বিনিয়োগবার্তার সম্পাদক

এসএমই প্লাটফর্মের মাধ্যমে আরও সমৃদ্ধ হউক পুঁজিবাজার

দেশের পুঁজিবাজারে ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের কোম্পানিগুলোর তালিকাভূক্তির লক্ষ্যে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে আনুষ্ঠানিকভাবে এসএমই প্লাটফর্ম চালু হয়েছে। সম্প্রতি রিং দ্য বেল বাজিয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) এই প্লাটফর্মের উদ্বোধন করেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান। এদিন এসএমই প্লাটফর্মে প্রাথমিকভাবে মোট ছয়টি কোম্পানির লেনদেন শুরু হয়। নতুন এ প্লাটফর্মের যাত্রা শুরুর মাধ্যমে দেশের পুঁজিবাজার আরও সমৃদ্ধ হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ি, দেশে ক্ষুদ্র ও মাঝারি (এসএমই) খাতে প্রায় ১ লাখ কোম্পানি রয়েছে। এরমধ্যে অধিকাংশই মুনাফা করে আসছে। কিন্তু তাদের আর্থিক হিসাব সঠিকভাবে করা হয় না এবং কোম্পানিগুলো অদক্ষ জনবলের ওপর নির্ভরশীল। যে কারণে এসএমই কোম্পানিগুলোতে অনেক বেশি ব্যয় হয়। এছাড়া এসএমই কোম্পানিগুলোকে মূলধন সংস্থানের জন্য ঋণ নিতে হয়। তবে পুঁজিবাজারে এসএমই প্লাটফর্মের যাত্রার মাধ্যমে ওইসব কোম্পানিগুলো স্টক এবং ডেবট সিকিউরিটিজ ইস্যুর সুযোগ পেল। একইসঙ্গে সুশাসন ও স্বচ্ছতা নিশ্চিতের মাধ্রমে কোম্পানিগুলোকে এখন দায়বদ্ধতার মধ্যে চলে আসতে হবে। এরফলে একদিকে যেমন বিনিয়োগকারীরা লাভবান হবেন, তেমনি জাতীয় অর্থনীতিতেও এ কোম্পানিগুলোর পারফরমেন্স আরও দৃশ্যমান হবে।

এরআগে গত ২৬ এপ্রিল ২০১৮ তারিখে অনুষ্ঠিত ৬৪২তম কমিশন সভায় ‘কোয়ালিফায়েড ইনভেস্টর অফার বাই স্মল ক্যাপিটাল কোম্পানিজ রুলস ২০১৮’ অনুমোদন করে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।  বিধিমালাটির খসড়া অনুমোদনের পর জনমত যাচাইয়ের জন্য তা জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় সবিস্তার প্রকাশ করা হয়। প্রাপ্ত জনমত যাচাই-বাছাই করে কিছু পরিমার্জন ও পরিবর্তন করে তা কমিশন সভায় অনুমোদন হয়। আর একই বছরের ২০ নভেম্বর কমিশনের ৬৬৬তম কমিশন সভায় এই বিধিমালার চুড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়। এরকিছুদিন পরই বাংলাদেশ গেজেটে চূড়ান্ত বিধিমালাটি প্রকাশ করা হয়।

বিধিমালা অনুযায়ী, ন্যূনতম ৫ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধন রয়েছে; এমন কোম্পানিকে স্বল্প মূলধনি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব কোম্পানির তালিকাভুক্তি ও লেনদেনের জন্য গঠিত আলাদা প্লাটফর্মের নামকরণ করা হয়েছে ‘স্মল ক্যাপিটাল প্লাটফর্ম’।

এ প্লাটফর্মে তালিকাভুক্তির পর কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন সর্বনিম্ন ১০ কোটি টাকা হতে হবে। কোনো অবস্থায় তালিকাভুক্তির পর কোনো কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৩০ কোটি টাকার বেশি হতে পারবে না। বেশি হলে তাকে মুল ট্রেডিং প্লাটফর্মে চলে যেতে হবে। অর্থাৎ সে কোম্পানিকে স্মল ক্যাপিটাল প্লাটফর্ম থেকে বের হয়ে যেতে হবে।

স্বল্প মূলধনি কোম্পানিগুলো শুধু ‘কোয়ালিফাইড ইনভেস্টরস অফার’ বা কিউআইও-এর মাধ্যমে এই বাজারে তালিকাভুক্ত হতে পারবে। এ ধরনের কোম্পানিতে বিনিয়েগের ঝুঁকি থাকায় শুধু নির্দিষ্ট শ্রেণীর বিনিয়োগকারীদের জন্যই এই স্বল্প মূলধনি কোম্পানির শেয়ার কেনাবেচার সুযোগ রাখা হয়েছে। শুধু যোগ্য বিনিয়োগকারীরা এসব কোম্পানির লেনদেন করতে পারবেন। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা এই প্লাটফর্মে কেনা বেচা করতে পারবেন না।

এদিকে ২০১৯ সালের ৩০ এপ্রিল ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে পুঁজিবাজার থেকে মূলধন সংগ্রহের সুযোগ করে দিতে এসএমই প্লাটফর্ম চালু করে ডিএসই। সে সময় ডিএসইর এসএমই প্লাটফর্ম উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ প্লাটফর্ম উদ্বোধনের আড়াই বছর পর সম্প্রতি আনুষ্ঠানিক লেনদেন শুরু হয়েছে।

বিনিয়োগবার্তা/এসএএম//


Comment As:

Comment (0)