BBCCI

বিনিয়োগবার্তা‘র সঙ্গে একান্ত আলোচনায় বিবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট বশির আহমেদ

যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের বাণিজ্য-বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে কৃষি ও তথ্য-প্রযুক্তি হতে পারে গুরুত্বপূর্ণ খাত

যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য-বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে কৃষি ও তথ্য-প্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ন খাত হতে পারে বলে মনে করেন ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির (বিবিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট বশির আহমেদ।                     

তার মতে, বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদেরকে এখন তৈরি পোশাক বা আরএমজিনির্ভর বাণিজ্যের পাশাপাশি বিজনেস ডাইভারসিফিকেশন নিয়ে ভাবা উচিত। এক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যে কৃষিপন্যের ব্যাপক চাহিদা রযেছে। এছাড়া তথ্য-প্রযুক্তিতেও এখানকার মানুষের নির্ভরতা অনেক। তাই এসব খাতে বাণিজ্য-বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার ও বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসা উচিত। পাশাপাশি দেশের শেয়ারবাজারে বিদেশি ও প্রবাসীদের বিনিয়োগ বাড়াতে আইন-কানুন আরও সহজ করা এবং বড় ও স্বনামধন্য শিল্প প্রতিষ্ঠানকে পুঁজিবাজারে তালিকাভূক্ত করা উচিত। এছাড়াও ইউকে বসবাসরত বাংলাদেশিদের চলমান ব্যবসা-বাণিজ্যকে আরও গতিশীল তথা রেমিট্যান্স আহরণের পথকে আরও প্রশস্ত করা এবং দক্ষ লোকবল সৃষ্টির লক্ষ্যে বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষন ইন্সটিটিউট স্থাপনও জরুরী বলে মনে করেন তিনি।

যুক্তরাজ্য সফররত বিনিয়োগবার্তা‘র সম্পাদক শামীম আল মাসুদ এর সঙ্গে একান্ত আলোচনায় এসব বিষয় নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্সের (বিবিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট বশির আহমেদ। এ সময় অনান্যের মধ্যে বিনিয়োগবার্তা‘র ইউকে প্রতিনিধি গাজী হুমায়ুন কবির ও বিবিসিসিআই‘র প্রশাসনিক কর্মকর্তা শাফায়াত মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন। নিম্নে সাক্ষাতকারটির বিস্তারিত তুলে ধরা হলো:

 

বিনিয়োগবার্তা: যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যকার দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে বলুন

 

বশির আহমেদ: সেই আদিকাল থেকেই যুক্তরাজ্যের সাথে আমাদের সু-সম্পর্ক বিদ্যমান। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানীতে তৃতীয় বৃহত্তম অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাজ্য বাংলাদেশ থেকে আরএমজি সেক্টরের প্রায় ৮০ ভাগ পণ্য কিন্তু ইউনাইটেড কিংডমে আসে তাই বাংলাদেশের জন্য ইউকে মার্কেট খুবই আকর্ষণীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ এছাড়া কমনওয়েল্থ নেশন হিসাবে ঐতিহাসিকভাবে আমাদের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের একটা দীর্ঘদিনের সম্পর্ক বিদ্যমান দেশে বসবাসরত বাঙ্গালীরা কিন্তু যুগ যুগ ধরেই বাংলাদেশের কল জাতীয় বিশেষ দিবসগুলো খুবই স্বাচ্ছন্দ্যে উদযাপন করে আসছে এইতো কিছুদিন আগে আমরা ব্রিটেনের সাথে আমাদের সম্পর্ক ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী সেলিব্রেট করলাম এছাড়া বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য বিনিয়োগ পরিস্থিতি বিবেচনায় ইউকে মার্কেট আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ সো ডেফিনেটলি ইউকে ইজ ভেরি ইমপর্টেন্ট কান্ট্রি ফর বাংলাদেশ

