প্রতিবেদক, বিনিয়োগবার্তা, ঢাকা: চলমান লুব্রিক্যান্টস ব্যবসা আরও সম্প্রসারণ করতে পুঁজিবাজার থেকে ১৪৪ কোটি টাকা মূলধন সংগ্রহ করতে চায় দেশের জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের অন্যতম কোম্পানি লুব-রেফ (বাংলাদেশ) লিমিটেড। কাজার থেকে সংগ্রহকৃত টাকার ৬৮ শতাংশই ব্যবসা সম্প্রসারণে ব্যয় করবে কোম্পানিটি। আর বাকি টাকা দিয়ে লোন পরিশোধ ও অনান্য খাতে খরচ করবে কোম্পানিটি।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর রেডিসান ব্লু ওয়াটার গার্ডেনে অনুষ্ঠিত প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) রোড শোতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে বাজারে আসতে চায় কোম্পানিটি। এর অংশ হিসেবে রোড শোর মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে কোম্পানিটির বিভিন্ন দিক এবং ভবিষ্যত পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুমতি পেলে প্রথমে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার বিক্রি করবে। পরে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার বিক্রি করা হবে। ১৪৪ কোটি টাকা সংগ্রহের জন্য যতগুলো শেয়ার বিক্রি করা প্রয়োজন, ততগুলো শেয়ার ইস্যু করবে কোম্পানিটি।
আইপিওর মাধ্যমে উত্তোলিত অর্থ থেকে ৪৬ কোটি টাকায় ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করা হবে। সাউথইস্ট ব্যাংকের চট্টগ্রামের জুবিলি শাখায় এই ঋণ পরিশোধ করা হবে।
কোম্পানির প্রতিটি শেয়ারের অভিহিত মূল্য ১০ টাকা। কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ১৫০ কোটি টাকা। আর পরিশোধিত মূলধন ১০০ কোটি টাকা।
৩১ অক্টোবর ২০১৭ সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় বা ইপিএস হয়েছে ৪৬ পয়সা। এসময় সম্পদ মূল্যায়ন করে কোম্পানির শেয়ার প্রতি প্রকৃত সম্পদ মুল্য (এনএভি) হয়েছে ২৮ টাকা ৫৯ পয়সা। আলোচ্য বছরে কর পরবর্তী মুনাফা হয়েছে ৩ কোটি ২১ লাখ ২৬ হাজার টাকা।
লুব-রেফ (বাংলাদেশ) লিমিটেড লুব্রিক্যান্টস পণ্যের ব্যবসা করে। রেলওয়ে, পাওয়ার প্লান্টস, অটোমোবাইলস, পরিবহন, মেরিন, বিমান এবং ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রয়েছে কোম্পানিটির ব্যবসা। কোম্পানির মোট উৎপাদনের মধ্যে রয়েছে ৬১ দশমিক ৫০ শতাংশ লুব-ব্লেন্ডিং ওয়েল, ১০ দশমিক ৪৬ শতাংশ ইঞ্জিন অয়েল, থার্মো অয়েল ১০ দশমিক ৯৩ শতাংশ এবং অন্যান্য অয়েল ১৭ দশমিক ১১ শতাংশ।
প্রতিষ্ঠানটির প্রতিযোগী কোম্পানির মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এমজেএল বাংলাদেশ এবং ইর্স্টার্ন লুব্রিক্যান্টস। এছাড়া মেঘনা পেট্রোলিয়াম, পদ্মা অয়েল কোম্পানি, গল্প ওয়েল বাংলাদেশ, রহিমাফরোজ ডিস্ট্রিবিউশন, নাভানা পেট্রোলিয়াম, র্যাঙ্কস পেট্রোলিয়াম, প্যাসেফিক অয়েল লিমিটেড।
রোড শোতে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, বাংলাদেশে লুব্রিক্যান্টস শিল্প বছরে ৩ শতাংশ হারে বাড়ছে। তবে এই মার্কেটে ৬০ শতাংশ দখল করে রেখেছে ব্র্যান্ডেড কোম্পানিগুলো।
তিনি বলেন, ২০১৫ সালে বৈশ্বিকভাবে লুব্রিক্যান্টসের ব্যবহার ছিল ৪১ দশমিক ৭ মেট্রিক টন। যা ২০১২ সালের তুলনায় সাড়ে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ছিল। ২০১৭ সালে এর পরিমাণ দাঁড়াবে ৪৪ মিলিয়ন মেট্রিক টনে। বিশেষ করে এশিয়া প্যাসেফিক জোনে এই ৪৪ শতাংশই ব্যবহার হবে। এই চাহিদাকে সামনে রেখেই লুব-রেফ (বাংলাদেশ) ব্যবসা বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে।
মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, গ্রিন টেকনোলজির মাধ্যমে আমরা লুব্রিক্যান্টস শিল্পে সেরা হতে চাই।
লুব-রেফ (বাংলাদেশ) লিমিটেডকে বাজারে আনতে ইস্যু ম্যানেজার হিসাবে কাজ করছে এনআরবি ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড।
(এমআইআর/ এসএএম/ ০৫ ডিসেম্বর ২০১৭)