মিহির স্যার

মুদ্রানীতি বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয়

ড: মিহির কুমার রায়: এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)  এর ‘মনিটারি পলিসি ট্রান্সমিশন ম্যাকানিজম অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলছে, দেশের মুদ্রাবাজার বা ব্যাংক খাতে মুদ্রানীতির উপকরণগুলো ক্রমেই গুরুত্ব হারাচ্ছে। এ ব্যাপারে এডিবি এর পর্যবেক্ষণ হলো, বাংলাদেশে মুদ্রার সঞ্চালনে গৃহীত নীতিগুলো সঠিকভাবে কাজ করছে না, যেখানে মুদ্রানীতির উপাদানগুলোর বাস্তবিক তাত্ত্বিক বর্ণনা থেকে অনেকটাই ভিন্ন। কারন দেশে রিজার্ভ মুদ্রা বৃদ্ধি বা রেপো রেট (নীতি সুদহার) হ্রাস করা হলেও ব্যাপক অর্থ সরবরাহ বৃদ্ধি পাচ্ছে না যা মুদ্রাস্ফীতিতেও এর প্রত্যক্ষ প্রভাব নেই। বিষয়টি মুদ্রাতত্ত্বে বর্ণিত মুদ্রার প্রবাহ সহজীকরণ পদক্ষেপের প্রভাবের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। এডিবি বলছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি সুদহার কমালেও দেশের মূল্যস্ফীতি বাড়ছে না। আবার ব্যাপক মুদ্রার বড় পরিবর্তন এলেও সেটি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ব্যালান্সশিটে পরিবর্তন ঘটাতে পারছে না। আবার, সরকারের সঞ্চয়পত্র মুদ্রানীতির উপকরণ না হলেও অর্থনীতিতে এর কার্যকর প্রভাব দৃশ্যমান।

অতীতের কয়েকটি গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে এডিবি বলছে, উন্নয়নশীল দেশগুলোয় মুদ্রানীতির সঞ্চালন ব্যবস্থা তুলনামূলক দুর্বল। তবে বাংলাদেশে মুদ্রার সঞ্চালনে গৃহীত নীতিগুলো সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা তা বলা দুস্কর। এর একটি কারণ হতে পারে দেশে প্রচলিত ব্যাংকিং পদ্ধতিগুলোর ভিন্নতা। উদাহরণস্বরূপ, রিজার্ভ মুদ্রায় পরিবর্তন এলে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ব্যালান্সশিটে পর্যাপ্ত মাত্রায় প্রভাব নাও ফেলতে পারে। আবার বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণ প্রবণতায় রেপো রেটে পরিবর্তনের তেমন কোনো প্রভাব নাও দেখা যেতে পারে। এক্ষেত্রে হয়তো দেশের ব্যাংক খাতের উল্লেখযোগ্য অংশ জুড়ে থাকা ইসলামিক ব্যাংকিং পদ্ধতিটাই পার্থক্য তৈরি করে দিচ্ছে। এছাড়া তুলনামূলক ক্ষুদ্রায়তনের আর্থিক বাজার ও অনুন্নত অ্যাসেট মার্কেটের কারণেও হতে পারে। অর্থনীতিতে আর্থিক বাজারের আয়তন বড় না হলে বা অ্যাসেট মার্কেটের মান ভালো না হলে মুদ্রানীতির সঠিকভাবে কাজ করাটা কঠিন হয়ে পড়ে।

গত কয়েক বছরে সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে জনগণের কাছ থেকে বড় অংকের অর্থ সংগ্রহ করেছে সরকার। বিষয়টি আর্থিক নীতি ও ঋণ ব্যবস্থাপনাকে জটিল করে তুলেছে বলে অভিযোগও উঠেছে। এ বিষয়ে এডিবি মনে করছে, শুধু রাজস্ব নীতি নয়, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদহার প্রভাবিত করার ক্ষমতাকে সীমিত করে আনে সঞ্চয়পত্রের ব্যাপক ব্যবহার। এজন্য সঞ্চয়পত্র ইস্যু করার ক্ষেত্রে আরো সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।

