ড: মিহির কুমার রায়: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করেছেন যার আকার ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। বাজেটের আকার আগের চেয়ে কমিয়ে এনে অনেকটা বাস্তবমুখী করার এই প্রয়াস প্রশংসার দাবি রাখে। অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেছেন একটি উন্নত সমাজ বিনির্মাণের উদ্দেশ্যে সরকারের গৃহীত কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব এবং শূন্য কার্বন ভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণ যার মাধ্যমে আমূল পরিবর্তন হবে এদেশের মানুষের জীবন মানের এবং মুক্তি মিলবে বৈষম্যের দুষ্ট চক্র থেকে। তবে অনেককেই আবার বলতে শোনা যাচ্ছে ঘোষিত বাজেট বর্তমান সময়ের অর্থনৈতিক সমস্যাগুলো নিরূপণ করতে পারলেও বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের দিক নির্দেশনা এতে অনুপস্থিত।
অর্থনৈতিক রূপান্তরের যে আকাঙ্ক্ষা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছিল, তার পূর্ণ প্রতিফলন বাজেটে ঘটেনি। মানুষ আশা করেছিল, গণ-অভ্যুত্থানের পর গঠিত নতুন সরকারের বাজেটে ধনী-গরিবের আয় বৈষম্য কমানোর কার্যকর উদ্যোগ থাকবে, কর ফাঁকি দেওয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ থাকবে, নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির ওপর করের চাপ থাকবে না যার কৌশল দেখা যায়নি, বেকার সমস্যা থেকে যে গণঅভ্যুত্থান শুরু হয়েছিল, সেই সমস্যার কার্যকর সমাধান বাজেটে নেই, কর্মসংস্থান বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিনিয়োগ বাড়ানোর কোনো স্পষ্ট নীতি বাজেটে দেখা যায়নি।
অর্থ উপদেষ্টা তার উপস্খাপনায় ছোট বাজেট বড় আশার কথা শুনিয়েছেন যেমন ১. মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের/হ্রাসের প্রতি মনোযোগী এবং সেজন্য ধারাবাহিকভাবে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অবলম্বন করছে; ২. বাজেট বক্তৃতায় খাদ্য নিরাপত্তার ওপরও গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। কারন গত বছরের বন্যায় ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কিছুটা কম হওয়ায় সরকার চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় এবং তা বাস্তবায়ন করে। সারের মজুদ বৃদ্ধি করাসহ কৃষকের জন্য ন্যায্যমূল্যে সার সহ অন্যান্য উপকরণ সরবরাহের ব্যবস্থা করা; ৩. দেশে অন্তর্মুখী রেমিট্যান্স উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে এবং আমদানির তুলনায় রপ্তানি বেড়েছে। ফলে চলতি হিসাবের ভারসাম্যে ক্রমাগত উন্নতি সাধিত হচ্ছে। রিজার্ভেও ইতিবাচক পরিবর্তনের ফলে সাধারণ জনগণের কাছে এটি আশার সৃষ্টি করছে; ৪. অর্থনীতির অগ্রগতির জন্য কর-জিডিপির অনুপাত বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই যা অনেক দেশের চাইতে বাংলাদেশের এই অনুপাত কম। করের আওতা ও পরিমাণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার ইতোমধ্যে বিভিন্নমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে যেমন অটোমেটেড ব্যবস্থার মাধ্যমে আয়কর রিটার্ন দাখিল, দেশে নতুন নতুন কর অফিস স্থাপন, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি রাজস্ব কৌশল তৈরি ইত্যাদি। কিন্তু এসবের কোনোটাই জুতসই বা লাগসই হয়ে উঠছে না। সরকার দাবী করছে, কর আদায়ের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে রাজস্ব ব্যবস্থাপনাকে রাজস্ব নীতি হতে পৃথক করা হয়েছে; ৫. অর্থ খাত সংস্কারের জন্য সরকার তিনটি টাস্কফোর্স গঠন করেছে; এর প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে : (ক) ব্যাংকিং খাত সংস্কার, (খ) নীতি ও প্রবিধান সমূহ কার্যকরভাবে প্রয়োগ ও সুশাসন বজায় রাখার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সক্ষমতা ও দক্ষতা বাড়ানো এবং (গ) চুরি বা পাচার হওয়া সম্পদ উদ্ধার। ব্যাংকিং খাতের সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। দ্রুত উন্নয়নশীল বিশ্বে দ্রুত পরিবর্তনশীল কৌশল ও কারিগরি জ্ঞানের সঙ্গে তাল মিলাতে না পারলে ব্যাংকিং খাত পরিচালনা করা অসম্ভব। তাই ব্যাংকিং খাত সংস্কার ও সংশ্লিষ্ট সকলের সক্ষমতা ও দক্ষতা বাড়ানো ছাড়া কোনো বিকল্প পথ খোলা নেই; ৬. পুঁজিবাজারে পুনরায় গতি ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে অর্থ উপদেষ্টা কতিপয় পদক্ষেপের কথা বলেছেন যার মধ্যে মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলোতে সরকারের শেয়ার কমিয়ে পুঁজিবাজারে অন্তর্ভুক্তকরণ, বেসরকারি খাতের দেশীয় বড় কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির জন্য উৎসাহ প্রদান, বাজার কারসাজি বন্ধকরণ, অনিয়মের সাথে জড়িত সকলকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা ইত্যাদি রয়েছে; ৭. ক্যানসার প্রতিরোধের ওষুধ সহ সকল ধরনের ওষুধ শিল্পের কাঁচামাল আমদানি এবং অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রিডিয়েন্টস (এপিআই) তৈরির কাঁচামাল কর অব্যাহতি এবং এপিআই উৎপাদনের ক্ষেত্রে উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতির সুবিধার মেয়াদ ৩০ জুন, ২০৩০ পর্যন্ত বৃদ্ধির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে যা প্রশংসার দাবিদার; ৮. বাজেটে অতি সামান্য হলেও শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। তবে মূল্যস্ফীতির বিবেচনায় এটা আদৌ কোনো বৃদ্ধি নয়। তবুও টাকার অঙ্কে বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়েছে বিধায় প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য; ৯. প্রবৃদ্ধি-কেন্দ্রিক ধারণা থেকে সরে এসে সরকার চেষ্টা করছে সামগ্রিক উন্নয়নের ধারণায় জোর দিতে। তাই প্রথাগত ভৌত অবকাঠামো তৈরির খতিয়ান তুলে ধরার পরিবর্তে এবারের বাজেটে প্রাধান্য মানুষকে। মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা, সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা, জীবিকার নিরাপত্তা এবং বৈষম্যহীন পরিবেশ এ অত্যাবশ্যক উপাদানগুলো ছাড়া যে কোনো রাষ্ট্র অকার্যকর হয়ে পড়ে, দুর্বল হয় সমাজের ভিত; ১০. ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে আহত গেজেটভুক্ত ‘জুলাই যোদ্ধা’ করদাতাদের বিশেষ আয়কর সুবিধা দিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে তাঁদের ক্ষেত্রে করমুক্ত আয়ের সীমা দেড় লাখ টাকা বাড়িয়ে ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে; ১১. আগামী অর্থবছরের প্রস্তাব অনুসারে, ৫, ১০, ১৫, ২০ ও ২৫ শতাংশ কর হারের পরে উচ্চস্তরে আরেকটি কর হার এসেছে। হিসাব করে দেখা গেছে, বছরে আয় সাড়ে ৩৮ লাখ টাকার বেশি হলে ওই করদাতাকে বাকি অর্থের ওপর ৩০ শতাংশ হারে কর দিতে হবে। নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রথম সাড়ে তিন লাখ টাকার পরে প্রথম ১ লাখ টাকার জন্য ৫ শতাংশ, পরবর্তী ৪ লাখ টাকার জন্য ১০ শতাংশ, পরবর্তী ৫ লাখ টাকার জন্য ১৫ শতাংশ, পরবর্তী ৫ লাখ টাকার জন্য ২০ শতাংশ ও পরবর্তী ২০ লাখ টাকা আয়ের জন্য ২৫ শতাংশ এবং বাকি অর্থের ওপর ৩০ শতাংশ হারে কর বসবে। এছাড়া নারী করদাতা ও ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য করমুক্ত আয় সীমা হলো ৪ লাখ টাকা। তৃতীয় লিঙ্গের করদাতা ও প্রতিবন্ধী স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতার করমুক্ত আয় সীমা হবে পৌনে ৫ লাখ টাকা। গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা করদাতার করমুক্ত আয়সীমা ৫ লাখ টাকা হবে। আর প্রতিবন্ধী ব্যক্তির মাতা-পিতা বা আইনানুগ অভিভাবকের প্রত্যেক সন্তান বা পোষ্যের জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা আরও ৫০ হাজার টাকা বেশি হবে।
