নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেট (বিআইসিএম) এর উদ্যোগে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক দুর্নীতি ও তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর আয় ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এটি প্রতিষ্ঠানটির ২৩তম রিসার্চ সেমিনার। সেমিনারের শিরোনাম- U.S. Political Corruption and Management Earnings Forecast।
বুধবার (৭ জুন) ইন্সটিটিউটের মাল্টিপারপাস হলে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড ইউনিভার্সিটির সিনিয়র লেকচারার ড. হাসিবুল চৌধুরী। ইন্সটিটিউটের নির্বাহী প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. মাহমুদা আক্তার তাতে সভাপতিত্ব করেন। সেমিনারে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মাদ শাহীন মিয়া। বিআইসিএম এর রিসার্চ কনসালটেন্ট (খন্ডকালীন) অধ্যাপক ড. সুবর্ণ বড়ুয়া সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন।
ড. হাসিবুল চৌধুরী বলেন, এই গবেষণার মূল বিষয়বস্তু হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো যখন বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের সরকারি কর্মকর্তাদের দ্বারা রাজনৈতিকভাবে দুর্নীতির সম্মুখীন হয়, তখন কোম্পানিগুলো সীমিত আয়ের পূর্বাভাস জারি করে। উক্ত কোম্পানির সম্পদ যেন দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাদের করায়ত্ব না হয় সে লক্ষ্যে কোম্পানিগুলো এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়ে থাকে। এছাড়াও, কোম্পানিগুলো কম নগদ অর্থ রেখে বিনিয়োগকারীদের বেশি লভ্যাংশ দিয়ে এবং বেশি ঋণ নিয়ে অনেক সময় তাদের সম্পদ উক্ত দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাদের কাছ থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করে থাকে। এ গবেষণায় দেখা যায় যে, কম নগদ অর্থ রেখে বিনিয়োগকারীদের বেশি লভ্যাংশ প্রদান এবং বেশি ঋণ গ্রহণের চেয়ে কোম্পানির সীমিত অর্জনের পূর্বাভাস জারি একটি উত্তম কৌশল হিসেবে বিবেচিত হয়।
আলোচনায় অংশ নিয়ে ড. মোহাম্মাদ শাহীন মিয়া উক্ত গবেষণাটির বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তিনি বলেন, আলোচ্য গবেষণায় ২০১৮ সাল পর্যন্ত যে তথ্য-উপাত্ত ব্যবহার করা হয়েছে তার পরিধি ২০২২ সাল পর্যন্ত করা যেতে পারে। কেননা, বিশ্বব্যাপী করোনা অতিমারীর পরও কোম্পানির আয়ের পূর্বাভাসের ক্ষেত্রে দুর্নীতির প্রভাব লক্ষ্য করা যাবে।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশসহ অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর ক্ষেত্রে এ ধরণের গবেষণা করা যেতে পারে। এতে কোম্পানির আয়ের পূর্বাভাসের ক্ষেত্রে পরিচালক অথবা রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত পরিচালকদের দুর্নীতির প্রভাব আছে কি-না, তা উঠে আসবে।
সভাপতির বক্তব্যে ইন্সটিটিউটের নির্বাহী প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. মাহমুদা আক্তার বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত দেশের বিষয় নিয়ে আলোচ্য এই গবেষণাটি। আমাদের মতো দেশেও এর গুরুত্ব অনেক বেশি। আজকের সেমিনারের আলোচ্য বিষয়ের উপর ভিত্তি করে ইন্সটিটিউটের গবেষকগণ যাতে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তাদের গবেষণা কাজ অব্যাহত রাখেন সেই আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
উপস্থিত অতিথিদের প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষে অধ্যাপক ড. মাহমুদা আক্তার সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে সেমিনারের সমাপ্তি ঘোষণা করেন। সেমিনারে বিআইসিএম’র অনুষদ সদস্যবৃন্দ, কর্মকর্তা এবং অন্যান্য আমন্ত্রিত অতিথিগণ উপস্থিত ছিলেন।
বিনিয়োগবার্তা/এসএএম//