প্রতিবেদক, বিনিয়োগবার্তা, ঢাকা: নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার ঠেঙ্গার চরে রোহিঙ্গাদের অস্থায়ী ভিত্তিতে স্থানান্তরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সমর্থনের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। একইসঙ্গে তাদের বাংলাদেশ থেকে স্থায়ীভাবে ফিরিয়ে নিতেও সহায়তা চাওয়া হয়েছে।
গতকাল রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশি কূটনীতকদের প্রায় দেড় ঘণ্টা ব্রিফিং করার সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এএইচ মাহমুদ আলি এ আহ্বান জানান।
সরকারের সিদ্ধান্তটি বিদেশি কূটনীতিকদের ব্যাখ্যা দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজারে অনেক বেশি রোহিঙ্গা থাকার কারণে সেখানে আবাসনের সমস্যা রয়েছে। সেই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্যই অস্থায়ীভাবে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশে বর্তমানে চার লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবৈধভাবে বসবাস করছে বলে বিদেশী কূটনীতিকদের অবহিত করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
মন্ত্রী জানান, বেশিরভাগ রোহিঙ্গা কক্সবাজারের অবস্থান করার কারণে সেখানের পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কক্সবাজারে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় তাদেরকে ঠেঙ্গার চরে অস্থায়ীভাবে পাঠানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। আমরা আশা করছি, এর ফলে রোহিঙ্গাদের বসবাসের সমস্যা কিছুটা হলেও দূর হবে।’ রোহিঙ্গাদের উন্নত বসবাসের ব্যবস্থা করার জন্য নতুন করে শেল্টার, স্কুল, হসপিটাল, মসজিদ ও অন্যান্য স্থাপনা বানানো হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী।
বৈঠকে ব্রাজিল, যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব রাষ্ট্রদূত ও জাতিসংঘ আবাসিক প্রতিনিধি রোহিঙ্গা পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের কার্যক্রমের প্রশংসা করেন। তারা বলেন, বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে, তাদের মানবিক সাহায্য দিয়েছে। এসময় সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত তার দেশে অবস্থিত রোহিঙ্গাদের কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশের প্রতি সৌদি আরবের সমর্থনের কথা জানান।
কূটনীতিকরা রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের জন্য সরকারকে সহায়তা করার বিষয়ে তাদের আগ্রহের কথা বলেন। রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর মাধ্যমেই এ সমস্যার সমাধান রয়েছে এবং এ বিষয়ে তারা বাংলাদেশকে সহায়তা করতে প্রস্তুত বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে।
যুক্তরাজ্য, কানাডা, চীন, জাপান, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, তুরস্ক, মালয়েশিয়া, ফ্রান্স, সুইডেন, ডেনমার্ক, শ্রীলঙ্কা, ব্রুনেই, স্পেন, নেপালসহ প্রায় সব দেশের রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন।
(এসএএম/ ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭)