জেলা প্রতিনিধি: একদিকে শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন অন্যদিকে টানা কারফিউর মধ্যে মাঠের সবজি নিয়ে চরম বিপাকে মেহেরপুরের কৃষকরা। বাইরের জেলা থেকে আসছেন না কোনো ক্রেতা। এতে মাঠের ফসল মাঠেই নষ্ট হচ্ছে। দাম নেমে এসেছে অর্ধেকে।
কৃষকরা বলছেন, এমন অবস্থা চলতে থাকলে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়বে তারা।
মেহেরপুর সদর উপজেলার ক্ষেতজুড়ে লাউ, চিচিঙ্গা, কুমড়ার জালি, বরবটি, পটল ও পেঁপের আবাদ। এসব ফসল এখন তোলার সময়। অথচ ভরা মৌসুমে জেলায় কোনো ক্রেতা নেই। শিক্ষার্থীদের বৈষ্যমবিরোধী আন্দোলন ও কারফিউর কারণে ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল ও সিলেট থেকে আসছে না কোনো ব্যবসায়ী। ফলে কৃষকদের এখন একমাত্র ভরসা স্থানীয় বাজার। সেখানেও চাহিদার তুলনায় আমদানি বেশি। ফলে দাম পাচ্ছেন না সবজির। ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে ফসল। এতে উৎপাদন খরচ ওঠাতো দূরের কথা, বড় ধরনের লোকসানের শঙ্কায় চাষিরা।
মেহেরপুর সদর উপজেলার ফতেপুর গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, এক বিঘা লাউ এবং ১০ কাঠা জমিতে বরবটির চাষ করেছি। ছাত্র আন্দোলনের আগে বরবটি প্রতি কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। বর্তমানে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে। লাউ আগে প্রতি পিস ৪০ থেকে ৫০ টাকা করে বিক্রি করেছি। বর্তমানে ১৫ থেকে ২০ টাকা দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। কারণ হিসেবে তিনি ছাত্র আন্দোলন ও কারফিউকে দায়ী করেন। এখন বাইরের জেলা থেকে কোনো ক্রেতা জেলায় আসছে না।
কৃষক সাইফুল ইসলাম জানান, এ বছর এক বিঘা জমিতে চিচিঙ্গা আবাদ করেছি। চিচিঙ্গার ফলন ভালো হয়েছে। কারফিউর আগে চিচিঙ্গা ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। বর্তমানে সেই চিচিঙ্গা ১০ থেকে ১২ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তারপরও ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। এভাবে চলতে থাকলে চিচিঙ্গা চাষ করে লোকসানে পড়তে হবে।
ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম জানান, আন্দোলন ও কারফিউর কারণে ট্রাকভর্তি সবজি ঢাকায় পৌঁছাতে পারছে না। পরিবহন মালিকরাও দিতে চাচ্ছেন না ট্রাক। এ কারণেই কৃষকদের এমন অবস্থা।
তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদারের দাবি, প্রশাসনের সহায়তায় এখানকার উৎপাদিত সবজি জেলার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানোর চেষ্টা চলছে।
বিনিয়োগবার্তা/ডিএফই//