undefined

বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীর মাস: মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধুর কারাবাস ও মুক্তির প্রসঙ্গ

ড. মিহির কুমার রায়: শুরু হলো বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীর মাস ডিসেম্বর, যা মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত ১৯৭১ সালে ত্রিশ লাখ মানুষের জীবন আত্মদানের মধ্য দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে। এ বছর ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির পর এবার বাংলাদেশ উদযাপন করছে বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী ও একই সঙ্গে মুজিব শতবার্ষিকী। ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী সামনে রেখে ‘রূপকল্প ২০২১’ ঘোষণা করা হয়েছিল, যেখানে ২০২১ সালের মধ্যেই বাংলাদেশকে একটি উন্নয়নশীল দেশে রুপান্তরের কথা ব্যক্ত করা হয়েছিল, যা এর মধ্যেই পূরনের ঘোষনা এসেছে জাতিসংঘ সদর দফতর থেকে। বাংলাদেশের ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ ঘটনা হলো ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ যা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের মধ্যে এ মাসেই। তাই ডিসেম্বর মাসটি একদিকে বিজয়ের অপরদিকে বেদনার, বিশেষ করে যারা মুক্তিযুদ্ধে তাদের স্বজনদেরকে হারিয়েছেন সেই সকল শহীদ পরিবারগুলো।

ইতিহাস বলছে ১৯৭১ এ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলেও তার সূচনালগ্নটা ছিল অনেক আগেই, যার সাথে জড়িয়ে আছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম, যার জন্ম হয়েছিল ১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় এবং শৈশব থেকেই তিনি ছিলেন অত্যন্ত মানব দরদী যার প্রমান পাওয়া যায় মাত্র ১৪ বছর বয়সেই বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহনের ও গরীব ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে  মুসলিম সেবা সমিতি গঠনের মাধ্যমে। তারপর কলকাতার গভর্নমেন্ট বেকার হোস্টেলেই অতিবাহিত হয়েছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছাত্রজীবনের অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বছর, যা ১৯৪৫ থেকে ১৯৪৬ সময় পর্যন্ত। আজকের মৌলানা আজাদ কলেজের নাম ছিল তখন ইসলামিয়া কলেজ। এখানেই পড়তেন শেখ মুজিবুর রহমান। আইএ থেকে বিএ পর্যন্ত। ১৯৪৬ সালে সাধারণ সম্পাদকও হয়েছিলেন কলেজের ছাত্র সংসদের এবং থাকতেন অদূরেই বেকার হোস্টেলে। তিন তলার দক্ষিণ-পূর্ব কোণের ২৪ নম্বর সেই ঘর আজও সাজানো পরিপাটি করে। তাঁর ব্যবহৃত শয্যা, চেয়ার-টেবিল দেখলে কে বলবে, মাঝে অতিক্রান্ত হয়ে গেছে অনেকগুলো বছর? মনে হতে পারে, এই তো মাত্র কিছুদিন আগেও বঙ্গবন্ধু ছিলেন এই ঘরেই। সেই স্মৃতি আজও বুকে আঁকড়ে আছে ‘বঙ্গবন্ধু স্মৃতিকক্ষ’।

১৯৪৭ সালে পাকিস্তান জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই কলকাতার সিরাজউদ্দৌলা হোটেলে পূর্ব পাকিস্তানের পরবর্তী কর্তব্য নির্ধারণে সমবেত হয়েছিলেন কিছুসংখ্যক রাজনৈতিক কর্মী। সেখানে পাকিস্তানে একটি অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক আন্দোলন ও সংগঠন করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়। সে প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৪৭ সালের ৬ ও ৭ সেপ্টেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত পূর্ব পাকিস্তানের কর্মী সম্মেলনে গণতান্ত্রিক যুবলীগ গঠিত হয়। উক্ত সম্মেলনে ভাষা বিষয়ক কিছু প্রস্তাব গৃহীত হয়। সম্মেলনের কমিটিতে গৃহীত প্রস্তাবগুলো পাঠ করলেন সেদিনের ছাত্রনেতা শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি ১৯৪৭ সালে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে বাংলা ভাষার দাবির স্বপক্ষে স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযানে অংশগ্রহণ করেন এবং বিভিন্ন মিটিং মিছিলে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৪৭ সালের ৫ ডিসেম্বর খাজা নাজিমুদ্দিনের বাসভবনে মুসলিম লীগ ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে চলাকালে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে অনুষ্ঠিত মিছিলে অংশগ্রহণ করেন এবং নেতৃত্বদান করেন। ১৫০ নং মোগলটুলীর ‘ওয়ার্কার্স ক্যাম্প’ ছিল সে সময়ের প্রগতিশীল ছাত্র-যুবক ও রাজনৈতিক কর্মীদের মিলনকেন্দ্র। ওয়ার্কার্স ক্যাম্পের কর্মীরা বাংলা ভাষাসহ পাকিস্তানের অন্যান্য বৈষম্যমূলক দিকগুলো জাতির সামনে তুলে ধরেন। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি গঠিত হয় পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ। ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে এই সংগঠনটির ভূমিকা খুবই স্মরণীয়। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত ছাত্রলীগের ১০ দফা দাবির মধ্যে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা বাংলা করার ও সামরিক বাহিনীতে বাঙালীদের নিয়োগ এবং বাধ্যতামূলক সামরিক শিক্ষার দাবি ছিল অন্যতম দাবি। ১১ মার্চের - ১৯৪৮ সালে গ্রেফতার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবনের এক টার্নিং পয়েন্ট। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে ঐতিহাসিক ১১ মার্চের গুরুত্ব এবং গ্রেফতার প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি নয়, মূলত শুরু হয়েছিল ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ  ছাত্রলীগের নেতৃত্বে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা পরিষদ গঠনের মাধ্যমে। আওয়ামী লীগ সংগঠনটির জন্ম হয়েছিল ১৯৪৯ সালের ঢাকার ‘‘রোজ গার্ডেনে’, গোলাপবাগে তখন শেখ মুজিব ছিলেন কারা অন্তরালে বন্দী। মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ যাত্রা শুরু করে আওয়ামী-মুসলিম লীগ নামে। শেখ মুজিবকে দলটির এক নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের ছাত্রসমাজ ও আপামর জনসাধারণ যখন ভাষার জন্য লড়াই করছে তখন এর পেছন থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিল আওয়ামী মুসলিম লীগ। দলের সাধারণ সম্পাদকের মানসিক ও শারীরিক অসুস্থ্যতার কারণে শেখ মুজিবকে দলটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব প্রদান করা হয়। উল্লেখ্য, শেখ মুজিব এ সময় একনাগারে দুই বছর তিন মাস (সেপ্টেম্বর ১৯৪৯ থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২) কারাভোগ করেন। দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ১৯৫৩ সালের তিন জুলাই মওলানা ভাসানীর সভাপতিত্বে পুরান ঢাকার মুকুল সিনেমা হলে দলের সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করেন। রিপোর্ট পেশকালে তিনি প্রচ্ছন্নভাবে ইঙ্গিত করেন যে, তিনি ব্যক্তিগত ভাবে অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির পক্ষে, পরবর্তীতে মওলানা ভাসানীও একই অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছিলেন। আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে দলটি আওয়ামী লীগ হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পর্যন্ত যত ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে, তার প্রতিটির মুখ্য চরিত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের সাধারণ নির্বাচন, ১৯৬২ সালে শিক্ষা সংকোচন নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলন, ১৯৬৮ সালের আগরতলা মামলা, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭০ সালের নির্বাচন, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা ইত্যাদি। একি আগের  দিনে ২৫ শে মার্চ রাতে পাকিস্থানের সামরিক শাসক নিরস্ত্র জনতার উপর আক্রমন শুরু করে এবং বাঙ্গালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে। এর পরপরি তাকে বিমানযোগে পশ্চিম পাকিস্থানের ফয়সালাবাদ জেলে আটক রাখা হয়। তার পর ১৯৭১ সালের আগষ্ট মাসে পাকিস্থানের প্রেসিডেন্ট এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেন দেশের আইন অনুযায়ী শেখ মুজিবের বিচার করা হবে। ৫ই আগষ্ট, ১৯৭১ সালে পাকিস্থানের সরকার আওয়ামী লীগের স্বাধীনতা লাভের ষরযন্ত্রের অভিযোগ আনেন। এই বিষয়কে কেন্দ্র করে ভারত - বাংলাদেশ মৈত্রী সমিতির নেতৃবৃন্দ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তি, বাংলাদেশকে স্বীকৃতি, মুক্তিযুদ্ধের সর্বাত্বক সমর্থনের দাবি জানানো হয়। নিউইয়র্কে সেফ বাংলাদেশ কমিটির উদ্যোগে জুন ১৪, ১৯৭১ জাতিসংঘের সদর দফতরের সামনে আয়োজিত সমাবেশে, ভারতের সর্বোদয় নেতা জয়প্রকাশ নারায়ণ বলেছিলেন পাকিস্থানকে সব ধরনের সাহায্য বন্ধের পাশাপাশি বিশ্বের উচিত  পাকিস্থানের সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ করা যাতে সংঘাত বন্ধ করে রাজনৈতিক সমাধানের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ সকল রাজবন্দীদের মুক্তি দেয়া হয়। ভারতীয় তৎকালীন পত্রিকাগুলো তাদের সম্পাদকীয় প্রবন্ধে বিচারের নামে প্রহসন ও হত্যার ষরযন্ত্র বন্ধের আহ্বান জানানো হয়। তারপর ১১ই আগষ্ট, ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিচার শুরু হলো এবং এ ব্যাপারে আমেরিকার সরকার উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং তাদের মতে এই বিচার পূর্ব বাংলার সমস্যার একটি রাজনৈতিক সমাধান নষ্ট করে দেবে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের উপমন্ত্রী ২ রা জুন, ১৯৭১ ভারতীয় লোক সভায় বলেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তি ও তার পরিবারের নিরাপত্তার জন্য ভারত সরকার বন্ধুভাবাপন্ন বিদেশী সরকারগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। ভারতের লোকসভা ও রাজ্যসভায় মুজিবের মুক্তি/বিচার সংক্রান্ত বিতর্ক এর পাশাপাশি লোকসভার বিবৃতির বাইরেও বক্তব্য পরিলক্ষিত হয় যাতে বলা হয় বাংলাদেশের রাজনৈতিক সমাধান প্রয়োজন। তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি গান্ধী  পাকিস্থান সরকারকে বলেছিলেন বাংলাদেশে রাজনৈতিক সমাধানে আসুন এবং শেখ মুজিবকে মুক্তির ব্যবস্থা করুন। এই বিশ্লেষন থেকে এটাই প্রতিয়মান হয় যে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে মুজিবের মুক্তির বিষয়টিকে কেন্দ্র করে ভারতবর্ষে যে অভিঘাত তৈরী হয়েছিল তা ছিল সূদূর প্রসারী।

বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে মুজিবনগর সরকার সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও তাজউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে দীর্ঘ নয় মাস মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করে। লাখ লাখ মানুষের আত্মদান দুই লক্ষাধিক মা-বোনের সম্ভ্রম এবং সর্বোপরি কোটি কোটি মানুষের আত্মত্যাগের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাঙালীরা লাভ করে এক স্বাধীন সার্বভৌম ভূখণ্ড - বাংলাদেশ। ১০ জানুয়ারি তিনি স্বজন হারানোর বেদনা নিয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করলে আমাদের স্বাধীনতা পূর্ণতা পায়। ১২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণ করে দেশে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন দেশ স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধু শূন্য হাতে যাত্রা শুরু করেন। সবকিছু ধ্বংসপ্রাপ্ত। স্বল্প সময়ে তিনি যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনঃস্থাপন করেন। বঙ্গবন্ধুর একক প্রচেষ্টায় ভারতীয় সেনাবাহিনী ৭২ - এর ১২ মার্চ বাংলাদেশ ত্যাগ করে। ৭২-এর ৭-৮ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে বঙ্গবন্ধু আবার সভাপতি ও জিল্লুর রহমান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এ সম্মেলনে আমি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সর্বকনিষ্ঠ সদস্য নির্বাচিত হই।

প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পর মাত্র ১০ মাসের মধ্যে ’৭২-এর ৪ নভেম্বর বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংবিধান প্রণয়ন করেন। ’৭৩-এর ৭ মার্চ জাতীয় সংসদের সফল নির্বাচন সম্পন্ন করে বিপুল জনসমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করেন। বাংলাদেশ বিশ্বের ১১৬টি দেশের স্বীকৃতি এবং ‘কমনওয়েলথ অব নেশনস্’, ‘জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন’, ‘ইসলামিক সম্মেলন সংস্থা’ ও ‘জাতিসংঘ’সহ বহু আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্যপদ লাভ করে। ’৭৪-এর ১৮, ১৯ ও ২০ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে দলীয় গঠনতন্ত্রের বিধান অনুযায়ী বঙ্গবন্ধু সভাপতির পদ ত্যাগ করেন, তদস্থলে নির্বাচিত হন জাতীয় নেতা এএইচএম কামারুজ্জামান। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ গড়ার জন্য বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে তিন বছর সময় পেয়েছেন। যে মুহূর্তে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে স্বাভাবিক করেন, অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি দেন, ঠিক তখনই ঘাতকের নির্মম বুলেটে একাত্তরের পরাজিত শক্তি বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করে। তার  দুই কন্যা দেশের বাহিরে থাকায় প্রাণে বেঁচে এবং ছয় বছর পর নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব গ্রহন করেন যিনি আজ দেশের একজন সফল প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেশে বিদেশে সন্মানীত। আজ বিজয়ের মাসে পেছন ফিরে তাকালে আমাদের স্বস্তির অনেক কারণ পাওয়া যায়। এ ৫০ বছরে দেশের অর্জন অনেক। বাংলাদেশ এখন বিশ্ব দরবারে সম্মানজনক রাষ্ট্র হিসাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা নিয়ে।

লেখক: গবেষক ও অর্থনীতিবিদ


Comment As:

Comment (0)