যশোর প্রতিনিধি: করোনা সংক্রমণের হার আবারও বাড়তে থাকায় জনসমাগমপূর্ণ এলাকায় দীর্ঘদিন পর মাস্ক পরার নির্দেশনা জারি করেছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় বেনাপোল ইমিগ্রেশন এলাকাতেও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে মাস্ক পরা। তবে পাসপোর্টধারী যাত্রীসহ ইমিগ্রেশন পুলিশ, বন্দর ও কাস্টমসে কর্মরত অনেকে এ নির্দেশনা মানতে অনীহা প্রকাশ করছেন।
১০ জুন মঙ্গলবার ভারত থেকে আগত ও ভারতে যাওয়া যাত্রীদের মাস্ক পরার নির্দেশনা দিতে দেখা যায় ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্যকর্মীদের। মেডিকেল ডেস্কে দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারি কর্মকর্তাদের ভারত থেকে ফিরে আসা যাত্রীদের করোনার উপসর্গ আছে কিনা তা প্রাথমিক ভাবে পরীক্ষা করা হচ্ছে। তবে ইমিগ্রেশন ও বন্দর এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, অনেকেই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। মাস্ক ছাড়া চলাফেরা করছেন পুলিশ, কাস্টমস ও বন্দর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও। গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়ে তখন অনেককে মাস্ক পরতে দেখা যায়। হাত ধোয়ার বেসিনটি নষ্ট হয়ে পড়ে আছে ৪ বছর ধরে। নেই পানি বা সাবানের ব্যবস্থা।
ভারতের বিভিন্ন স্থানে নতুন ভাবে করোনা ভাইরাসের সংক্রমন দেখা দিয়েছে। জেনেটিক সিকুয়েন্স পরীক্ষার মাধ্যমে জানা গেছে এসব স্থানেও মিক্রন ধরনের (ভ্যারিয়েন্ট) এলএফ-৭, এক্সএফজি, জেএন. আইএন্ডএনবি.১.৮.১ উপধরনের (সাবভ্যারিয়েন্ট) কারণে সংক্রমণবৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিবেশী দেশসমূহে সংক্রমণ বাড়লে বাংলাদেশেও সেই সংক্রমণের আশংকা থাকে। এই সংক্রমণ এড়াতে দেশের সকল নৌ, স্থল ও আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সমূহে স্ক্রিনিংসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মানার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। চলতি মাসের ৪ জুন রোগ নিয়ন্ত্রণ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মহাখালীর পরিচালক অধ্যাপকডা. মো. ফরহাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এ সম্পর্কে এক আদেশ জারি করা হয়েছে।
আদেশে ভারতসহ বিভিন্ন সংক্রমিত দেশ থেকে আগত সন্দেহ জনক যাত্রীদের দেশের স্থল, নৌবন্দর এবং বিমান বন্দরের ইমিগ্রেশন ও আইএইচআর হেলথ ডেস্কের সহায়তার বিষয়ে স্বাস্থ্য বার্তা প্রদান এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিবিড় ভাবে পরিচালনা করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
ভারত ফেরত যাত্রী পরিতোষ মন্ডল জানান, ১০ দিন আগে চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়েছিলাম। আজ দেশে ফিরলাম। বাংলাদেশের মতো ভারতের কোথাও করোনা বা ওমিক্রনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেনি।
ভারত ফেরত যাত্রী সীমারা বললেন, এক মাস চিকিৎসার পর আজ দেশে ফিরে আসলাম। ভারতের কোথাও নতুন করে করোনার প্রভাব ছড়িয়েছে শুনিনি। দেশে আসার পর দেখছি করোনার পরীক্ষা করছে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের উপ-সহকারি মেডিকেল অফিসার আব্দুল মজিদ বলেন, ভারতে জেনেটিক সিকুয়েন্স পরীক্ষার মাধ্যমে জানা গেছে ভারতের কিছু কিছু স্থানেও মিক্রন ধরনের সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশে করোনার এ নতুন ধরনটি যাতে ছড়াতে না পারে সে জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে সতর্কতার জন্য ভারত ফেরত প্রত্যেক যাত্রীকে আমরা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছি। আমাদেরকে পরিচালক স্যার নির্দেশনা দিয়েছেন যদি কারো শরীওে করোনা বা ওমিক্রনের উপধারার উপসর্গ পাওয়া যায় তাহলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আইসোলেশন করার পরামর্শ দিয়েছেন। তবে অনেকেই স্বাস্থ্যবিধি মানতে চাচ্ছেন না।
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াজ আহম্মেদ মুন্সী বলেন, ‘ইমিগ্রেশনে সচেতনতা মূলক লিফলেট লাগানো হয়েছে এবং দূরত্ব বজায় রেখে পাসপোর্ট প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হচ্ছে। পুলিশ সদস্যদের জন্য মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।’
বেনাপোল বন্দরের উপ পরিচালক মামুন কবির তরফদার জানান, ঈদের ছুটিতে বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। চালু হলে সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে।
বিনিয়োগবার্তা/এমআইএম/ডিএফই//