বিনিয়োগবার্তা ডেস্ক, ঢাকা: হিমালয় পর্বতমালার পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট ও কে-টুর পরের অবস্থানে রয়েছে অনুপম সৌন্দর্যের গিরিবধূ কাঞ্চনজঙ্ঘা। এটি পৃথিবীর তৃতীয় উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ, যার উচ্চতা ২৮ হাজার ১৬৯ ফুট। এটির পাঁচটি চূড়া আছে, যার চারটির উচ্চতা ৮,৪৫০ মিটারের ওপরে।
কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়া দেখতে সারাবিশ্ব থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক ভারতের টাইগার হিলে ছুটে যান। ভোরে উষার সময় কাঞ্চনজঙ্ঘার ওপর রোদ পড়ে সেই রোদ যেন ঠিকরে পড়ে পর্যটকের চোখে। বরফে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘার ওপর দিনের প্রথম সূর্যোদয়ের সূর্যকিরণের ঝিকিমিকি দৃশ্য সত্যিই মুগ্ধতার মোহ ছড়ায়।
দার্জিলিং-এর টাইগার হিলই কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়া দেখার সবচেয়ে আদর্শ জায়গা। কিন্তু যদি পাসপোর্ট ভিসা ছাড়াই সেই দৃশ্য দেখতে পারেন তবে কেমন হয়? হ্যাঁ এমন সুযোগই রয়েছে।
বাংলাদেশের উত্তরের সর্বশেষ উপজেলা তেঁতুলিয়া থেকেই দেখা যাচ্ছে কাঞ্চনজঙ্ঘা। অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে বেশ ভালোভাবে দেখা যাচ্ছে বলে পর্যটকরা জানাচ্ছেন। আবহাওয়ার কারণে শীতকালে হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায়। কিন্তু এই অক্টোবরে বিভিন্ন ট্রাভেলার্স গ্রুপে বহুজনের পোস্টে দেখা গেছে তারা কাঞ্চনজঙ্ঘা বেশ ভালোভাবে অবলোকন করে এসেছেন।
দার্জিলিং-এ যারা বেড়াতে যান তাঁদের কাছে প্রধান আকর্ষণ বরফে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘার ওপর সূর্যোদয়ের সময় দিনের প্রথম সূর্যকিরণের ঝিকিমিকি!
টাইগার হিলে উষার সময় ভোরে দেখা গেলেও তেঁতুলিয়া থেকে এত ভোরে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায় না। সকাল ৮টা থেকে সূর্যকিরণ যখন তেজ হতে থাকে তখন স্পষ্ট হয়ে ধরা দেয় কাঞ্চনজঙ্ঘা। সকাল ১০টা পর্যন্ত বেশ ভালো দেখা যায়। তারপর আস্তে আস্তে ঝাপসা হতে থাকে কাঞ্চনজঙ্ঘা। শেষ বিকেলে সূর্যকিরণ আবার যখন তির্যক হয়ে পড়ে বরফের পাহাড়ে তখন অনিন্দ্য সুন্দর হয়ে ধরা দেয় কাঞ্চনজঙ্ঘা।
একজন পর্যটক বলেন, আমরা ৫ দিন তেঁতুলিয়ায় ছিলাম দুই কিস্তিতে প্রথম তিন দিন দেখেছি তাও এত স্পষ্ট যে দার্জিলিং শহরের লাইটসহ দেখা যাচ্ছিল, পাহাড়ের চূড়ায় বেইজ স্টেশনসহ! তিন তিনে ছত্রিশ গিগাবাইট ছবি তুলেছি।
কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায় দার্জিলিং-এর পাহাড় সারির ওপর দিয়ে, পাহাড়ে যখন কুয়াশা বেড়ে যায়, মেঘ বেড়ে যায় তখন তা ভেদ করে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা না যাওয়াই স্বাভাবিক, এ ছাড়াও আবহাওয়াগত অনেক কারণ আছে।
রাজধানী ঢাকা থেকে সরাসরি বাস যায় তেঁতুলিয়ায়। হানিফ, শ্যামলী ও কেয়াসহ বিভিন্ন পরিবহনের এসব বাসে ভাড়া নেবে ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকা। পঞ্চগড় বা তেঁতুলিয়ার পথে কোনো এসি বাস নেই। তেঁতুলিয়ায় নেমে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর, চা-বাগান বা আশপাশের এলাকায় ঘুরাঘুরির জন্য স্কুটার, অটোরিকশা, অটোভ্যান এবং মাইক্রোবাস ভাড়া পাওয়া যায়। আইনশৃঙ্খলার দিক দিয়ে তেঁতুলিয়া সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা থাকায় ইচ্ছেমতো ঘুরে উপভোগ করা যাবে দর্শনীয় স্থানগুলো।
(এএইচএন/ ২৪ অক্টোবর, ২০১৭)