বিভিন্ন উদ্যোগের ফল। বিশেষ করে দুবাইসহ অনেক দেশে রোডশোর ফলাফল বলা যায়।এছাড়াও, বেশিরভাগ তালিকাভুক্ত কোম্পানি এখন সর্বশেষ প্রান্তিকে ভালো আয় করতে পেরেছে। যা বাজার ভালো করার বিষয়ে আরও আশা জাগিয়েছে।’
ডিএসইতে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের টার্নওভারের পরিমাণ ছিল ফেব্রুয়ারিতে ১৯২.৪৬ কোটি টাকা।যা চলতি বছরের জানুয়ারিতে ছিল ১৭৪.৮৪ কোটি টাকা।
বিএসইসির একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থার একাধিকবার বিভিন্ন উদ্যোগের কারণে দেশের পুঁজিবাজার ধীরে ধীরে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য লাভজনক হয়ে উঠছে।
তিনি বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এখন বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
এদিকে, গত বৃহস্পতিবার জাপানের রাজধানী টোকিওতে এক বিজনেস সামিটে বক্তৃতাকালে বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবায়াত-উল-ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের পুঁজিবাজার এখন অন্যান্য দেশের বাজারের তুলনায় অনেক বেশি স্থিতিশীল।
এশিয়ান ফ্রন্টিয়ার ক্যাপিটালের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২০ সালে ইক্যুইটি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশ থেকে সর্বোচ্চ রিটার্ন পেয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএসইসি চেয়ারম্যান।
আইডিএলসি ফাইন্যান্সের এক মাসিক ব্যবসায়িক পর্যালোচনা অনুসারে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিদেশী ইকুইটি মালিকানা মোট বাজার মূলধনের ৩.৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। যা ২০১৫ সাল থেকে রেকর্ড করা হয়নি এতটা নীচে নেমে গেছে।
এ ধরনের নড়বড়ে পরিস্থিতির পরে, সাম্প্রতিক ডিএসইর লেনদেনে তারল্য পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নতি হয়েছে। কারণ, সামষ্টিক অর্থনৈতিক উদ্বেগ এবং কার্যকর কর্পোরেট আয়ের সহজতার কারণে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরেছে।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার ডিএসইতে লেনদেন ৯৬৭ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, যা বিগত ছয় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং বিশ্বব্যাপী সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এখন পুনরুদ্ধার শুরু হয়েছে।স্থানীয় এবং বিদেশী বিনিয়োগকারীরা যারা একসময় সাইডলাইনে ছিলেন, তারা এখন ইক্যুইটিগুলিতে নতুন বিনিয়োগ শুরু করেছেন।
বিনিয়োগবার্তা/টিআর/এসএএম//