Biniyougbarta | বিনিয়োগবার্তা: ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-বিনিয়োগের খবর প্রতিদিন সবসময়
Biniyougbarta | বিনিয়োগবার্তা: ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-বিনিয়োগের খবর প্রতিদিন সবসময়
Thursday, 01 Jan 1970 06:00
Biniyougbarta | বিনিয়োগবার্তা: ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-বিনিয়োগের খবর প্রতিদিন সবসময়

নড়াইল প্রতিনিধি, বিনিয়োগবার্তা: পান চাষের জন্য বেশ সুনাম কুড়াচ্ছে নড়াইল। এ জেলায় ধান, পাট ও রবিশস্যের পাশাপাশি কৃষকরা পানের আবাদ করে আসছেন বেশ আগে থেকেই। কম খরচে লাভ বেশি হওয়ায় দিন দিন বাড়ছে আবাদ। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বর্তমানে এখানে উৎপাদিত পানের প্রায় ৮৫ ভাগ পাঠানো হচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায়।

নড়াইলে সাধারণত মিষ্টি ও সাচি দুই ধরনের পানের চাষ হয়। এ বছর জেলায় ১ হাজার ৭৯৮ একর জমিতে পানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে মিষ্টি পান ৮০ ভাগ। জেলার তিন উপজেলার মধ্যে কালিয়ায় পানের চাষ হয় সব থেকে বেশি, প্রায় পঞ্চাশ ভাগ। সংশ্লিষ্টরা জানান, দশ বছর আগে জেলায় মোট পান আবাদ হতো ৭০০-৮০০ একর জমিতে। বর্তমানে তা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।

সরেজমিন দেখা যায়, কালিয়ার বড়দিয়া, মহাজন, টুনা, খাসিয়াল, বাঅইসোনা, কলাবাড়িয়া, পুরুলিয়াসহ বিভিন্ন গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে পান চাষ হচ্ছে। এছাড়া সদর উপজেলার কুরুলিয়া, রঘুনাথপুর, পোড়াবাদুরিয়া, গোবরা, গোয়ালবাড়ী, বীরগ্রাম ও লোহাগড়ার এড়েন্দা, শারুলিয়া, ধোপাদা, মল্লিকপুর, দিঘলিয়া, রামপুরা, লক্ষ্মীপাশা, ইটনায়ও পান চাষ করছেন কৃষকরা।

পানচাষীরা জানান, ভাদ্র-আশ্বিন মাসে আগাছা পরিষ্কার করে বরজ তৈরির কাজ শুরু হয়। চাষের পর জমিতে দেয়া হয় ফসফেট ও চুন। এরপর রোপণ করা হয় পানের কাণ্ড। বাঁশ, পাটকাঠি, সুপারির পাতা ও সুতা দিয়ে তৈরি করা হয় বরজ। পানের লতা ৪-৫ ইঞ্চি হলে পাশে পাটকাঠি পুঁতে দেয়া হয়। এ পাটকাঠি জড়িয়েই লতা বড় বড় হতে থাকে। পাঁচ-ছয় মাস পর থেকে পান বিক্রির উপযোগী হয়। প্রতিটি বরজ থেকে অন্তত ১৫ বছর টানা পান পাওয়া যায়।

সদর উপজেলার গোয়ালবাড়ী গ্রামের পানচাষী ভবেশ বিশ্বাস জানান, বংশানুক্রমিকভাবে তিনি পান চাষ করছেন। বর্তমানে তার ৭২ শতক জমিতে দুটি বরজ আছে। বরজ তৈরির প্রথম বছরে খরচ একটু বেশি হয়। তবে বর্তমানে প্রতি বছর খরচ বাদে ভালো লাভ হচ্ছে।

জেলার বেশকিছু স্থানে পাইকারি ও খুচরা পান বিক্রি হয়। এর মধ্যে লোহাগড়ার লোহাগড়া বাজার, এড়েন্দা, দিঘলিয়া বাজার, কালীগঞ্জ বাজার, শিয়েরবর হাট, কালিয়ার কালিয়া বাজার, বড়দিয়া বাজার, চাচুড়ি বাজার, চাপাইল বাজার, নড়াগাতি বাজার, সদর উপজেলার বাঁশগ্রাম বাজার, তুলারামপুর হাট, চালিতাতলা বাজার, মাইজপাড়া বাজার, রূপগঞ্জ বাজার অন্যতম।

পান ব্যবসায়ী খোকন দাস ও গোপাল বিশ্বাস জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে পানের ব্যবসা করছেন। নড়াইলের বিভিন্ন হাট থেকে পান কিনে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করেন। এখানকার পান সুস্বাদু হওয়ায় ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ফলে লাভও ভালো হয়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক চিন্ময় রায় বলেন, নড়াইলের মাটি পান চাষের জন্য বেশ উপযুক্ত। এখানে বহু আগে থেকেই পান চাষ করা হচ্ছে। তবে বর্তমানে বিভিন্ন গ্রামের চাষীরা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পান চাষ শুরু করেছেন। প্রতি বছরই জেলায় পানের আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ বিষয়ে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে।

(জেএইচ/এসএএম/ ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৮)