প্রতিবেদক, বিনিয়োগবার্তা, ঢাকা: পরপারে পারি দিয়েছেন ছোটপর্দার অভিনেত্রী তাজিন আহমেদ। মঙ্গলবার বিকেলে উত্তরার একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
মঙ্গলবার দুপুরে হার্ট অ্যাটাক করার পর উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাকে। সেখানে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় বিকেল ৪টা ৩৫ মিনিটে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন তিনি।
তাজিনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে অভিনয় শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব নাসিম বলেন, আমরা ৩টার দিকে খবরটি পেয়েছি তাজিন আহমেদ হার্ট অ্যাটাক করেছেন। যখন তার হার্ট অ্যাটাক হয় তখন বাসায় কেবলমাত্র একজন মেকাপ আর্টিস্ট ছিলেন। উনি তাজিনের সঙ্গেই থাকতেন। তিনিই তাজিনকে উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তার অবস্থা খুবই মুমূর্ষু ছিলো।
নাসিম আরও জানান, তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিলো। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। আমাদের সবাইকে ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন তাজিন। আমরা তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।
তিনি আরও জানান, সন্ধ্যা পর্যন্ত তাজিন আহমেদের মরদেহ উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালেই রাখা হবে। ইফতারের পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে তার মরদেহ কখন, কোথায় জানাজা ও দাফনের ব্যবস্থা করা হবে।
এরই মধ্যে তাজিনের আত্মীয়দের খবর দেয়া হয়েছে। আর প্রিয় সহকর্মীর অসুস্থতার খবর পেয়েই শিল্পীরা ছুটে আসছেন তাজিনকে দেখতে। এই মুহূর্তে হাসপাতলে নাসিম ছাড়াও তাজিনের পাশে রয়েছেন রওনক হাসান, জাকিয়া বারী মম, হুমায়রা হিমু ও আরও অনেকে।
নাসিম বলেন, তাজিন অনেকদিন ধরেই একা বসবাস করে আসছেন। তার সঙ্গে একজন মেকাপ আর্টিস্ট থাকেন। তিনি তাজিনের দেখাশোনা করতেন। তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত ছিলেন এমনটা আগে শুনিনি। হার্ট অ্যাটাকের খবরটি একেবারে হতবাক করে দিয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর করে তাজিন আহমেদ ভোরের কাগজ, প্রথম আলোসহ বিভিন্ন পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেছেন। আনন্দ ভুবন ম্যাগাজিনের কলামিস্টও ছিলেন তিনি। পরে মার্কেন্টাইল ব্যাংকে পাবলিক রিলেশন অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তাজিন ‘নাট্যজন’ নাটকদলের হয়ে মঞ্চে কাজ করেছেন। ২০০০ সালে ‘আরণ্যক’ নাট্যদলে যোগ দিয়ে এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। টিভি নাটকে অভিনয় করে পরবর্তীসময়ে দর্শকের কাছে প্রিয় হয়ে ওঠেন তাজিন আহমেদ। রেডিও এবং টেলিভিশনে উপস্থাপনাও করেছেন। লেখালেখিও করেন তিনি।
তাজিনের লেখা ও পরিচালনায় তৈরি হয় ‘যাতক’ ও ‘যোগফল’ নামে দুটি নাটক। তার লেখা উল্লেখযোগ্য নাটকগুলো হচ্ছে ‘বৃদ্ধাশ্রম’, ‘অনুর একদিন’, ‘এক আকাশের তারা’, ‘হুম’, ‘সম্পর্ক’ ইত্যাদি।
(এমআইআর/ ২২ মে ২০১৮)