প্রতিবেদক, বিনিয়োগবার্তা, ঢাকা: বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে পুঁজিবাজার থেকে মূলধন সংগ্রহের লক্ষ্যে রোড শো সম্পন্ন করল তথ্য প্রযুক্তি ও টেলিযোগাযোগ খাতের কোম্পানি এডিএন টেলিকম। এ পদ্ধতিতে পুঁজিবাজার থেকে ৫৭ কোটি টাকা তুলতে চায় কোম্পানিটি।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকার হোটেল লো মেরিডিয়ানে কোম্পানিটির প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের এ রোড শো অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এতে স্টক এক্সচেঞ্জের কর্তা-ব্যক্তিরাও ছাড়াও অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী যেমন- মার্চেন্ট ব্যাংক, সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি, স্টক ডিলার, ব্যাংক, অব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির প্রতিনিধি ও তহবিল ব্যবস্থাপকরা।
টেলিকম খাতে কোম্পানিটি দেশ ও বিদেশের গ্রাহকদের ডেটা, ভয়েস ও ইন্টারনেট সেবা দিয়ে থাকে।
রোড শোতে কোম্পানিটির চেয়ারম্যান আসিফ মাহমুদ এডিএন টেলিকমের বেড়ে ওঠার কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “কথা নয়, কাজের মাধ্যমে প্রমাণ করেছি আমরা কী করতে পারি।”
পুঁজিবাজারে এডিএন টেলিকমের তালিকাভুক্তিতে সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা চেয়ে তিনি বলেন, “বিগত বছরগুলোতে আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়ে যেভাবে রাখতে পেরেছি, আগামীতেও আমরা সেভাবেই রাখতে পারব।”
২০১৬ সালের জুনে সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটি ১০ টাকার প্রতিটি শেয়ারে আয় করেছিল ২ টাকা ১০ পয়সা। ২০১৭ সালের জুনে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ৫২ পয়সা। শেয়ার প্রতি সম্পদমূল্য ১৬ টাকা ১৩ পয়সা।
রোড শোতে এডিএন টেলিকমের বিভিন্ন দিক নিয়ে একটি উপস্থাপনা দেন কোম্পানিটির পরামর্শক আবু সাঈদ খান।
তিনি জানান, ওয়্যারলেস, স্যাটেলাইট ও ফাইবার অপটিক- তিন ক্ষেত্রেই এডিএন টেলিকমের সেবার সুযোগ রয়েছে। কোম্পানিটি খুচরো গ্রাহকদের থেকে বড় বড় গ্রাহকদের সেবা দিয়ে থাকে। কারণ এতে ঝুঁকি কম ও লাভ বেশি।
এডিএন টেলিকমের আন্তর্জাতিক পার্টনারের মধ্যে রয়েছে সিংটেল, টাটা টেলিকম্যুনিউকেশন, অরেঞ্জ, এয়ারটেলসহ বিভিন্ন কোম্পানি।
কোম্পানিটির প্রসপেক্টাস থেকে জানা যায়, প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে অর্থ তুলে তা কোম্পানির সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন (বিএমআরই), নতুন ডেটা সেন্টার তৈরি এবং ঋণ পরিশোধে ব্যয় হবে।
এর মধ্যে বিএমআরইতে ব্যয় করা হবে ৩২ কোটি ৬৭ লাখ, ডাটা সেন্টারে পাঁচ কোটি ৪৯ লাখ, ঋণ পরিশোধে ১৫ কোটি ৯০ লাখ এবং বাকি অর্থ আইপিও খরচ হিসেবে যাবে।
এডিএন টেলিকম পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য ইস্যু ব্যবস্থাপনা কোম্পানি আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে চুক্তি করেছে।
ঋণ পরিশোধ ও আইপিওর খরচ ছাড়া আইপিওর মাধ্যমে উত্তোলন করা বাকি অর্থ প্রায় তিন বছরে উঠে আসবে বলে সম্ভাব্যতা যাচাই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এডিএনের ঋণমাণ দীর্ঘ মেয়াদে এ প্লাস এবং স্বল্প মেয়াদে এসটি টু।
২০১৭ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত বছরে কোম্পানিতে মোট সম্পদের পরিমাণ ১২৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা। মোট চার কোটি ৪৮ লাখ ৬০ হাজার শেয়ারের মধ্যে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা/পরিচালকদের কাছে রয়েছে ৭৩ দশমিক ২৯ শতাংশ শেয়ার। বাকি শেয়ার রয়েছে অন্যান্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে।
এডিএন টেলিকম লিমিটেডের ছয় সদস্যের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হিসেবে আছেন আসিফ মাহমুদ। ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেনরি হিলটন পদাধিকার বলে পর্ষদের সদস্য। বাকিরা সবাই উদ্যোক্তা পরিচালক।
রোশ শো অনুষ্ঠানে হেনরি হিলটন, আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা (অতিরিক্ত) সোহেল রহমান এবং রুটস ইনভেস্টমেন্টের পরিচালক সারোয়ার হোসাইনও বক্তব্য রাখেন।
(কেএ/এমআর/এসএএম/ ২১ অক্টোবর ২০১৭)