বিনিয়োগবার্তা: আগামী দিনে বৈদেশিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ বিজনেস ডাইভারসিফিকেশন কিংবা এক্সপোর্ট প্রমোট করার জন্য সম্ভাবনাময় সেক্টরগুলো সম্পর্কে বলুন

বশির আহমেদ: আসলে দীর্ঘদিন ধরেই তৈরি পোশাক বা আরএমজি রপ্তানীর ওপর আমাদের দেশিক বাণিজ্য নির্ভরশীল খাতটিতে এখন প্রতিযোগিতা বেড়ে গেছে ফলে এখন সময় এসেছে বিজনেস ডাইভারসিফিকেশন নিয়ে ভাবার আর আগামীতে আমরা এগ্রিকালচার আইটি সেক্টরকে ব্যাপক সম্ভাবনাময় সেক্টর হিসাবে দেখছি আমরা ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের পক্ষ থেকে গত দুই বছর ধরে এগ্রিকালচার সেক্টর ও আইটি নিয়ে কাজ করছি বিশেষ করে যুক্তরাজ্যে প্রচুর পরিমানে কৃষিপণ্যের চাহিদা রয়েছে এটি বাংলাদেশ থেকে যেমন আমদানী করা যেতে পারে, তেমনি ব্রিটিশ সরকারের কাছ থেকে জমি লীজ নিয়ে এবং বাংলাদেশ থেকে দক্ষ লোকবল আমদানী করেও এখানে চাষাবাদ করা যেতে পারে বিশেষ করে বাংলাদেশের পেরিশেবল প্রোডাক্টগুলোকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করা হলে এখানকার বাজার দখলে আনার দারুন সম্ভাবনা রয়েছে

বিনিয়োগবার্তা: যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য-বিনিয়োগ বৃদ্ধির সম্ভাবনা কাজে লাগাতে আপনারা কিভাবে কাজ করছেন?

বশির আহমেদ: যুক্তরাজ্যের সাথে বাণিজ্য-বিনিয়োগ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে বাংলাদেশ সরকার এক্সপোর্টারদের জন্য আমরা অনেক গবেষণাভিত্তিক তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করে আসছি এতে সরকার ও ব্যবসায়িরা অনেক উপকৃত হচ্ছেন যেমন: বাংলাদেশের সরকার ও উদ্যোক্তাদের আগে গ্লোবাল গ্যাপ প্রসেসটা সম্বন্ধে বেশি জানা ছিল না, আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি কৃষকরা যাতে গ্লোবাল গ্যাপের আন্ডারে এগ্রিকালচার প্রসেস, সেইফ ফুড প্রসেস বা ডেফরা প্রসেস সম্পর্কে ধারনা নিয়ে তাদের পণ্য উতপাদন ও বাজারজাত করতে পারে-সে বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি যুক্তরাজ্যের রেগুলেটরি অবলিগেশনকে প্রাধান্য দিয়ে যদি আমরা আমাদের পেরিশেবল প্রোডাক্ট, ফ্রুটস, ভেজিটেবল প্রডিউস করি তাহলে আমাদের জন্য এখানকার বাজার দখলে নেওয়া খুব সহজ হবে এই সেইফ ফুডটাকে এখানে সুপারমার্কেট চেইনগুলোতে আমরা ঢুকাতে পারবো এবং একটা বড় বাজার আমাদের দখলে চলে আসবে একইভাবে তথ্য প্রযুক্তি খাতের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে আমরা কাজ করছি এসব বিষয়ে সরকারকে আমরা আমাদের সুপারিশমালা দিয়েছি এছাড়া বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যের সার্বিক বাণিজ্য-বিনিয়োগ পরিস্থিতি নিয়ে আরও গভীরভাবে কাজ চলছে

বিনিয়োগবার্তা: যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের বাণিজ্য বৃদ্ধিতে আপনাদের সুপারিশসমূহ কি কি?

