ড: মিহির কুমার রায়: ১১ নভেম্বর থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত মোট দশ দিনব্যাপী চলা জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে (কপ-২৯) বাকুতে জড়ো হয়েছিলেন ৭৫ জনের বেশি বিশ্বনেতা। এবারের জলবায়ু সম্মেলনের মূল লক্ষ্য ছিল - জলবায়ু সংকটের ভুক্তভোগী দরিদ্র দেশগুলোকে আরো অর্থ সহায়তা দেয়ার উপায় খুঁজে বের করা। ধনী দেশগুলো জীবাশ্ম জ্বালানি পুড়িয়ে পৃথিবীকে এতদিন উত্তপ্ত করেছে, তাদের ক্ষতিপূরণ দেয়া। ২০০৯ সালের জলবায়ু সম্মেলনে চুক্তি হয়েছিল, বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলার সাহায্য দেয়া হবে। শুধু ২০২২ সালে এই প্রতিশ্রুতি পূরণ করা হলেও অন্যান্য বছর এই প্রতিশ্রুতি পূরণ করা হয়নি। এদিকে, চুক্তিটি এ বছরই শেষ হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে এবারের কপ-২৯ সম্মেলনের তথ্যানুযায়ী, কয়লা, তেল কিংবা গ্যাসের মতো জীবাশ্ম জ্বালানির কারণে কার্বনের নিঃসরণ গত বছরের চেয়ে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে। অথচ ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমন ৪৩ শতাংশ কমিয়ে আনার কথা ছিল। এ লক্ষ্যে কার্বন নিঃসরণ কমাতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি সামলাতে ২০২৫ সাল নাগাদ উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোকে বড় অর্থনীতির দেশগুলো নির্দিষ্ট পরিমাণ আর্থিক সহযোগিতা করতে সম্মতি দিয়েছিল। কিন্তু কথা রাখেনি। এছাড়া কপ-২৮ জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার কমিয়ে আনার যে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল, তা বাস্তবায়নের কোনো লক্ষণও নেই। অন্যদিকে চলতি বছর বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণে নতুন রেকর্ড হতে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খান ভোরের কাগজকে বলেন, বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনের নাটকীয় প্রভাব দিন দিন বাড়ছে। কিন্তু আমরা জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো কমার কোনো লক্ষণ দেখতে পাচ্ছি না। জীবাশ্ম জ্বালানির অব্যাহত ব্যবহারে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে আবহাওয়ার তীব্রতা বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশকে সংকটে ফেলেছে। দাবদাহ, ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, খরা, দাবানলের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষকে শুধু দুর্বিষহ অবস্থার মধ্যেই ফেলেনি প্রাণহানিসহ সম্পদ ও অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
এদিকে কপ-২৯ জলবায়ু সম্মেলন শুরুর আগ মুহূর্তে এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, গত এক দশকে চরম আবহাওয়ার কারণে ২ ট্রিলিয়ন (২ লাখ কোটি) ডলার ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে বিশ্ব অর্থনীতি। ব্যক্তি পর্যায়ের ক্ষতির হিসেবে দেখা গেছে, বাংলাদেশের সেন্টমার্টিন এবং আটলান্টিকের দ্বীপ বাহামাসের বাসিন্দারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কিত চরম আবহাওয়ার ৪ হাজার ঘটনা বিশ্লেষণ করে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে আন্তর্জাতিক চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি)। ১৭০টি দেশের সাড়ে ৪ কোটির বেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আন্তর্জাতিক সংগঠন আইসিসির সদর দপ্তর ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে। বেসরকারি উদ্যোক্তাদের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক সংগঠন এটি। চরম আবহাওয়ার ঘটনার মধ্যে ঘরবাড়ি ভাসিয়ে নেয়ার মতো আকস্মিক বন্যা এবং বছরের পর বছর ধরে কৃষি জমির উর্বরতা নষ্ট করে এমন অব্যাহত খরার মতো বিষয়গুলোর উপাত্ত বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, বৈরী আবহাওয়ার কারণে গত দুই বছরেই ৪৫১ বিলিয়ন (৪৫ হাজার ১০০ কোটি) ডলার সমমানের ক্ষতি হয়েছে। চরম আবহাওয়ার প্রভাবে ২০১৪ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্ষতির পরিমাণ বেড়েছে বলেও প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
