Biniyougbarta | বিনিয়োগবার্তা: ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-বিনিয়োগের খবর প্রতিদিন সবসময়
Biniyougbarta | বিনিয়োগবার্তা: ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-বিনিয়োগের খবর প্রতিদিন সবসময়
Thursday, 01 Jan 1970 06:00
Biniyougbarta | বিনিয়োগবার্তা: ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-বিনিয়োগের খবর প্রতিদিন সবসময়

শামীম-আল-মাসুদ, হেড অব নিউজ, বিনিয়োগবার্তা: খুব শিগগীরই পূর্ণ উৎপাদনে ফিরছে পুঁজিবাজারে তালিকাভূক্ত বিবিধ খাতের কোম্পানি সুহৃদ ইন্ড্রাস্ট্রিজ। তাই এ কোম্পানির বিনিয়োগকারীদের হতাশ না হয়ে ধৈর্য্য ধারণ করতে অনুরোধ জানিয়েছেন কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: জাহিদুল হক।

বিনিয়োগবার্তার সঙ্গে দেওয়া খোলামেলা সাক্ষাৎকারে বিনিয়োগকারীদের প্রতি এ আহ্বান জানান তিনি। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন বিনিয়োগবার্তা’র হেড অব নিউজ শামীম-আল-মাসুদ।

জাহিদুল হক বলেন, আমাদের কোম্পানিটির উৎপাদন অনেক দিন বন্ধ ছিল। এখন আবার চালু করার ব্যবস্থা করেছি। পিভিসি পাইপ তৈরীর মেশিন, বন্ধ রাখলে সমস্যা। নষ্ট বা অকেজো হয়ে যায়। তাই শিগগীর চালু করতেই হবে। চেষ্ঠা করছি ঘুরে দাড়াতে। কিন্তু এখন সমস্যা হলো বিদু‌্য। বিদু‌্যতের সংযোগ পাচ্ছি না। ডিজেল দিয়ে কোম্পানি চালানো অনেক কস্টকর ও অনেক বেশি ব্যয়বহুল। তারপরও চেষ্ঠা চলছে। আশা করি খুব শিগগীরই ঘুরে দাড়াতে পারবো।

কোম্পানিটির মালিকদের মধ্যে দ্বন্ধ সম্পর্কে তিনি বলেন, এ কোম্পানিতে মালিকানা সংক্রান্ত জটিলতা ছিল না। যেটা হয়েছিল সেটা হলো আমাদের একজন পরিচালক কাগজপত্র জালিয়াতি করে কোম্পানি দখল করার অপচেষ্ঠায় লিপ্ত ছিল। কোনো রকমের বোর্ড অনুমোদন বা রুলস- রেগুলেশন ছাড়াই জালিয়াতিতে নেমেছিল। কিন্তু বেশি দূর এগুতে পারেনি। আদালতে গিয়েও টিকতে পারেনি। আদালত আমাদেরকে এজিএম ও ইজিএম করার অনুমোদন দিয়েছেন।

জাহিদুল হক জানান, আমরা আগে বুঝতে পারি নি যে, আমাদের কোম্পানি নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। গত ২০ ডিসেম্বর ২০১৪ সালের এজিএমের দিন বুঝতে পারলাম বিষয়টি। এরপরই এসব জালিয়াতির বিষয়গুলো স্পষ্ট হয়। তারপরই আমরা এসব জালিয়াতির বিরুদ্ধে আদালতের স্বরনাপন্ন হই। ধানমন্ডি থানায় মামলা দায়ের করি। পরে মামলাটি দুদকের কাছে স্থানান্তর করা হয়। মামলা মোকদ্দমা চলার কারণে বেশ কয়েকমাস কোম্পানির উৎপাদনসহ সকল কার্যক্রমে ব্যাঘাত হয়েছিল। মেশিনপত্রে জং ধরে গেছে। এগুলো আবার পরিষ্কার করে ব্যবহার উপযোগি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৩০/৪০ শতাংশ উৎপাদন শুরু হয়েছে। আশা করি শিগগীরই পূর্ণ উৎপাদনে যেতে পারবো।

সূহৃদের এমডি জানান, চীন ও ইটালী থেকে নতুন কিছু পিভিসি পাইপ উৎপাদনের মেশিন আসছে। এগুলো আসলেই আমরা পুরোদমে উৎপাদনে যেতে পারবো। এসব মেশিন দিয়ে পিভিসি কন্টেইনার উৎপাদন করা হবে।

এ কোম্পানিতে ব্যবহৃত ‘র’ মেটারিয়েলস বা কাঁচামাল সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা প্লাস্টিক সিট ক্রয় করি নিজ দেশে থেকে। আর পাউডার বা কেমিক্যাল আনি বিদেশ থেকে। সুইজারল্যান্ড, হংকং, তাইওয়ান, মালয়েশিয়া, জার্মানি থেকে আনা হয় এসব কেমিক্যাল। এছাড়া কোম্পানির সকল শ্রমিকও দেশীয়। উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতও করা হয় দেশের বাজারেই। আগে অনেক শ্রমিক কাজ করলেও বর্তমানে ১৩০ জন কাজ করছে। পর্যায়ক্রমে আরো শ্রমিক বাড়ানো হবে বলেও জানান তিনি।

সুহৃদের উৎপাদিত পণ্যের ক্লায়েন্ট বা কাস্টমার সম্পর্কে তিনি জানান, শুরু থেকেই আমাদের অনেক পারমানেন্ট ক্লায়েন্ট ছিল। দেশের বড় বড় বেসরকারি হাসপাতালগুলো যেমন- এ্যাপোলো, স্কয়ার, ইউনাইটেড, শমরিতার মতো বৃহৎ প্রতিষ্ঠানগুলো ছিল আমাদের ক্লায়েন্ট। অভ্যন্তরিন দ্বন্ধের কারণে অনেক ক্লায়েন্ট ছুটে গেছে। আবার অল্প অল্প পণ্য সরবরাহ করে তাদের চাহিদা ফিলাপ করতে চেষ্ঠা করছি। অনেকে আমাদের পণ্যের জন্য অপেক্ষা করছে। আমরা যখনই পূর্ন উৎপাদনে যাব তখনই আামদের পন্যের সঙ্গে যুক্ত হবেন তারা।

এক প্রশ্নের জবাবে জাহিদুল হক বলেন, আমাদের সকল পণ্যই দেশের চাহিদা মেটানোর জন্য। বিদেশে এ কোম্পানির কোনো পণ্য রপ্তানি হয় না। দীর্ঘদিন এ কোম্পানির উৎপাদন না থাকলেও আমরা শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ দিয়ে আসছি। ইতোমধ্যে অনেকে অন্যত্র চলে গেছেন। এখন আবার উৎপাদনে ফিরছি জেনে তারা পূনরায় যোগাযোগ করতে শুরু করেছে। যাদেরকে ভাল মনে করছি তাদেরকে নিয়োগ দিচ্ছি। সবমিলিয়ে নতুন অর্থ বছরের শুরুতেই পূর্ণ উৎপাদনে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছি আমরা। বাকিটা আল্লাহ তাআলার ইচ্ছা-যোগ করেন তিনি।

(শামীম/ ১৮ জুন ২০১৬)