বশির আহমেদ: একটি কথা না বললেই নয় যে, এখানে আমাদের আরএমজির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে আর আমরা মূলত এই একটি প্রোডাক্টের ওপর নির্ভর করেই দীর্ঘদিন ধরে বাণিজ্য চালিয়ে আসছি এখন বিজনেস ডাইভারসিফিকেশনের চিন্তা করতে হবে এক্ষেত্রে কৃষি ফুড প্রোডাক্টগুলোকে কাজে লাগানোর ব্যাপক সুযোগ রয়েছে কিন্তু শুধু বিদেশিদের মধ্যেই নয়, প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যেও বাংলাদেশের বর্তমান ফুড প্রোডাক্টগুলো সম্পর্কে একটা নেগেটিভ পারসেপশন আছে তারা মনে করে বাংলাদেশে উতপাদিত ফুডগুলো সেফ বা নিরাপদ না; বিগত সময়ে ফুডগুলোতে নানা ক্ষতিকর জিনিস পাওয়ায় এ অবস্থা তৈরি হয়েছে এখন অবশ্য সরকার এ বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে এ পদক্ষেপগুলোর ধারাবাহিকতা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরী আমরা মনে করি বাংলাদেশ সরকার এটিকে অবশ্যই পলিসি এডাপ্ট হিসেবে নেবেন যেমন- নদী বা খালের পানি দিয়ে কৃষি জমিতে সেচের পানি দেওয়া যাবে না কোনো ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করা যাবে না ব্রিটেনে যেসব ইউরোপিয়ান কোম্পানিগুলো ফুড প্রোডাক্টস সরবরাহ করে আসছে তারা কিন্তু পণ্যের মান নিয়ে খুবই ডিটারমাইন্ড তারা এ ব্যাপারে খুবই সতর্ক তাই এ বাজারটিতে তাদের পণ্য খুবই জনপ্রিয় এবং এ কারনে তারা এখানে একচেটিয়া ব্যাবসা করে আসছে বাংলাদেশকেও ফুড প্রোডাক্টের জন্য যুক্তরাজ্যের বাজার ধরতে পণ্যের মান বজায় রাখতে হবে সেজন্য যেসকল পদক্ষেপ নেওয়া দরকার সেগুলো অবশ্যই ফিলআপ করতে হবে বর্তমানে আমাদের দেশ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এক বিলিয়ন ডলারের পেরিসেবল প্রোডাক্ট(ফুড-ভেজিটেবল) এক্সপোর্ট করা হচ্ছে এটিকে আগামী ২০২৩ সালের মধ্যে দুই বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে সরকার দৃঢপ্রতিজ্ঞাবদ্ধ তবে এজন্য লজিস্টিক সাপোর্ট জরুরী এসবের মধ্যে কোল্ড চেইন মেনেজমেন্ট আরও উন্নতি করতে হবে যেসব এলাকায় পণ্যগুলো উতপাদন হয় তার কাছাকাছি স্থানে কোল্ডস্টোরেজ করতে হবে এছাড়া এয়ারপোর্টে কার্গো সিস্টেম আরও ডেভেলপ করতে হবে, ভালো ওয়্যার হাউজ ফেসিলিটিজ রাখতে হবে, বৃহত ক্যাপাসিটির স্ক্যানিং মেশিন দরকার-এগুলো দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে হবে এছাড়া কার্গো পরিবহনের ভাড়া যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে আরেকটি বিষয় হলো- ভারতে ১২ হাজারের মতো গ্যাপ প্রসেসিং এক্সপোর্ট লাইসেন্স রয়েছে, ভিয়েতনামে ৩২ হাজার, পাকিস্তানে ৬ হাজার, মায়ানমারে ২৯ হাজারের মতো গ্যাপ প্রসেসিং লাইসেন্স রয়েছে কিন্তু হতাশার কথা হলো- বাংলাদেশে একটিও এ ধরনের লাইসেন্স নাই আমরা বিষয়টি নিয়ে খাদ্য মন্ত্রনালয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছি এবং সুপারিশ দিয়েছি এ বিষয়টিকে বাংলাদেশ সরকারকে মনোযোগ দিতে হবে বলে আমরা মনে করি