সংস্থাটির বক্তব্য অনুযায়ী, মুদ্রা ব্যবস্থায় মুদ্রানীতির উপাদানগুলোর উল্লেখযোগ্য প্রভাব দেখা যাচ্ছে না। আবার, অর্থনীতিতে সরকারি সঞ্চয়পত্র এমনভাবে প্রভাব ফেলছে, যাতে মনে হতে পারে এটি মুদ্রানীতিরই একটি উপাদান। মুদ্রা ব্যবস্থায় সঞ্চয়পত্রকে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলার ক্ষেত্রে সরকারের বড় ভূমিকা রয়েছে। সরকারের ঋণ গ্রহণে সঞ্চয়পত্রের ব্যবহার মুদ্রা সঞ্চালন নীতির কার্যকারিতাকে দুর্বল করে ফেলছে। অন্যদিকে এমটু ও মূল্যস্ফীতির ওপর সঞ্চয়পত্রের তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব আছে।

দেশের ঋণ বাজারকে আরো শক্তিশালী করে তোলার জন্য বন্ড মার্কেটকে আরো সক্রিয় করে তোলার পরামর্শ দিয়ে সংস্থাটি বলছে, ভালোভাবে সক্রিয় হলে বন্ড মার্কেট দেশের পেনশন ব্যবস্থার উন্নয়নেও সহায়ক হবে। এছাড়া পেনশন তহবিলের মতো প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ঋণের প্রয়োজন পড়ে, যা ঋণ বাজারের বিকাশে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মুদ্রানীতির বাজারভিত্তিক উপাদানকে কাজে লাগানোর পাশাপাশি নিয়মতান্ত্রিক সুদহারকেন্দ্রিক নীতি গ্রহণের মাধ্যমে মুদ্রা সঞ্চালন নীতির উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব বলে মনে করছে এডিবি। সংস্থাটির ভাষ্যমতে, বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতির বর্তমান চর্চা মূলত অর্থ সরবরাহকেন্দ্রিক। সুদহারকেন্দ্রিক মুদ্রানীতির দিকে এগিয়ে যেতে হলে বাজারে বিদ্যমান তারল্যের ওপর নজরদারি ও এর সম্ভাব্য পরিবর্তনগুলোর সম্পর্কে পূর্বাভাস তৈরি এবং কার্যকর মুদ্রাবাজার গড়ে তোলা জরুরি। এর পাশাপাশি উন্নত পুঁজিবাজার গড়ে তোলা গেলে তা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে পারবে।

এ ব্যাপারে ব্যাংকারদের ভাষ্য হলো, বাংলাদেশের মুদ্রাবাজার থেকে শুরু করে পণ্যবাজার পর্যন্ত কিছু ম্যাকানিজম কাজ করে। সরকার সবকিছু এখানে উন্মুক্ত করে দেয় না। বাস্তবতার নিরিখে বাংলাদেশের মতো বাজারে এটির দরকারও আছে। ইউরোপের শক্তিশালী কোনো দেশের মুদ্রানীতি দিয়ে বাংলাদেশের মুদ্রানীতির তুলনা করলে প্রকৃত চিত্র পাওয়া সম্ভব হবে না। এ ব্যাপারে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসাবে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে এডিবি এর মূল্যায়নের যৌক্তিক কোন ভিত্তি নেই। কারন বাজারে তারল্য সরবরাহ বাড়াতে- কমাতে  মুদ্রানীতি কার্যকর রয়েছে তার ইনস্ট্রুমেন্ট ব্যবহার করে। আবার অনেক ব্যাংকার বলছে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতির লক্ষ্যমাত্রাগুলো বাস্তবতার নিরিখে পুনর্বিবেচনা করা হয় না। এ কারণে মুদ্রানীতির অনেক লক্ষ্যমাত্রাই বছর শেষে অধরা থেকে যায়। অন্যদিকে দেশের অর্থনীতির মাত্রা ৪০ শতাংশ ব্যাংক খাতের আওতায় এসেছে। এ কারণে নীতি সুদহারের বড় কোনো প্রভাব সামগ্রিক অর্থনীতিতে পড়ে না। বিশেষ করে ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থাগুলোর কার্যক্রমে নীতি সুদহার কমানোর কোনো প্রভাব নেই বললেই চলে। উন্মুক্ত অর্থনীতির এ যুগে পণ্যের মূল্য বাজার ব্যবস্থাই ঠিক করে। সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে দেশের ব্যাংক খাতের ঋণ ও আমানতের সুদহার যথাক্রমে ৯-৬ শতাংশে বেঁধে দেয়া হয়েছে। এ অবস্থায় ব্যাংক খাতের ওপর  মুদ্রানীতির উপকরণগুলোর কোনো প্রভাব অবশিষ্ট থাকার কথা নয়। ব্যাংকগুলোর সামর্থ্য ও বাজার পরিস্থিতির পর্যালোচনা করে মুদ্রানীতির লক্ষ্যগুলো নির্ধারণ করা প্রয়োজন।

