নিজস্ব প্রতিবেদক: বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবস-২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে অরুনিমা রিসোর্ট গলফ ক্লাবে "পরিযায়ী পাখির আবাসস্থলকে নিরাপদ রাখা ও পাখিদের বিচরণস্থল সংরক্ষণ ও নিরাপত্তার গুরুত্ব" বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অরুনিমা রিসোর্ট গলফ ক্লাবের ম্যানেজার খন্দকার মুনিব হোসেনের সঞ্চালনায় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ সাইফুল হাসান, উপসচিব, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা পরিযায়ী পাখির গুরুত্ব এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে পাখি শিকার দন্ডনীয় অপরাধ সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বলেন "অতিথি পাখি আমাদের জন্য আশির্বাদ স্বরুপ, অতিথি পাখি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। বাংলাদেশে প্রায় ৭০০ প্রজাতির পাখি রয়েছে। যার মধ্যে ৩০০ প্রজাতিই পরিযায়ী পাখি। অতিথি পাখি নিধনে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ শাস্তির কথা উল্লেখ করে তিনি প্রশাসনকে এ ব্যাপারে আরো বেশি পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানান। তিনি জানান বন্যপ্রাণী ও অতিথি পাখি সংরক্ষণের জন্য দেশে অনেক আগে থেকেই আইন রয়েছে। ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে বলা হয়েছে পাখি নিধনের সর্বোচ্চ শাস্তি এক বছরের জেল, এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডের বিধান রয়েছে।
অরুনিমা রিসোর্ট গলফ ক্লাবের চেয়ারম্যান খবির উদ্দিন আহমেদ পরিযায়ী পাখি দিবস উদযাপন করার জন্য সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন "পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অতিথি পাখির কোন বিকল্প নেই। জাহাঙ্গীর নগর ইউনিভার্সিটিতে এক সময় অনেক পাখি দেখা গেলেও সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে সেখানের পাখি অনেক কমে গিয়েছে। দীর্ঘ ২০ বছর যাবত অরুনিমায় পাখি আসে। যা দেখতে দেশ-বিদেশের অতিথি আসেন এবং তারা মুগ্ধ হন। পরিবেশ অধিদপ্তরের উপদেষ্টা মহোদয়কে অতিথি পাখি সংরক্ষণের জন্য পৃষ্ঠপোষকতার আবেদন জানান।
ঢাকা থেকে আগত প্রকৃতিপ্রেমি ইকরাম হোসেন বলেন "আমরা এই প্রকৃতির এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তেমনি পাখিও প্রকৃতির গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশ। পাখিদের সুরক্ষার বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন পাখি শিকারী না বলে তাদেরকে হত্যাকারী বলা উচিৎ।
বাংলাদেশ প্রফেশনাল গলফার মো: রিপন বলেন "আমি দেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে গলফ খেলতে যাই। কিন্তু অরুনিমা রিসোর্ট গলফ ক্লাবকে আমার অন্যদের চেয়ে আলাদা মনে হয়েছে। এখানে প্রকৃতি আর পাখির সৌন্দর্য উপভোগ করার মত। যেসব বাচ্চারা অতিথি পাখির শিকারে জড়িত তাদের পাখি শিকারের কুফল সম্পর্কে জানাতে হবে। তাদের পরিবারকে বুঝাতে হবে। তিনি তাদেরকে পাখি শিকার বন্ধ করে নিয়মিত খেলাধুলার পরিবেশের উপরে গুরুত্বরোপ করেন"।
ঢাকা থেকে আগত পাখিপ্রেমী আদিল খান বলেন "জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর। তিনি অরুনিমা রিসোর্ট গলফ ক্লাবের চেয়ারম্যান খবির উদ্দিন আহমেদকে এরকম সুন্দর একটা রিসোর্ট গড়ে তোলার জন্য ধন্যবাদ জানান।
অরুনিমা রিসোর্ট গলফ ক্লাবের সিনিয়র ম্যানেজার সাজিকুল ইসলাম বলেন "অতিথি পাখি শিকার বন্ধে স্থানীয় প্রশাসন আমাদের সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেন। আমরা তাদের ধন্যবাদ জানাই।"
অরুনিমা রিসোর্ট গলফ ক্লাবের ম্যানেজার খন্দকার মুনিব হোসেন বলেন "আমাদের বাসায় অতিথি আসলে যেমন তাদের খেয়াল রাখি অতিথি পাখি আসলেও তাদের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। স্থানীয় প্রশাসন, সাংবাদিকবৃন্দ অতিথি পাখি শিকার বন্ধে আমাদের সহযোগিতা করেন। তাদের এ সহযোগিতা যেন অব্যাহত থাকে এ ব্যাপারে আবেদন জানান এবং পাখি শিকার বন্ধে সকলকে আন্তরিক হতে হবে বলে উল্লেখ করেন।
অন্যান্য বক্তারা অতিথি পাখি রক্ষার জন্য জনমত গড়ে তোলার ব্যাপারে মন্তব্য করেন। তারা বলেন অতিথি পাখির প্রতি মানুষের ভালোবাসা জাগিয়ে তুলতে হবে। অতিথি পাখির গুরুত্ব সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে বুঝাতে হবে।
বিনিয়োগবার্তা/ডিএফই//