ডেস্ক রিপোর্ট: পাকিস্তানের রানের খাতা খোলার আগেই প্রথম ওভারে উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় টেস্টে যে শুভ সূচনা করেছিলেন তাসকিন আহমেদ, দিনের শেষে এসে তাতে পূর্ণতা এনে দিয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ। একাই পাঁচ উইকেট নিয়ে ধসিয়ে দিয়েছেন স্বাগতিকদের প্রথম ইনিংস।
রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের প্রথম দিন বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পর দ্বিতীয় দিন টস জিতে স্বাগতিকদের শুরুতে ব্যাটিংয়ে পাঠান টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। শুরুতে ব্যাটিং করে ৮৫ দশমিক ১ ওভার খেলে তিনটি হাফ সেঞ্চুরিতে ২৭৪ রান সংগ্রহ করেছে স্বাগতিক পাকিস্তান।
পরে দুই ওভারে উইকেট না হারিয়েই ১০ রান সংগ্রহ করে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে বাংলাদেশ। ওপেনার সাদমান ইসলাম ৯ বলে একটি চারের সাহায্যে ৬ রানে অপরাজিত রয়েছেন। অন্য প্রান্তে তিন বল মোকাবিলা করে রানের খাতা খুলতে পারেননি জাকির হাসান।
এর আগে প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৮ রান করেন ওপেনার সাইম আইয়ুব। এছাড়া তৃতীয় ব্যাটার শান মাসুদ ৫৭ এবং সাত নম্বরে নেমে ৫৪ রানের কার্যকর ইনিংস খেলেন আগা সালমান।
অপরদিকে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ পাঁচ উইকেট নিয়েছেন মিরাজ। এছাড়া তাসকিন তিনটি এবং সাকিব ও নাহিদ রানা একটি করে উইকেট তুলে নিয়েছেন।
শনিবার পাকিস্তানের প্রথম ওভারটি মেইডেন দিয়ে শেষ বলে স্বাগতিক দলের ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিককে বোল্ড করে দেন তাসকিন। এরপর অধিনায়ক শান মাসুদের সঙ্গে ১০৭ রানের জুটি গড়ে দারুণভাবে ম্যাচে ফেরে পাকিস্তান। তবে দুই ব্যাটারই ব্যক্তিগত হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করার পর বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেননি।
মধ্যাহ্ন বিরতির পরই পাকিস্তানকে বড় সংগ্রহের পথ দেখানো জুটিটি ভাঙেন মিরাজ। মাসুদকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে সাজঘরে পাঠানোর পর সাইমকেও বিদায় করেন তিনি। মিরাজের বলে এগিয়ে এসে ব্যাট চালাতে গিয়ে মিস করলে ত্বরিত উইকেট ভেঙে দেন লিটন দাস। ফলে ১০৭ রানে দ্বিতীয় ও ১২২ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় পাকিস্তান।
মূলত দ্বিতীয় উইকেট জুটি ভাঙার পর থেকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে পাকিস্তান। এই ধারাবাহিকতায় ১৫১ রানের মাথায় সৌদ শাকিলকে (১৬) বোল্ড করেন তাসকিন।
মোহাম্মদ রিজওয়ানকে নিয়ে আরেকটি বড় জুটি গড়ার চেষ্টা করলেও ১৭৯ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৩১ রান করে ফিরতে হয় বাবর আজমকে। সাকিবের ঘূর্ণিতে বিভ্রান্ত হয়ে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন তিনি। পরে আগা সালমানের সঙ্গে ৩২ রানের জুটি গড়ে শান্তর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন রিজওয়ান। নাহিদের বলে ২৯ রান করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি।
তবে ব্যাটিংয়ে এসে থিতু হওয়ার চেষ্টা করেন সালমান। রিজওয়ান ফিরে গেলেও পরবর্তী ব্যাটারদের সঙ্গে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যেতে থাকেন তিনি। সে সুবাদে ব্যক্তিগত অর্ধশতক তুলে নেন তিনি। মাঝে মিরাজের বলে খুররাম শেহজাদ (১২) ও মোহাম্মদ আলী (২) আউট হয়ে ফেরার পর ৫৪ রান করে অবশেষে তাসকিনের বলে ফিরে যান সালমান।
এরপর পাকিস্তানের ইনিংস গুটানো ছিল সময়ের অপেক্ষা। তবে সময় একেবারেই নষ্ট করেননি মিরাজ। ৮৫তম ওভারের শেষ বলে সালমান আউট হলে পরের ওভারের প্রথম বলেই আবরার আহমেদকে ফিরিয়ে দিয়ে নিজের দশম ফাইফার পূর্ণ করেন তিনি।
এর মাধ্যমে মোহাম্মদ রফিকের পর পাকিস্তানের মাটিতে ৫ উইকেট নেয়া দ্বিতীয় বাংলাদেশি বোলার বনে যান মিরাজ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
পাকিস্তান প্রথম ইনিংস: ২৭৪/১০ (৮৫.১ ওভার; সাইম ৫৮, মাসুদ ৫৭ ও সালমান ৫৪; মিরাজ ৫/৬১ ও তাসকিন ৩/৫৭)।
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ১০/০ (২ ওভার) (সাদমান ৬* ও জাকির হাসান ০*)।
বিনিয়োগবার্তা/ডিএফই//