বিনিয়োগবার্তা: বাংলাদেশের শেয়ারবাজার সম্পর্কে বলুন

বশির আহমেদ: অপ্রিয় হলেও সত্য যে, দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির তুলনায় বাংলাদেশের শেয়ারবাজার এখনো অনেক পিছিয়ে রয়েছে এছাড়া বৈশ্বিক পুঁজিবাজারের সাথে তুলনা করতে গেলে এ বাজারের সাইজ কিন্তু খুবই ছোট বিদেশি বিনিয়োগকারী কিংবা প্রবাসী বাংলাদেশিরা বিনিয়োগের জন্য বড় সাইজের কোম্পানি খুঁজে তাই এখানে বড় বড় শিল্পগ্রুপগুলোকে তালিকাভূক্ত করতে হবে বড় কোম্পানিগুলোকে বাজারে আনতে মার্কেটিং জোরদার করতে হবে এছাড়া বিনিয়োগ শিক্ষাকে আরও বেগবান করতে হবে তবে আমরা দেখতে পারছি এক্ষেত্রে বর্তমানে নিয়ন্ত্রনকারী কর্তৃপক্ষ বিএসইসি, ডিএসই ও সিএসই ভালো ভূমিকা পালন করছে তারা যুক্তরাজ্যে একটি বড় রোডশো করেছে, এছাড়া বিশ্বের অনান্য বড় শহরগুলোতেও রোডশো আয়োজন করে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার চেষ্ঠা করছে নি:সন্দেহে তারা এগুলো ভালো কাজ করছে তবে দেশের বড় কোম্পানিগুলোকে তালিকাভূক্ত করতে আরও জোড়ালো ভূমিকা নিতে হবে বলে আমাদের কাছে মনে হয় আরেকটি বিষয় হলো- আমেরিকার শেয়ারবাজারও ৩০ বছর পরে একটি স্ট্যাবল শেয়ারবাজার হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে তাই বাংলদেশের শেয়ারবাজারেরও বড় হওয়ার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে তবে সেলক্ষ্য বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সকলকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে

 

বিনিয়োগবার্তা: পুঁজিবাজারে প্রবাসী বা বিদেশিদের বিনিয়োগ বাড়াতে আপনারা কিভাবে ভূমিকা রাখছেন?

বশির আহমেদ: দেখুন মানি মার্কেট ক্যাপটিাল মার্কেটে কিন্তু প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের বিশাল ভূমিকা রয়েছে ২০১০ সালে শেয়ারবাজার ধ্বসের পরে প্রবাসী বাংলাদেশিরাই বাজারকে টেনে তুলতে জোড়ালো ভূমিকা রেখেছিল এই সম্ভাবনাটিকে আরও সমৃদ্ধ করতে হলে আইন-কানুন আরও সহজ করতে হবে যেমন-নিটা একাউন্টের মাধ্যমে শেয়ারবাজারে বিদেশিরা বিনিয়োগ করে থাকে তাদের জন্য সহজ এক্সিটের ব্যবস্থা রাখতে হবে প্রবাসীরাও কিন্তু দেশের বাজারে বিনিয়োগ করতে চায় কিন্তু বিনিয়োগযোগ্য ভাল কোম্পানি কিংবা আইন-কানুনের ঝক্কি-ঝামেলার কারনে তারা দেশে বিনিয়োগে নিরুতসাহিত হয়ে পড়ে কারনে বিদেশিদের বিনিয়োগ ও রিটার্নের পথ আরও সহজ করে দিতে হবে একইভাবে প্রফিট টেকিং কিংবা টাকা বের করে আনার জন্যও সহজ নিয়ম করে দিতে হবে তবেই দেশে বিদেশি প্রবাসীদের বিনিয়োগ বাড়বে বলে আমার বিশ্বাস

বিনিয়োগবার্তা: যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন সেক্টরে  বাংলাদেশ থেকে মেধাবীদক্ষ লোকবল আমদানিতে আপনারা কিভাবে ভূমিকা রাখছেন?

