Biniyougbarta | বিনিয়োগবার্তা: ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-বিনিয়োগের খবর প্রতিদিন সবসময়
Biniyougbarta | বিনিয়োগবার্তা: ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-বিনিয়োগের খবর প্রতিদিন সবসময়
Tuesday, 05 Mar 2024 06:00
Biniyougbarta | বিনিয়োগবার্তা: ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-বিনিয়োগের খবর প্রতিদিন সবসময়

নিজস্ব প্রতিবেদক: অর্থের পাশাপাশি তথ্য-উপাত্ত মূল্যবান হয়ে উঠছে বলে মন্তব্য করেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। মঙ্গলবার (৫ মার্চ) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সাইবার সিকিউরিটি সম্পর্কে সচেতন করতে এবং ভবিষ্যতের জন্য আরো প্রস্তুত হতে ‘বাংলাদেশ সাইবার সিকিউরিটি সামিট-২০২৪’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে দেশে ও দেশের বাইরে তথ্য-উপাত্ত চুরির বড় ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এখন ধীরে ধীরে অর্থের পাশাপাশি তথ্য-উপাত্ত মূল্যবান হয়ে উঠছে। এজন্য আমাদের তথ্য-উপাত্ত সুরক্ষায় আরো বেশি গুরুত্ব দেয়া দরকার। যে কারণে আমরা পার্সোনাল ডাটা প্রটেকশন অ্যাক্ট আইন প্রণয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের সাইবার নিরাপত্তায় বিদেশ থেকে ভাড়া করা প্রযুক্তি বা সহায়তা নিলে হবে না, আমাদের নিজস্ব শক্তি গড়ে তুলতে হবে। কোনো দেশ তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যেমন ভাড়া করা সামরিক শক্তি দিয়ে করতে চায় না, তেমনি বাংলাদেশ সাইবার নিরাপত্তা বা সুরক্ষায় ভাড়া করা কোনো প্রযুক্তি ব্যবহার করবে না। দেশের ব্যাংকিং, টেলিকম এবং পাওয়ার সেক্টরে ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি নিশ্চিত করতে বিদেশ নির্ভর হওয়াটা ঝুঁকিপূর্ণ। তাই আমরা নিজস্ব সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্ট এবং প্রযুক্তির নতুন টুল তৈরিতে কাজ করছি। 

জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, পৃথিবীর কেউ বলতে পারবে না সাইবার সুরক্ষায় শতভাগ নিরাপদ। তবে আমরা সক্ষমতা, দক্ষতা এবং সচেতনতা বৃদ্ধিতে অনেকটাই এগিয়ে গেছি। পৃথিবীর কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এবং রাষ্ট্র দাবি করতে পারবে না তারা শতভাগ সাইবার নিরাপদ। সাইবার জগত নিরাপদ রাখতে এবং সাইবার হামলা মোকাবেলায় সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

আন্তর্জাতিক সমন্বয় বেশি প্রয়োজন উল্লেখ করে পলক বলেন, ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক যে সাইবার হামলার শিকার হয়েছিল সেটা কিন্তু একটা দেশ থেকে সাইবার অপরাধীরা আক্রমণ করেনি। বাংলাদেশ থেকে অর্থ চুরি করে অন্য একটা দেশে নিয়ে যায়। এ ধরনের আর কোনো বড় ক্ষতির সম্মুখীন না হতে হয়, সেজন্য প্রত্যেকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো প্রতিষ্ঠানকে আমরা গাইডলাইন দিয়েছে এবং তাদের প্রযুক্তিগত কী সক্ষমতা প্রয়োজন সেটির প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। এছাড়া প্রযুক্তিগত উন্নয়নের জন্য সহযোগিতা করছি। পাশাপাশি ভারত, আমেরিকা, জাপান ও কোরিয়া তাদের সঙ্গে আমরা চুক্তি করেছি যাতে কোনো ধরনের সাইবার নিরাপত্তায় হুমকি বা ঝুঁকির তথ্য-উপাত্ত তারা পেলে আমাদের সঙ্গে শেয়ার করে, আমরা পেলে তাদের সঙ্গে শেয়ার করি। আমরা আন্তর্জাতিক কিছু সংগঠনের সদস্যপদ গ্রহণ করেছি। এ মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কারণ অর্থনৈতিকভাবে আমরা যতটুকু সমৃদ্ধ হব, স্মার্ট বাংলাদেশের যত ডিজিটাল সার্ভিস জনগণকে দেব, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড যত ক্যাশলেস হবে, তত বেশি আমাদের সাইবার ঝুঁকিও বাড়তে থাকবে।

তিনি বলেন, প্রতি বছর বাংলাদেশে সাইবার সামিট আয়োজন করা হবে। আগামী বছর থেকে আমাদের স্থানীয় সাইবার সিকিউরিটি স্টার্টআপ, ইনোভেটর এবং স্থানীয় প্রযুক্তিগুলো ডেভেলপ করার সুযোগ আছে। সেখানে সরকার ইন্ডাস্ট্রি এবং একাডেমিয়াকে সহযোগিতার মাধ্যমে সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং স্বনির্ভরতা অর্জন করতে চায়।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আইডিয়া ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান ও স্মার্ট বাংলাদেশ নেটওয়ার্কের কো-চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমাদের স্মার্ট বাংলাদেশের যাত্রায় প্রযুক্তিগত অগ্রগতি এবং সাইবার নিরাপত্তা উভয়ই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের অগ্রগতি সুরক্ষিত করা শুধু অপরিহার্য নয়, এটি আমাদের স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নের ভিত্তি। আসুন একসঙ্গে আমাদের সাইবার প্রতিরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিই এবং শক্তিশালী করি। আমাদের দেশের সমৃদ্ধির জন্য একটি নিরাপদ ডিজিটাল ভবিষ্যত নিশ্চিত করি।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশ্বব্যাংকের পরামর্শক হুসাইন এ সামাদ, টেকনো হ্যাভেন কোম্পানি লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা সিইও হাবিবুল্লাহ এন করিম এবং ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংকের চিফ ইনফরমেশন টেকনোলজি অফিসার ও সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশনের (সিক্যাফ) উপদেষ্টা প্রকৌশলী মো. মুশফিকুর রহমান।

বিনিয়োগবার্তা/এসএএম//