এই সকল আলোচনায় দেখা যায় যে. ছাত্রদের নেতৃত্বে গত বছরের জুলাই মাসে যে গণ অভ্যুত্থান হয়, তার উল্লেখযোগ্য কারণ ছিল বৈষম্য, কর্মসংস্থানের অভাব। প্রাথমিকভাবে সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন দানা বেঁধে উঠলেও এর পেছনে ছিল গভীরতর সামাজিক অসন্তুষ্টি। বিপুল সংখ্যক তরুণ কর্মসংস্থানের বাইরে। শিক্ষিত বেকারের হার অন্তত ২০ শতাংশ। তরুণদের প্রত্যাশা ছিল, এই জায়গায় বড় উন্নতি হবে। তবে গণ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের বাজেটে সেই প্রত্যাশা পূরণে জোরালো পদক্ষেপ দেখা গেল না। শুধু কর্মসংস্থান নয়, প্রত্যাশিত অনেক খাতে সরকার গতানুগতিক থেকেছে। মনে হচ্ছে, দিন পার করার একটি বাজেট ঘোষণা করেছেন অর্থ উপদেষ্টা।
গত বছরের ছয় মাসে ৪ শতাংশ শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন, চাকরি, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণে নেই শ্রম শক্তির অন্তত ৩০ শতাংশ। ফলে দেশে ব্যাপকভাবে কর্মসংস্থানের যে প্রত্যাশা রয়েছে, বাজেটে সেভাবে মনোযোগ দেওয়া হয়নি। অবশ্য অর্থ উপদেষ্টার বাজেট বক্তব্যে কর্মসংস্থানের সামান্য তহবিল, আত্ম কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রকল্প এবং প্রশিক্ষণের উদ্যোগের কথা বলা হয়েছে।
সামাজিক নিরাপত্তায় কয়েকটি জায়গায় নামমাত্র ভাতা বাড়ানো হয়েছে। টিসিবির বাদ পড়া ৪৩ লাখ পরিবারের কার্ড কবে হবে তার ঘোষণা নেই। ভাতা বাড়ানো হলেও সামাজিক নিরাপত্তার প্রকল্প কমিয়ে আনা হয়েছে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বাড়তি নজর দেওয়া হয়নি।
কর্মসংস্থানের সঙ্গে দারিদ্র্য বিমোচনের বিষয়টি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। দেশের ৪ কোটির বেশি মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করে। বিশ্বব্যাংক সম্প্রতি বলেছে, দারিদ্র্য পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। দরিদ্রদের সুরক্ষায় বাজেটে কিছু কর্মসূচি ও প্রকল্প রয়েছে। কিন্তু দারিদ্র্য বিমোচনে বিশেষ পরিকল্পনার কথা জানাননি অর্থ উপদেষ্টা। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কৃষি মন্ত্রণালয় খাতে ২৭ হাজার ২২৪ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কৃষি মন্ত্রণালয় খাতে বাজেটের পরিমাণ ছিল ২৭ হাজার ২১৪ কোটি টাকা, যা সংশোধিত বাজেটে দাঁড়িয়েছিল ২৪ হাজার ৬৯৬ কোটি টাকা।
জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকির গভীরতা ও গুরুত্ব বিবেচনায় প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের লক্ষ্যে আগামী অর্থবছরে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। বাজেটের আগে অর্থ উপদেষ্টা এবং এনবিআর চেয়ারম্যান বলেছিলেন, ব্যক্তির করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো হবে। বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানোর ঘোষণা রয়েছে। কিন্তু তা কার্যকর হবে ২০২৬-২৭ অর্থবছর থেকে। গত অর্থবছরের অর্থ আইনে দুই অর্থবছরের আয়করের হার নির্ধারণ করা হয়। বলা হচ্ছে, এ কারণে এখন সরকার পরিবর্তন করেনি। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর অনেক আইনে সংশোধনী এনেছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে করমুক্ত আয়ে আগামী অর্থবছরে ছাড় দেওয়া উচিত ছিল। তবে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য বিশেষ সুবিধা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা। এর মানে তাদের বেতন বাড়বে। মূল্যস্ফীতির চাপ সামাল দিতে সরকারি প্রায় ১৫ লাখ চাকরিজীবীর সুবিধা হবে।