এবারের জলবায়ু সম্মেলনের শীর্ষ আলোচ্য সূচিতে ছিল অর্থায়ন। এই অবস্থায় গত কয়েক বছর ধরেই নতুন অর্থায়নের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছিল জাতিসংঘ। নিউ কালেকটিভ কোয়ান্টিফাইড গোল (এনসিকিউজি) নামের এই লক্ষ্য সম্মেলনে অর্থায়নকে শীর্ষ এজেন্ডা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত ছিল। গতকাল জলবায়ু সংকটের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) এবং সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য ২০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দের প্রস্তাবে সমর্থন জানাতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। তবে সম্মেলন শেষে জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় ট্রিলিয়ন ডলারের চাহিদা কতটা পূরণ করতে সক্ষম হবে সে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ফলে বাকু সম্মেলন শেষেও কাঙ্খিত প্রত্যাশা নিয়ে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে হতাশা সুর।
মোট দশ দিনব্যাপী চলা বাকুতে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে (কপ-২৯) জড়ো হয়েছিলেন ৭৫ জনের বেশি বিশ্বনেতা। কিন্তু জাতিসংঘের এই সম্মেলনে যোগ দেননি বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ও দূষণকারী অর্থনীতির কিছু দেশের নেতা। বিশ্বের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৮০ শতাংশই এই জোটের দখলে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ৭৫ শতাংশের সঙ্গে জড়িত জি-২০ জোটের দেশগুলো। আবার বৈশ্বিক উষ্ণায়নের জন্য দায়ী যে গ্রিন হাউস গ্যাস, তার প্রায় ৮০ শতাংশই এই জোটভুক্ত দেশগুলো নির্গমন করে। জি-২০ জোটের সদস্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বাকুর জলবায়ু সম্মেলনে অংশ নেননি। উন্নয়নশীল দেশগুলো যখন নিউ কালেকটিভ কোয়ান্টিফাইড গোল লক্ষ্য চূড়ান্তের অপেক্ষায় তখন শক্তিশালী ও দূষণকারী অর্থনীতির দেশের নেতারাই সেখানেই অনুপস্থিত ছিলেন। ফলে জলবায়ু অর্থায়ন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বাংলাদেশের প্রতিক্রিয়া: কপ২৯-এর এনসিকিউজি ‘অপ্রতুল’ ও অনুদানভিত্তিক অর্থ বরাদ্দের আহ্বান বাংলাদেশের। নিউ কালেক্টিভ কোয়ান্টিফাইড গোলস (এনসিকিউজি) আলোচনায় অভিযোজন, ক্ষয় ও ক্ষতিপূরণসহ গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতে অনুদানভিত্তিক অর্থ বরাদ্দের আহ্বান জানিয়েছে এনসিকিউজি বিষয়ক পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে বক্তৃতাকালে বাংলাদেশের পক্ষে এই পরিবেশ, বন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি কপ২৯ প্রেসিডেন্সি কর্তৃক প্রকাশিত নতুন যৌথ পরিমাণগত লক্ষ্য (এনসিকিউজি) বিষয়ক সর্বশেষ খসড়া নিয়ে গভীর হতাশা প্রকাশ করেছেন। সম্মেলনের শেষ পর্বে পৌঁছে এটি প্রকাশিত হওয়ার পর তিনি একে "খুবই হতাশাজনক একটি প্যাকেজ" বলে অভিহিত করেন। তিনি উল্লেখ করেন, এই খসড়া স্বল্পোন্নত দেশসমূহ (এলডিসি) এবং ছোট দ্বীপ রাষ্ট্রগুলোর (সিডস) জরুরি চাহিদা পূরণে ব্যর্থ। তিনি বলেন, "উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য বছরে ২৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দের প্রস্তাব আশ্চর্যজনকভাবে অপ্রতুল।" এই বরাদ্দকে অনুদান হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি এবং এটি কোনো নির্দিষ্ট ব্যবস্থার আওতায়ও নেই। এছাড়াও, সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ৪৫টি এলডিসির জন্য কোনো বিশেষ তহবিল বরাদ্দ করা হয়নি। উপদেষ্টা উল্লেখ করেন যে কপ২৯ মূলত জলবায়ু অর্থায়ন নিয়ে কেন্দ্রিত হওয়া সত্ত্বেও এর ফলাফল এ বিষয়ে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় অপ্রতুল। তিনি বলেন, "এই প্যাকেজটি এলডিসি এবং সিডস-এর মতো সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় ন্যূনতম ন্যায়সংগত প্রস্তাবও দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এটি তাদের ক্রমবর্ধমান জলবায়ু ঝুঁকির সম্মুখীন হতে আরও বেশি করে একা ফেলে রেখেছে।" তিনি এলডিসি দেশগুলোকে এই প্যাকেজ প্রত্যাখ্যান করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, "যথাযথ সংশোধন ছাড়া এটি বাস্তবে তেমন কোনো প্রভাব ফেলবে না।" তিনি সকল অংশীদারকে একটি আরও উচ্চাভিলাষী, ন্যায়সংগত এবং কার্যকর জলবায়ু অর্থায়ন কাঠামোর পক্ষে কথা বলার আহ্বান জানান, যা বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সম্প্রদায়ের চাহিদাকে অগ্রাধিকার দেয়। এর আগে বাকুতে কপ-২৯ সম্মেলনে বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান অভিযোজন, প্রশমন এবং ক্ষয় ও ক্ষতিপূরণের জন্য ১ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রতিশ্রুতির প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন এবং অভিযোজন ও ক্ষয়-ক্ষতিপূরণের জন্য অনুদানভিত্তিক অর্থায়ন এবং প্রশমনের জন্য স্বল্প সুদের ঋণের প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, এনসিকিউজি-এর আওতায় সরকারি অর্থায়নই প্রধান উৎস হওয়া উচিত, বেসরকারি খাতও সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। অন্তত ২০ শতাংশ অর্থায়ন ইউএনএফসিসিসির (গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড, অ্যাডাপটেশন ফান্ড) মতো প্রতিষ্ঠিত তহবিলের মাধ্যমে হওয়া উচিত। জলবায়ু অর্থায়নের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ফাইন্যান্সের মাধ্যমে এর সংজ্ঞা নির্ধারণের প্রয়োজনীয়তার কথাও তিনি উল্লেখ করেন। উন্নত দেশগুলোকে তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণে এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানান এই পরিবেশবিদ।
গত সম্মেলনের পর অগ্রগতি কী তা পর্যালোচনায় দেখা যায় গত বছর সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত কপ-২৮ এ জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বেরিয়ে আসার বিষয়ে একটি বৈশ্বিক সমঝোতা স্মারক সই হয়েছিল। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক ছিল। কারণ এতে প্রথমবারের মতো খোলাখুলিভাবে দেশগুলোকে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়। তবে চুক্তিটি বাস্তবায়নে এখন পর্যন্ত কতটুকু অগ্রগতি হয়েছে, তা জানা যায়নি। ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর বিশ্বব্যাপী নবায়নযোগ্য শক্তির ক্ষমতা তিনগুণ এবং বৈশ্বিক জ্বালানি সাশ্রয় দক্ষতা দ্বিগুণ বাড়ানোর জন্য ২০৩০ সাল পর্যন্ত সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। এপ্রিলে ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (আইইএ) কপ-২৮ এ নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা পরিমাপের জন্য একটি ট্র্যাকার স্থাপন করেছে। কপ-২৮ এর কেন্দ্রীয় অঙ্গীকার এই বছরের আলোচ্যসূচিতে ছিল না কেন- এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো কারণের কথা বলা হয়নি।
জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য ১ ট্রিলিয়ন ডলার অর্থায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ না করে খসড়া চুক্তিতে শুধু একটি ‘X’ চলক রেখে দেওয়ায় কপ২৯ জলবায়ু আলোচনা নতুন সংকটে পড়েছে। ধনী ও দরিদ্র দেশগুলো এ খসড়া প্রত্যাখ্যান করেছে। এতে উল্লেখযোগ্য কোনো সমঝোতার ভিত্তি নেই বলে অভিযোগ করেছে বিভিন্ন পক্ষ। দ্য গার্ডিয়ানের তথ্যানুযায়ী, কপ২৯-এ অর্থায়নের নতুন লক্ষ্য নির্ধারণের খসড়া চুক্তিতে পরিসংখ্যানের জায়গায় শুধু একটি ‘X’ চলক রাখা হয়েছে। কমন ইনিশিয়েটিভ থিঙ্কট্যাঙ্কের পরিচালক অস্কার সোরিয়া বলেন, ‘এই X ধনী দেশগুলোর অদক্ষতার প্রতীক এবং এটি দুর্বল ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য বিপজ্জনক সংকেত।’ প্রায় ২০০ দেশের সরকার কপ২৯-এ উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য জলবায়ু অর্থায়নের একটি নতুন বৈশ্বিক চুক্তি নিয়ে আলোচনা করছে। এ অর্থায়ন তাদের কার্বন নির্গমন কমানোর ক্ষেত্রে সহায়তা এবং চরম আবহাওয়ার প্রভাব মোকাবিলায় সহায়তা করবে। উন্নয়নশীল দেশগুলো এই অর্থায়ন হিসেবে বছরে কমপক্ষে ১ ট্রিলিয়ন ডলার দাবি করছে, যার বড় অংশ অনুদানের মাধ্যমে আসা উচিত। তবে ধনী দেশগুলো সরাসরি ২০০ থেকে ৩০০ বিলিয়ন ডলার দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে এবং বাকিটা বেসরকারি বিনিয়োগ ও অন্যান্য উৎস থেকে জোগাড়ের কথা বলছে। এদিকে, খসড়া চুক্তির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার থেকে সরে আসার অঙ্গীকার। গত বছরের কপ২৮ সম্মেলনে এটি গৃহীত হলেও এইবার কপে সৌদি আরব ও তার মিত্ররা এটি পুনর্বিবেচনা করার চেষ্টা করছে। ইইউ জলবায়ু কমিশনার ভপকে হোকস্ট্রা বলেন, ‘এই খসড়া বর্তমান পরিস্থিতিতে একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।’ অনেকেই আজারবাইজানের সভাপতিত্বকে দোষারোপ করছে, যারা দৃঢ় নেতৃত্ব প্রদর্শনে ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। সিভিল সোসাইটি এবং বিশেষজ্ঞরা ধনী দেশগুলোর ওপর দায় চাপিয়ে বলছে, তারা প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে অনাগ্রহী।
লেখক: অধ্যাপক (অর্থনীতি), সাবেক পরিচালক, বার্ড (কুমিল্লা), সাবেক ডিন (ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ) ও সিন্ডিকেট সদস্য, সিটি ইউনিভার্সিটি, ঢাকা।
বিনিয়োগবার্তা/ডিএফই//