একটি নিরপেক্ষ বিশ্লেষনে দেখা যায় জাতীয় বাজেটে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে সরকার। আর প্রবৃদ্ধির সে লক্ষ্যকে সহজতর ও ত্বরান্বিত করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অন্যতম প্রধান অস্ত্র হলো মুদ্রানীতি। রেপো, রিভার্স রেপোসহ মুদ্রানীতির প্রধান উপকরণগুলোর সার্থক প্রয়োগের মাধ্যমে মুদ্রাবাজারের গতিপথ নিয়ন্ত্রণ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরি ধারাবাহিকতায় চলতি অর্থ বছর (২০২১-২২) এর জন্য মুদ্রানীতি ঘোষনা করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক যার মূল লক্ষ্য ছিলো চলমান মহামারীর কারনে ক্ষতিগ্রস্থ অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার করা এবং সরকার নির্ধারিত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি (জিডিপি) এবং মুদ্যাস্ফীতিকে সামনে রেখে আর্থিক খাতের সার্বিক ব্যবস্থাপনা নির্ধারন করা বিদ্যমান করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে কাঙ্খিত গতি সঞ্চারের উদ্দেশ্য বর্তমানে একটি সম্প্রসারণমূলক ও সংকুলানমুখী মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের একটি সফল উদ্যোগ। কিন্তু বিগত দুই বছর যাবৎ করোনার প্রভাবে মানুষের হাতে নগদ অর্থ ধরে রাখার প্রবণতা বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে অর্থের আয় গতি  নিম্নমুখী থাকার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ২০২১-২২ অর্থবছরে ব্যাপক অর্থ সরবরাহ বৃদ্ধির বার্ষিক নিরাপদ সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫.০ শতাংশ। ব্যাপক মুদ্রা সরবরাহের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি নিরাপদ সীমার মধ্যে রাখার নিমিত্তে মোট অভ্যন্তরীণ ঋণের প্রবৃদ্ধি নির্ধারণ করা হয়েছে ১৭.৮ শতাংশ; যার মধ্যে সরকারের চাহিদা অনুযায়ী ব্যাংক ব্যবস্থা হতে নীট ৭৬৫ বিলিয়ন টাকা বা ৩৬.৬ শতাংশ ঋণ বৃদ্ধির পাশাপাশি বেসরকারি খাতের জন্য নীট ১৭৬০ বিলিয়ন টাকা বা বার্ষিক ১৪.৮ শতাংশ ঋণ বৃদ্ধির সংকুলান রাখা হয়েছে। ফলে ব্যাংকিং খাতে নীট অভ্যন্তরীণ সম্পদ ও নীট বৈদেশিক সম্পদের প্রবৃদ্ধি যথাক্রমে ১৬.৫ শতাংশ ও ১০.৪ শতাংশ হবে বলে প্রক্ষেপিত হয়েছে। উচ্চ ভিত্তির পাশাপাশি সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বাজারে তেলসহ অধিকাংশ পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে লেনদেন ভারসাম্যের পূর্বাভাস অনুযায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরে নীট বৈদেশিক সম্পদের প্রবৃদ্ধি গত অর্থবছরের তুলনায় অনেকটা কম হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, ২০২১-২২ অর্থবছরে রপ্তানি আয়, আমদানি ব্যয় ও রেমিটেন্স অন্তঃপ্রবাহের প্রবৃদ্ধি যথাক্রমে ১৩.০, ১৩.৫ ও ২০.০ শতাংশ হবে বলে প্রক্ষেপণ করা হয়েছে। এর ফলে, চলতি হিসাবে ২৫৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঘাটতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও আর্থিক হিসাবে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ উদ্বৃত্তের সূত্রে সার্বিক লেনদেন ভারসাম্যে উদ্বৃত্ত ৫১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার হওয়ার পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৫২,০০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হবে বলে প্রক্ষেপণ করা হয়েছে, যা বর্তমান চাহিদা অনুযায়ী দেশের ৭.১ মাসের আমদানি ব্যয় মিটাতে সক্ষম।

