নিজস্ব প্রতিবেদক: যুক্তরাজ্যভিত্তিক দেশের শীর্ষস্থানীয় নিত্য-ব্যবহার্য ও ভোগ্যপণ্য (এফএমসিজি) উৎপাদন ও বিপণনকারী বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড (ইউবিএল)-এর ঢাকা সদর দপ্তরে যুক্তরাজ্য সরকারের বাংলাদেশের বাণিজ্যদূত ও ব্রিটিশ হাউস অব লর্ডস-এর সদস্য ব্যারোনেস রোজি উইন্টারটন (ডনকাস্টার) এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুককে স্বাগত জানিয়েছে।
প্রতিনিধি দলকে স্বাগত জানান ইউনিলিভার বাংলাদেশের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ। তাদের মধ্যে ছিলেন - হিউম্যান রিসোর্স ডিরেক্টর সৈয়দা দুরদানা কবির; কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স, পার্টনারশিপস অ্যান্ড কমিউনিকেশনস ডিরেক্টর শামিমা আক্তার এবং লিগ্যাল ডিরেক্টর অ্যান্ড কোম্পানি সেক্রেটারি এস এম রাশেদুল কাইয়ুম।
উচ্চ পর্যায়ের এই সফর ইউনিলিভারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করেছে, যেখানে কিভাবে ব্রিটিশ ঐতিহ্য থেকে বেড়ে ওঠা এই প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিকাশে একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে, তা তুলে ধরা হয়েছে। উল্লেখ্য, ইউনিলিভার বাংলাদেশ বৈশ্বিক ব্রিটিশ কোম্পানি ইউনিলিভারের অংশ এবং এর সদর দপ্তর যুক্তরাজ্যে অবস্থিত। এই সফর উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ইউবিএল-এর নেতৃবৃন্দ প্রতিষ্ঠানের ছয় দশকের যাত্রা উপস্থাপন করে জানান, প্রতিষ্ঠানটি এখন বাংলাদেশের ১০টি পরিবারের মধ্যে ৯টিরও বেশি পরিবারের অংশ এবং টেকসই উন্নয়নের প্রতি তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
১৯৬২ সালে চট্টগ্রামের কালুরঘাটে একটি সাবানের কারখানা স্থাপনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে ইউনিলিভারের যাত্রা শুরু হয়। তখন থেকে, প্রতিষ্ঠানটি ২৫টিরও অধিক আইকনিক ব্র্যান্ডের মাধ্যমে দেশজুড়ে পরিচিতি লাভ করেছে, যার ৯৬ শতাংশের বেশি বর্তমানে দেশেই উৎপাদিত হয়। ১৯৭৩ সাল থেকে, ইউনিলিভারের ৩৯.২৫% শেয়ারের মালিকানা বাংলাদেশ সরকারের- যা জাতি গঠনে প্রতিষ্ঠানের গভীর ও স্থায়ী অংশীদারিত্বের প্রমাণ।
যুক্তরাজ্য সরকারের বাংলাদেশের বাণিজ্য দূত ও ব্রিটিশ হাউস অব লর্ডস-এর সদস্য ব্যারোনেস রোজি উইন্টারটন (ডনকাস্টার) বলেন, “দীর্ঘমেয়াদি বাণিজ্যিক অংশীদারিত্ব কেমন হতে পারে, ইউনিলিভার তারই একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ। একটি ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান যেভাবে বাংলাদেশের উন্নয়নের গল্পে এত গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে, তা সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক। তাদের এই পথ চলা শুধু বাণিজ্যে সীমাবদ্ধ নয়—এটি যৌথ সমৃদ্ধি এবং দায়িত্বশীল ব্যবসার প্রতিচ্ছবি।”
অনুষ্ঠানে ইউনিলিভারের অগ্রগামী টেকসই উন্নয়ন কর্মসূচিসমূহ তুলে ধরা হয়, যার মধ্যে রয়েছে- জলবায়ু সহনশীলতা, প্লাস্টিক হ্রাস, ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি এবং কমিউনিটির ক্ষমতায়ন। উদ্ভাবনকে কেন্দ্র করে, ইউনিলিভার বাংলাদেশে জাতীয় উন্নয়নের অগ্রাধিকারের সঙ্গে তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম ক্রমাগত সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে চালিয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেন, “অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পরিবেশবান্ধব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পথে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা প্রশংসনীয়। ইউনিলিভারের মতো দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক রেখে স্থানীয় প্রতিশ্রুতি পালন করা ব্রিটিশ কোম্পানিগুলো এই রূপান্তরের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। টেকসই উন্নয়নে তাদের বিনিয়োগই আজকের পৃথিবীর প্রয়োজনীয় কর্পোরেট নেতৃত্বের উদাহরণ।”
কর্মক্ষেত্রে নারীদের সহযোগিতা করা থেকে শুরু করে প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহারে নেতৃত্ব এবং বিজ্ঞাননির্ভর উদ্ভাবনে বিনিয়োগ - এইসব কাজের মধ্য দিয়ে ইউনিলিভার তাদের মূল লক্ষ্য ‘সবার জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা’ বাস্তবায়ন করে চলেছে। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের বিশ্বাস “যা বাংলাদেশের জন্য ভালো, সেটাই ইউনিলিভারের জন্য ভালো।”
ইউবিএল-এর কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স, পার্টনারশিপস অ্যান্ড কমিউনিকেশনস ডিরেক্টর শামিমা আক্তার বলেন, “আমরা আমাদের ঐতিহ্য নিয়ে গর্বিত, আমাদের লক্ষ্য নিয়ে গর্বিত, এবং বাংলাদেশের মানুষের পাশে থাকতে পেরে গর্বিত। এই যাত্রায় পাশে থাকার জন্য আমরা যুক্তরাজ্যের অংশীদার এবং বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। আমাদের প্রতিশ্রুতি শুধুই ব্যবসার প্রতি নয়, এই দেশের মানুষের কল্যাণ ও অগ্রগতির প্রতিও।”
এই সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রতি ইউনিলিভারের অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়া হয় যার শিকড় স্থানীয়ভাবে গভীর এবং যার রয়েছে দীর্ঘমেয়াদি আস্থাভিত্তিক অংশীদারিত্বের প্রতিশ্রুতি।
বিনিয়োগবার্তা/ডিএফই//