JMI Hospital

জেএমআই হসপিটালের বিডিং তদন্ত করবে ডিএসই

নিজস্ব প্রতিবেদক: জেএমআই হসপিটাল রিক্যুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেডের বিডিং (নিলাম) তদন্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। কোম্পানিটির বিডিংয়ে কোনো দুর্বলতা ছিল কি না এবং আইনের কোনো লঙ্ঘন হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।

ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, ডিএসই পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে এ বিষয়ে তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ থেকে ব্যবস্থাপনা পর্ষদকে বিষয়টি তদন্ত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ডিএসই থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং জাতীয় দৈনিকে বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে জেএমআই হসপিটাল রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির নির্ধারিত শেয়ারের নিলাম নিয়ে খবর প্রকাশিত হয়েছে৷ প্রকাশিত প্রতিবেদন ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদের দৃষ্টিগোচরে এসেছে।

ডিএসই’র পরিচালনা পর্ষদ তাৎক্ষণিকভাবে প্রকাশিত প্রতিবেদনের বিষয়ে খতিয়ে দেখার জন্য ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ দ্রুততার সঙ্গে আইন-কানুন এবং ইএসএস সফটওয়্যারের কার্যক্রমের বিষয়ে পর্যালোচনা করেন।

পর্যালোচনায় কয়েকটি বিষয় পরিলক্ষিত হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়, বর্তমান বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে বিডিং -এ সর্বোচ্চ মূল্য কত হবে তা বিডিং এর পূর্বেই নির্ধারণ করা যায়। বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে কাট অব প্রাইসে যদি যোগ্য বিনিয়োগকারীদের জন্য বরাদ্দ করা কোটার তুলনায় আবেদন বেশি হয় তাহলে টাইম স্টাম্পিংয়ের মাধ্যমে বরাদ্দ দেয়া হয়। শেয়ার বরাদ্দ পাওয়ার জন্য বিনিয়োগকারীদের মাঝে আগে বিড করার প্রবণতা দেখা যায়। যখন বিড করা হয় তখন বিডিং সম্পর্কিত কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। বিডিং শেষ হওয়ার পর ব্যাংক রিকনসিলেশন পাওয়ার পরে কাট অব প্রাইস ডিসকভারি করার সময় বিডিং সম্পর্কিত তথ্য পাওয়া যায়।

‘ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ প্রত্যকটা বিডিং ইলেক্ট্রনিক সাবস্ক্রিপশন সিস্টেম (ইএসএস)-এর মাধ্যমে অত্যন্ত সতর্কতা ও স্বচ্ছতার সাথে পরিচালনা করে থাকে৷ এই সফটওয়্যার চালুর পর ডিএসই ৬৭টি কোম্পানির বিডিং প্রক্রিয়া অত্যন্ত সফলতার সাথে সম্পন্ন করে৷ কখনো কোনো পক্ষের কাছ থেকে কোনো ধরনের অভিযোগ আসেনি’- উল্লেখ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

এদিকে জেএমআই হসপিটালের বিডিংয়ের প্রেক্ষিতে দেখা দেওয়া সমস্যার বিষয়টি মৌখিকভাবে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) জানিয়েছে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশে (ডিবিএ)। একইসঙ্গে বিষয়টি বিএসইসিকে লিখিতভাবে জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিএসইর সদস্যদের নিয়ে গঠিত এই সংগঠনটি।

উল্লেখ্য, নতুন বছরের ৯ জানুয়ারি বিকেল ৫টা থেকে ১২ জানুয়ারি বিকেল ৫টা পর্যন্ত জেএমআই হসপিটালের বিডিং অনুষ্ঠিত হয়। এই বিডিংয়ে অংশ নিয়ে যোগ্য বিনিয়োগকারীরা প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের কাট-অফ প্রাইস নির্ধারণ করেন ২৫ টাকা। তবে বিডিং শুরুর দুই সেকেন্ডের মধ্যে আবেদন করেও কোনো কোনো যোগ্য বিনিয়োগকারী কোম্পানিটির শেয়ার বরাদ্দ পাননি। অর্থাৎ, মাত্র দুই সেকেন্ডেই কোম্পানিটির বিডিং শেষ হয়ে যায়।

এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রতিটি শেয়ারে ২৫ টাকা করে ১৩৭ কোটি ৬৭ লাখ ৮৫ হাজার টাকার দর প্রস্তাব জমা পড়ে। যাতে কোম্পানির কাট-অফ প্রাইস ২৫ টাকা নির্ধারিত হয়। এর মধ্যে বিডিং শুরুর দুই সেকেন্ডের মধ্যেই সর্বোচ্চ দামে ১৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকার বেশি শেয়ার কেনার প্রস্তাব দেন যোগ্য বিনিয়োগকারীরা। ফলে দুই সেকেন্ডের মধ্যে আবেদন করেও কোনো কোনো যোগ্য বিনিয়োগকারী কোম্পানিটির শেয়ার পাচ্ছেন না।

বিডিংয়ে অংশ নেওয়া ৩৮৫ যোগ্য বিনিয়োগকারীর মধ্যে এক জন সর্বনিম্ন ১৬ টাকা দর প্রস্তাব করেন। এছাড়া দু’জন জন ২২ টাকা করে, দুজন ২৩ টাকা করে এবং একজন ২৪ টাকা করে দর প্রস্তাব করেন।

এর আগে গত বছরের ১৬ নভেম্বর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি কোম্পানিটির বিডিংয়ের অনুমোদন দেয়। পুঁজিবাজার থেকে ৭৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করে এই কোম্পানিটি জমি ক্রয়, ভবন তৈরি, মেশিনারিজ ক্রয়, ঋণ পরিশোধ কাজে ব্যবহার করবে।

বিনিয়োগবার্তা/এসএএম/ডিএফই//


Comment As:

Comment (0)