সার্বিক মূল্যায়নে দেখা যায় যে, চলতি অর্থবছরের মুদ্রানীতি কম-বেশি সম্প্রসারণমূলক, সংকুলানমুখী তবে গতানুগতিক ধারার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। এখানে উল্লেখ্য যে, ২০২২ সাল নাগাদ সরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ প্রাক্কলন করা হয়েছে ৩২.৬ শতাংশ এবং একই সঙ্গে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ ধরা হয়েছে ১৪.৮ শতাংশ। কিন্তু করোনার কারণে আশানুরূপ বিনিয়োগ হচ্ছে না বিধায় ঋণপ্রবাহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়াতে পারে যার জন্য সামগ্রিক অর্থনীতি এবং বেসরকারি খাত ঘুরে দাঁড়াতে না পারলে ঋণপ্রবাহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত সম্ভব হবে না এসসিএমএসএমই খাতকে পুনরুজ্জীবিত করতে আর্থিক প্রণোদনাসহ অনেক ধরনের নীতিসহায়তা দেয়া হয়েছে সত্যি কিন্তু ঘোষিত মুদ্রানীতিতে প্রদত্ত সুবিধাদি কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তেমন দিকনির্দেশনা দেয়া হয়নি। অথচ এ ঘোষিত মুদ্রানীতিটি কিছুটা গতানুগতিক ও ধারাবাহিক। এ নীতিতে বেসরকারি খাতকে উজ্জীবিত করতে উদ্ভাবনী কোনো পদক্ষেপ লক্ষ করা যায়নি। তবে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন, ব্যাংক ও নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যকার সমন্বয় এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে নজরদারি এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করছে  অর্থনীতিবিদগন। বাংলাদেশ ব্যাংক আগে প্রতি ৬ মাসের আগাম মুদ্রানীতি ঘোষণা করলেও গত অর্থবছর থেকে তা এক বছরের জন্য করা হচ্ছে। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতিতে পুজি বাজারের তারল্য বৃদ্ধির মাধ্যমে গতিশীল করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক উদ্যোগ গ্রহন করেছে যার মধ্যে রয়েছে পুঁজি বাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ সীমা  শিথিল করা, বর্তমানে বিনিয়োগ সীমার বাহিরে পুঁজি বাজারের বিনিয়োগের জন্য  ব্যাংক প্রতি ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন, ব্যাংকের জন্য নূতন লভ্যাংশ বিতরন নীতিমালা (লভ্যাংশ ৩০ শতাংশের মধ্যে ১৫ শতাংশ নগদে প্রদান) ও দীর্ঘমেয়াদী রেপো ও অন্যান্ন তারল্য বৃদ্ধির নীতিমালা গ্রহনের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোকে তহবিল পরিচালনার কাজটি সহজ করা  যাতে এর মাধ্যমে পুঁজিবাজারে  বিনিয়োগ আকর্ষন বৃদ্ধি পাবে পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোর সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে আইনের অনুশাসন পরিপালনে নজরদারির সঙ্গে সঙ্গে এ বাজারের কার্যক্রমে মুদ্রানীতি প্রোগ্রামের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ মাত্রায় তারল্য যোগান বজায় রাখা হয়েছে। পুঁজিবাজারের সমর্থনে বিশেষ পুন:অর্থায়ন কার্যক্রম বাংলাদেশ ব্যাংক অব্যাহত রেখেছে। আগামী দিনগুলোতেও বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়মনীতির মধ্যে থেকে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। পুঁজিবাজার ও বীমা খাত নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষগুলোর সাথে বাংলাদেশ ব্যাংক ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে নীতি সমন্বয় সভায় নিয়মিত অংশগ্রহণ করছে। পুঁজিবাজারে শেয়ার ইস্যু না হওয়া কোম্পানীগুলোতে বিদেশী প্রাইভেট ইক্যুইটি দেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে বিক্রির জন্যে মূল্যায়নে নীট এ্যাসেট ভ্যালুর পরিবর্তে বাস্তবসম্মত বাজারভিত্তিক মূল্যায়ন গ্রহণীয় হবে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক এরই মধ্যে নির্দেশনা জারি করেছে।

লেখক: গবেষক, অর্থনীতিবিদ, ডিন ও সিন্ডিকেট সদস্য, সিটি ইউনিভার্সিটি, ঢাকা।


Comment As:

Comment (0)