নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারের ডিসক্লোজারের বাইরে রাখা ব্যাংকের ২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ তহবিলের মেয়াদ আরো ৫ বছর বাড়ানোসহ পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ঠ একগুচ্ছ প্রস্তাব বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে দিয়েছেন বিএসইসি কমিশনার।
এসব প্রস্তাব নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে বুধবার সন্ধ্যায় বৈঠক করেছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকুসদ।
বৈঠকে ডিসক্লোজারের বাইরে রাখা ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিলের আকার বাড়িয়ে ৩০০ কোটি টাকায় উন্নীত করার প্রস্তাব দেন বিএসইসি চেয়ারম্যান।
দীর্ঘমেয়াদী ঋণ (টার্মলোন) নেওয়ার সময় কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তিতে শর্ত দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে তার প্রস্তাবে।
বিশ্ব ব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকসহ (এডিবি) উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা থেকে পাওয়া পুনঃঅর্থায়ন তহবিল থেকে অর্থ নেওয়া কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির শর্ত আরোপের প্রস্তাব নিয়েও সভায় আলোচনা হয়।
ব্যাংকগুলো থেকে ঋণ নেওয়া বহুজাতিক কোম্পানি এবং দেশের বাজারে শীর্ষস্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুবিধা দিয়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করতে গভর্নরের সহযোগিতা চান বিএসইসি চেয়ারম্যান।
বিএসইসি মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে খুবই ফলপ্রসূ বৈঠক করেছেন বিএসইসি চেয়ারম্যান। ২০০ কোটি টাকার তহবিলের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে কমিশনের পক্ষ থেকে।”
“এর বাইরেও যেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে, আমরা আশা করছি পুঁজিবাজারের দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়নে সেগুলো সহযোগিতা করবে।”
২০২০ সালে পুঁজিবাজারের তারল্য যোগান বাড়াতে ব্যাংকগুলোকে ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন করার সুযোগ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এই তহবিলের অর্থকে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগ হিসাবের বাইরে ধরা হয়। প্রতিটি ব্যাংক পুঁজিবাজারে কী পরিমাণ বিনিয়োগ করতে পারবে, তার একটি সীমা বেঁধে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী ব্যাংকগুলো রেগুলেটরি মূলধনের ২৫ শতাংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারে। ব্যাংকের এ বিনিয়োগসীমার মধ্যে ব্যাংকের ধারণ করা সব ধরনের শেয়ার, ডিবেঞ্চার, করপোরেট বন্ড, মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিট বাজারমূল্য ধরে মোট বিনিয়োগ হিসাব করা হয়।
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের এ হিসাব সংরক্ষণ করে ব্যাংকগুলোকে ডিসক্লোজার দিতে হয়। পুঁজিবাজারে দীর্ঘমেয়াদী তারল্য সরবরাহ বাড়াতে ২০২০ সালে এ ডিসক্লোজারের বাইরে ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন করে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হয়।
তহবিল গঠনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার দেওয়ার সুযোগও রাখা হয়। তহবিলের অর্থ ব্যাংক নিজেও চাইলে সর্বোচ্চ ৭ শতাংশ সুদে ঋণ দিতে পারে, তবে সেটা কেবল পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার কেনার ক্ষেত্রে।
২০০ কোটি টাকার যে ‘বিশেষ তহবিল’ গঠনের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল- তা এই বিনিয়োগ সীমার বাইরে থাকবে বলে নীতিমালায় বলেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে এর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে, যা এখন বাড়াতে চায় বিএসইসি।
বিনিয়োগবার্তা/ডিএফই//