বিনিয়োগবার্তা ডেস্ক: স্পেনের বার্সেলোনায় সন্ত্রাসী হামলায় ১৩ জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন প্রায় ১০০ জন। আহতদের মধ্যে কমপক্ষে ১৮টি দেশের নাগরিক। পথচারীদের ভিড়ের মধ্যে একটি ভ্যান গাড়ি দ্রুত বেগে চালিয়ে দিয়ে এ হামলা চালানো হয়। শুক্রবার স্পেনের জন নিরাপত্তা সংস্থা একথা জানায়।
এক মুখপাত্র জানান, বার্সেলোনা শহরের জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা লাস র্যামব্লাসে বৃহস্পতিবারের এ ‘সন্ত্রাসী হামলায়’ হতাহতদের মধ্যে ফ্রান্স, জার্মানি, স্পেন, নেদারল্যান্ড, আর্জেন্টিনা, ভেনিজুয়েলা, বেলজিয়াম, অস্ট্রেলিয়া, হাঙ্গেরি, পেরু, রোমানিয়া, আয়ারল্যান্ড, গ্রিস, কিউবা, মেসেডোনিয়া, চীন, ইতালি ও আলজেরিয়ার নাগরিক রয়েছেন। তবে নিহত বা আহতদের মধ্যে কোন দেশের কতজন নাগরিক রয়েছেন, সে ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু উল্লেখ করা হয়নি।
আঞ্চলিক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যাকুইম ফর্ন জানান, হামলায় ১৩ জন নিহত ও প্রায় ১শ’ জন আহত হয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ঘটনার আকস্মিকতায় ভয়ে অনেকেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। পুলিশ বলেছে এটি একটি সন্ত্রাসী হামলা।
এদিকে এমন বর্বর হামলার ঘটনায় বিশ্ব নেতৃত্ববৃন্দ কঠোর নিন্দা জানিয়েছেন।
টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাজয় বলেন, এ হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় ‘আমরা সকলেই গভীরভাবে শোকাহত।’
ইসলামিক স্টেটের প্রচারণা সংস্থা আমাক এ হামলার দায় স্বীকার করেছে। তাদের প্রচারণা সংস্থা আমাক জানায়, ওই জিহাদি গ্রুপের ‘সৈন্যরা’ এ হামলা চালিয়েছে।
স্পেনের স্থানীয় সংবাদপত্রের খবরে বলা হয়, পথচারীদের এভাবে পিষ্ট করার পর ভ্যানচালক হেঁটে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। হামলার পরপরই এক বা দু’জন সশস্ত্র ব্যক্তি ঘটনাস্থলের কাছাকাছি থাকা একটি পানশালায় আত্মগোপন করে।
পুলিশ জানায়, এ হামলার ঘটনায় দুই সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হলেও ভ্যানচালক এখনো পলাতক রয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের একজন স্পেনের এবং অপরজন মরক্কোর নাগরিক।
ঘটনার একজন প্রত্যক্ষদর্শী যুক্তরাষ্ট্রের নিউ অরলিন্সের বাসিন্দা টম মার্কওয়েল। হামলার মুহূর্তে তিনি একটি ট্যাক্সিতে লাস র্যামব্লাসের হামলাস্থলে এসে নামেন। তিনি ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, ‘আমি প্রথমে জনতার চিৎকার-চেঁচামেচি শুনতে পেলাম। এটা শুনে আমার মনে হলো তারা যেন কোনো সিনেমার তারকাকে দেখেছেন।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমি ভ্যানটি দেখেছি। সেটি দ্রুতবেগে ডানে-বাঁয়ে চলে সামনে এগোচ্ছিল। চেষ্টা করছিল যতটা সম্ভব বেশি মানুষকে পিষ্ট করতে। এতে হতাহত হয়ে অনেকে রাস্তায় লুটিয়ে পড়ছিল।’
হামলার পর দ্রুত ঘটনাস্থলে সশস্ত্র পুলিশ সদস্যরা আসে এবং ঘটনাস্থল ঘিরে ফেলে। তারা এসেই সেখান থেকে লোকজনকে সরে যেতে বলতে থাকে।
জনতার ওপর গাড়ি উঠিয়ে হামলার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। গত বছর জুলাই থেকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কয়েক দফায় এ রকম হামলার ঘটনা ঘটেছে।
(এমআইআর/ ১৮ আগস্ট ২০১৭)