Biniyougbarta | বিনিয়োগবার্তা: ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-বিনিয়োগের খবর প্রতিদিন সবসময়
Biniyougbarta | বিনিয়োগবার্তা: ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-বিনিয়োগের খবর প্রতিদিন সবসময়
Thursday, 01 Jan 1970 06:00
Biniyougbarta | বিনিয়োগবার্তা: ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-বিনিয়োগের খবর প্রতিদিন সবসময়

প্রতিবেদক, বিনিয়োগবার্তা, ঢাকা: নিরাপত্তার স্বার্থে দেশে কার্যক্রমে থাকা সব এয়ারলাইনসের বৈমানিকদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এরই ধারাবাহিকতায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসসহ বেসরকারি এয়ারলাইনসগুলোর সব বৈমানিককে নির্ধারিত ফরমে ব্যক্তিগত তথ্য সরবরাহ করার নির্দেশনা দিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।

বেবিচক সূত্রে জানা গেছে, নিরাপত্তা ছাড়পত্রের জন্য বেবিচক থেকে সরবরাহ করা ফরমে অন্যান্য সাধারণ তথ্যের পাশাপাশি বৈমানিকের অতীত ও বর্তমানের রাজনৈতিক মতাদর্শ ও সংশ্লিষ্টতার তথ্যও চাওয়া হয়েছে। এছাড়া রাজনীতির সঙ্গে জড়িত আত্মীয়স্বজনের বিবরণ, বন্ধুবান্ধব, সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে জড়িত আত্মীয়স্বজনের বিবরণ, অন্যান্য সংস্থার কোনো ব্যক্তির সঙ্গে আত্মীয়তা বা সম্পর্কের তথ্যও চাওয়া হছে। এছাড়া পারিবারিক তথ্যের বিস্তারিত বিবরণ, ব্যাংক হিসাব নম্বর, দুর্নীতির অভিযোগসহ কর্মক্ষেত্রে বঞ্চনার তথ্যও উল্লেখ করতে বলা হয়েছে নিরাপত্তা ছাড়পত্রের ওই ফরমে।

বৈমানিকরা বলছেন, বৈমানিক হিসেবে চাকরি নেয়ার সময়ই পুলিশ ভেরিফিকেশনে তাদের ব্যক্তিগত তথ্য যাচাই করা হয়েছে। ব্যাংক হিসাব নম্বর ও ব্যক্তিগত সম্পদের যাবতীয় বিবরণ আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার সময়ই তারা দিয়েছেন, যা এনবিআর থেকেই সংগ্রহ করতে পারে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সম্পদের তথ্য বেহাত হলে ভবিষ্যতে হয়রানিতে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বিমানে কর্মরত পাইলটদের সংগঠন বাংলাদেশ এয়ারলাইনস পাইলটস অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক ক্যাপ্টেন সাজ্জাদুল হক বলেন, দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেসব তথ্য চেয়েছে, তা দিতে কোনো বৈমানিকের আপত্তি নেই। তবে এতটুকু নিশ্চয়তা প্রয়োজন, যেন এসব তথ্য কখনই বেহাত না হয়। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন ইস্যুতে বৈমানিকদের মনে এমনিতেই ভীতি কাজ করছে। এ অবস্থায় নিরাপদ ফ্লাইট পরিচালনার স্বার্থেই বৈমানিকদের মানসিক ভীতি থেকে মুক্ত রাখা প্রয়োজন।

জানা গেছে, শুধু বৈমানিকই নন, দেশের সব এয়ারলাইনস ও হেলিকপ্টার সেবা পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের কো-পাইলট, কেবিন ক্রু ও প্রকৌশল বিভাগের সদস্যদেরও ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও শিক্ষাজীবনের তথ্যও সংগ্রহ করা হচ্ছে। বিমানবন্দরসংশ্লিষ্ট প্রত্যেক ব্যক্তির অতীতে কোনো ঝুঁকিপূর্ণ রেকর্ড থাকলে সেটিও আমলে নেয়া হচ্ছে।

বেবিচকের পরিচালক (ফ্লাইট সেফটি অ্যান্ড রেগুলেশন্স) উইং কমান্ডার চৌধুরী এম জিয়াউল কবির এ প্রসঙ্গে বলেন, সামগ্রিক নিরাপত্তার স্বার্থেই বৈমানিকদের ব্যক্তিগত তথ্য চাওয়া হয়েছে। এতে পক্ষান্তরে বৈমানিকরাই নিরাপদ থাকবেন। তিনি বলেন, তথ্য চাওয়ার বিষয়টি হয়তো অনেকের কাছে বাড়াবাড়ি মনে হতে পারে। কিন্তু এটি রাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত। যাত্রী, বৈমানিক ও সামগ্রিক এভিয়েশন খাতের নিরাপত্তার জন্যই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এসব তথ্য সংগ্রহ করছে।

গত ৩০ অক্টোবর বিমানের ফার্স্ট অফিসার সাব্বির এমামসহ চারজনকে গ্রেফতার করে র্যাব। সংস্থাটির দাবি, উড়োজাহাজ নিয়ে নাশকতার পরিকল্পনা ছিল ওই বৈমানিকের। এ ঘটনার সঙ্গে আরো কিছু বিষয় বিবেচনায় নিয়ে বিমানবন্দরসংশ্লিষ্ট সবার তথ্য সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

(এএইচএন / ০৮ ডিসেম্বর ২০১৭)