অর্থ উপদেষ্টার বাজেট বক্তব্যের শিরোনাম ‘বৈষম্যহীন ও টেকসই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ার প্রত্যয়’। তবে বৈষম্যহীন অর্থনীতি গড়ে তোলার দিক নির্দেশনা তিনি স্পষ্ট করেননি। বৈষম্যহীনতার ঘোষণা দিলেও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হয়েছে। এ ধরনের সুযোগ রাখা সৎ করদাতাদের প্রতি বৈষম্যমূলক। বাজেটে বেসরকারি বিনিয়োগ উৎসাহিত করার পদক্ষেপও আশানুরূপ নয়। অথচ গত অর্থবছরে জিডিপির অনুপাতে বেসরকারি বিনিয়োগ কমে গেছে। বিনিয়োগের বিষয়ে বলতে গিয়ে অর্থ উপদেষ্টা গত বিনিয়োগ সম্মেলনের গুণগান গেয়েছেন। নাসার সঙ্গে মহাকাশ গবেষণার চুক্তির কথা বলেছেন। এই চুক্তি দেশের বিনিয়োগ পরিস্থিতিকে কীভাবে উৎসাহ দেবে স্পষ্ট নয়। বিনিয়োগের বিভিন্ন অন্তরায় দ্রুততম সময়ে দূর করার চেষ্টার কথা জানিয়েছেন তিনি। এবারের বাজেটে আমদানি উদারীকরণের পথে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর অন্যতম লক্ষ্য ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক থেকে রেহাই পাওয়া। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি হয় এরকম কিছু পণ্যকে মাথায় রেখে শুল্ক ছাড় দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় উৎপাদনে বিশেষত ইলেকট্রনিকস পণ্য উৎপাদনে বিভিন্ন কর ছাড় কমানো হয়েছে। এলডিসি থেকে উত্তরণের জন্য আমদানি বাণিজ্য উদারীকরণের দিকে অনেকটা এগোলেও দেশের রপ্তানিকারকরা যাতে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেন, তার জন্য বিশেষ কোনো উদ্যোগ নেই। এলডিসি উত্তরণ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ৩১টির মতো শিল্প খাতে কর-অবকাশ সুবিধা বাতিল করা হতে পারে। সরকার ৯০টির বেশি পণ্য ও সেবায় ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক (এসডি) বৃদ্ধি করতে যাচ্ছে।
জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ তহবিল করা হচ্ছে। এর জন্য দেড় হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ থাকছে বাজেটে। এই টাকায় মাসিক ভাতা, দেশে-বিদেশে চিকিৎসা খরচ, ফ্ল্যাট ও কর্মসংস্থানের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) বলেন, বৈষম্য দূর করার কথা বলেই অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। আমরা চাই, বাজেটে কিছু ইনোভেশন থাকুক, মানুষকে স্বস্তি দেওয়া হোক। অতীতে দেখা গেছে, বাজেটের পরিমাণ, করের পরিমাণ প্রতি বছর বেড়েছে; কিন্তু জীবনমান বাড়েনি। এখন আমরা সেই ধারার পরিবর্তন চাই। কালো টাকাকে সাদা করা হলে দুর্নিতিকে উৎসাহিত করা হবে। তাহলে বৈষম্য কমানো হলো কীভাবে? জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ তহবিল করা হচ্ছে। এর জন্য দেড় হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ থাকছে বাজেটে। এই টাকায় মাসিক ভাতা, দেশে-বিদেশে চিকিৎসা খরচ, ফ্ল্যাট ও কর্মসংস্থানের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
লেখক: অধ্যাপক (অর্থনীতি), সাবেক পরিচালক, বার্ড (কুমিল্লা), সাবেক ডিন (ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ) ও সিন্ডিকেট সদস্য, সিটি ইউনিভার্সিটি, ঢাকা।
বিনিয়োগবার্তা/ডিএফই//