নরসিংদী প্রতিনিধি, বিনিয়োগবার্তা: নিয়ম বহির্ভুতভাবে নিয়োগ কার্য সম্পন্ন করায় মনোহরদী উপজেলা চেয়ারম্যান ও নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এক নিয়োগ প্রার্থী।
রাসেল তাইজ নামে ওই নিয়োগ প্রার্থী গত ১২ এপ্রিল নরসিংদী জজ কোর্টে উপস্থিত হয়ে মনোহরদী বিজ্ঞ সহকারী জজ আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। যা দেওয়ানী মোকদ্দমা নং-২৮/২০১৭ইং।
মামলার নথিপত্র দেখে মনোহরদী সহকারী জজ আদালতের বিজ্ঞ জজ মো: আব্বাস উদ্দিন ১৩ এপ্রিল মামলার বিবাদী মনোহরদী উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ শহিদ উল্লাহ, কৃষি কর্মকর্তা মাহাবুবুর রশিদ, প্রকৌশলী আবদুস শাকের ও সমাজ সেবা কর্মকর্তা ইমানুর রহমানের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার পরিষদে রাজস্ব খাতে সৃজিত ‘ সাট-মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর’ পদে জনবল নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপন প্রকাশ করে। এই নিয়োগ প্রক্রিয়া চড়ান্ত করার জন্য উপজেলা চেয়ারম্যান, ইএনও, কৃষি কর্মকর্তা, প্রকৌশলী ও সমাজসেবা কর্মকর্তার সম্বনয়ে বাছাই কমিটি গঠন করা হয়। উপজেলা পরিষদের কোন সরকারী কর্মচারী নিয়োগের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী স্থানীয় (যদি থাকে) একটি পত্রিকা এবং কমপক্ষে দু’টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে। যাতে সংশ্লিষ্ট পদে যোগ্যতা, বেতন ও প্রচলিত ভাতাদিসহ প্রকাশ করিয়া বাংলাদেশের নাগরিকদের কাছ থেকে দরখাস্ত আহবান করতে হবে। কিন্তু ২ও ৫ নং বিবাদী হীন স্বার্থসিদ্ধির জন্য গ্রামীণ দর্পন নামক একটি স্থানীয় পত্রিকা ছাড়া কোন জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় প্রাপ্তিদের কাছ থেকে দরখাস্ত আহবান, লিখিত, মৌখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষা সম্পন্ন করেন। ব্যবহারিক পরীক্ষায় কারিগরি কলেজের বিষয় ভিত্তিক একজন অভিজ্ঞ শিক্ষক উপস্থিত রাখার নিয়ম থাকলেও তা রাখা হয়নি বলে মামলা উল্লেখ করা হয়েছে।
বিজ্ঞ বিচারক মো: আব্বাস উদ্দিন মামলার বিষয়টি আমলে নিয়ে বিবাদীদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন।
সমনে বলা হয়েছে, বিবাদীগণ আগামী ৮ মে তাদের পক্ষের আইনজীবি সাথে নিয়ে আদালতে উপস্থিত হয়ে স্বপক্ষে যুক্তি তর্ক উপস্থাপন করতে হবে।
মামলার বাদী মনোহরদী উপজেলার নলুয়া গ্রামের তাইজ উদ্দিনের ছেলে রাসেল তাইজ জানান, ইএনও এবং সমাজসেবা কর্মকর্তা নিজেদের পছন্দের লোক নিয়োগের জন্য শুধু মাত্র একটি স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপনটি প্রকাশ করে। ফলে অনেক যোগ্য প্রার্থীই বিষয়টি জানতে না পেরে নিয়োগ পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়। নিয়োগ পরীক্ষায় প্রার্থীর উপস্থিতি কম হয় এবং অতি সহজে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দেয়ার পায়তার করছেন বিবাদীগণ।
এব্যাপারে মনোহরদী উপজেলা চেয়ারম্যান মো: সাইফুল ইসলাম খান বীরু’র সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, তিনি নিয়োগ বাছাই কমিটি সদস্য নন। তবে উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার তার বিরুদ্ধে এই মামলা। তবে তিনটি পত্রিকার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির কাগজে স্বাক্ষর করেছেন বলে তিনি জানান।
মনোহরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নিয়োগ বাছাই কমিটির আহবায়ক মুহাম্মদ শহিদ উল্লাহ জানান, মামলায় বাদী যেসকল বিষয় উল্লেখ করেছে সেগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। নিয়োগ প্রক্রিয়া যথাযথ ভাবেই সম্পন্ন করা হয়েছে। দু’টি জাতীয় পত্রিকাসহ একটি স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। ব্যবহারিক পরীক্ষায় একজন কারিগরি কলেজের বিষয় ভিত্তিক অভিজ্ঞ শিক্ষকও উপস্থিত রাখা হয়েছে।
উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা ইমানুর রহমান’র সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়াটি বিষয় অবগত আছেন বলে স্বীকার করেন, ইএনও কর্তৃক তিনি বিষয়টি অবগত হয়েছেন। কিন্তু পরবর্তীতে ২ মাসের দাপ্তরিক ট্রেনিং থাকায় তিনি স্টেশন লিভ করেন, এরপর কি হয়েছে তা তিনি জানেন না বলে জানান।
(এসএইচআর/এসএএম/ ১৯ এপ্রিল ২০১৭)