Biniyougbarta | বিনিয়োগবার্তা: ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-বিনিয়োগের খবর প্রতিদিন সবসময়
Biniyougbarta | বিনিয়োগবার্তা: ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-বিনিয়োগের খবর প্রতিদিন সবসময়
Wednesday, 08 Jan 2025 17:54
Biniyougbarta | বিনিয়োগবার্তা: ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-বিনিয়োগের খবর প্রতিদিন সবসময়

নিজস্ব প্রতিবেদক: বর্তমান বাস্তবতায় এখনই দেশে ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির প্রয়োজন নেই বলে মনে করছেন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক মাহমুদ চৌধুরী। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সংস্থাটি পাঁচ সরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল নিয়ে কাজ করবে। আগামী দুই বছরে সাড়ে ৫ বিলিয়ন ডলার বা ৫৫০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ ও আড়াই লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে বেজা।

বেজা প্রতিষ্ঠা হয় ২০১১ সালের নভেম্বরে। এরপর সময় পেরিয়েছে এক যুগেরও বেশি। দীর্ঘ এ সময়ে মাত্র ১৯টি অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণ বা উৎপাদন পর্যায়ে রয়েছে। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত এসব জোনে বিদেশী বিনিয়োগের প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে দেড় বিলিয়ন (১৫০ কোটি) ডলারের। তবে সর্বশেষ দেশী-বিদেশী বিনিয়োগের মোট পরিমাণ জানাতে পারেনি বেজা কর্তৃপক্ষ। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, গত অর্থবছর পর্যন্ত জোনগুলোয় প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ (এফডিআই) এসেছে মাত্র ৭৬ লাখ ডলারের। তবে দুই বছরের মধ্যে দেশী-বিদেশী সাড়ে ৫ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রত্যাশা করছে সংস্থাটি।

বিডা ভবনে মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক মাহমুদ চৌধুরী দুই বছরের পরিকল্পনা তুলে ধরেন। আরো পাঁচটি জোন নিয়ে সরকার পর্যালোচনা করছে বলে এ সময় তিনি জানান। বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, ‘বর্তমানে ১০০টি জোন পরিচালনার মতো সক্ষমতা বা প্রয়োজনীয়তা নেই। আগামী ১০ বছরে ১০টি জোন চালু করতে পারলেও লক্ষ্য পূরণ হবে। বাকি জোনগুলো বাতিল করা হচ্ছে না। বরং সেগুলোর পতিত জমিতে সোলার প্যানেল স্থাপনের চিন্তা করা হচ্ছে। আর বন্ধ হয়ে থাকা সরকারি পাটকলসহ অন্যান্য শিল্প-কারখানার বিদ্যমান অবকাঠামো ব্যবহার করে নতুন অর্থনৈতিক জোন স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।’

জমি বরাদ্দ নিয়ে শিল্প নির্মাণে অপারগ হলে জমি ফেরত দেয়ার কথা উল্লেখ করে নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, ‘বেজার জন্য এখন পর্যন্ত ৯ হাজার ২০০ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এসব প্রকল্পে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক অঞ্চলের জমি অধিগ্রহণের কাজে ব্যয় হয়েছে। অবশিষ্ট টাকা অবকাঠামো উন্নয়নকাজে ব্যয় হয়েছে।’

বেজার বর্তমান অবস্থান তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এখন ১৯টি জোনে ১২২টি কারখানা নির্মাণ ও উৎপাদনে রয়েছে, যার মধ্যে ২৬ শতাংশই কেমিক্যাল প্রতিষ্ঠান। আর দেশী কারখানা রয়েছে ৮৩টি। চীনের ১১টি, জাপানের ছয়টি ও যুক্তরাজ্যের চারটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মাধ্যমে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। নির্মাণ শ্রমিকদের কথা হিসাব করলে এটা প্রায় ৬০ হাজারে পৌঁছে যাবে।’

বেজা আগামী দুই বছরে শুধু পাঁচটি জোন নিয়ে কাজ করবে বলে জানান আশিক মাহমুদ চৌধুরী। সেগুলো হলো জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল, জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল, মহেশখালী অর্থনৈতিক অঞ্চল ও জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চল। এক জোনে অবকাঠামো ও ইউটিলিটি সেবা নিশ্চিত করতে নির্দিষ্ট সময়সীমা দিয়েছে সংস্থাটি। এছাড়া সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক, চাইনিজ অর্থনৈতিক অঞ্চল, চাঁদপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল, কুড়িগ্রাম অর্থনৈতিক অঞ্চল ও কুষ্টিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চল নিয়ে পর্যালোচনা করছে বেজা।

এদিকে অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোয় কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় বিদেশী বিনিয়োগ না আসার অন্যতম কারণ হিসেবে ইউটিলিটি সেবা নিশ্চিত করতে না পারাকে দায়ী করছেন বিনিয়োগকারীরা। গ্যাস, পানি ও রাস্তা নিয়ে বিনিয়োগকারীরা বিভিন্ন অভিযোগ করেছেন বলে জানান বেজা চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘গ্যাস সংকট একটি ইস্যু। এটি নিয়ে সরকার কাজ করছে। সংকটের বিষয়টি মাথায় রেখেই এগোতে হবে। মিরসরাইয়ে শ্রমিকদের আবাসন না থাকায় শ্রমিক সংকট হচ্ছে।’

বিনিয়োগবার্তা/ডিএফই//