বশির আহমেদ: আপনার এই প্রশ্নটা কিন্তু খুবই সময়োপযোগী এবং খুবই জরুরী একটা প্রশ্ন আমি একটা উদাহরণ দেই যেমন: এখানে আমাদের এগারো হাজার রেস্টুরেন্ট আছে বাংলাদেশি মালিকানাধীন আমরা প্রতিবছর ব্রিটিশ ইকোনমিতে দশমিক বিলিয়ন ডলার সমপরিমানের কন্ট্রিবিউট করে থাকি আমরা ইউকের এই রেস্টুরেন্টগুলাতে ,৭৫,০০০ মানুষ এমপ্লয়মেন্ট করে আসছি। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে আমাদের সাপ্লাই চেইন, হিউম্যান রিসোর্সের চেইন- এটার জন্য মাদের কোনো ইন্সটিটিউশন নাই বা আমরা কোন ধরনের সাহায্য সহযোগিতা পাই নাই এটা আমাদেরই ব্যর্থতা, যেটা আমরা বাংলাদেশে অনেক আগেই করতে পারতাম ভারতে ১১,০০০ এর মতো ক্যাটারিং হসপিটালিটি ইন্সটিটিউশন আছে যেখানে শেফ, স্কিল ডেভেলপমেন্ট, ওয়েটারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। পৃথিবীর অলমোস্ট ৬৫ শতাংশ হিউম্যান রিসোর্সেস ফর দা মেরিটাইম ক্যাটারিং সার্ভিস  ভারতীয় ইন্সটিটিউশন থেকে প্রোভাইড রা হয়। অথচ, আমাদের বাংলাদেশে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান একটাও নেই, ইন্টা্রন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড হসপিটালিটি ইন্সটিটিউশন নাই, এখানে আমাদের বড় একটি ফেইলিয়র রয়েছে। এ বিষয়টিতে সরকারের গুরুত্ব দেওয়া উচিত। এখন হিউম্যান রিসোর্সে আমরা পৃথিবীতে . কোটির মত বাংলাদেশি কাজ করছি কিন্তু আমরা যদি এ সেক্টরে স্কিলড লোকবল সরবরাহ করতে পারতাম তাহলে এখন যে স্যালারিগুলো আমরা আর্ন্ করি, এটা আরও অনেক বেশি হতো। যদি আমরা স্কিলড ডেভেলপমেন্টটাকে অনেক আগে থেকে হাতে নিতাম, তাহলেতো আমাদের দেশে আরও বেশি পরিমান রেমিট্যান্স পাঠাতে পারতাম। এটা একটা খুবই সুসংবাদ যে সরকার এখন এই উদ্যোগ নিয়েছেনবাট ইট ইজ লং ওয়ে, এটাতো সরকার একা পারবে না, উদ্যোগ বাস্তবায়নে প্রাইভেট সেক্টরকেও এগিয়ে আসতে হবে স্কিল ডেভেলপমেন্ট করার জন্য কলেজ, ইউনিভার্সিটিগুলোতে কর্মমুখী শিক্ষা দরকার। বাংলাদেশে ক্সস্টারনাল স্কিলড ডেভেলপমেন্ট মাত্র শতাংশ, যেখানে জার্মানিতে ৮২ শতাংশ, জার্মানিতে কিন্তু একাডেমিক কোয়ালিফিকেশনের সাথে সাথে ৮২ শতাংশ লোকেরই এক্সট্রা ১টা বা ২টা স্কিল ডেভেলপমেন্ট সার্টিফিকেশন আছে, অভিজ্ঞতা আছে ইউকেতে ৪৩ শতাংশ মানুষের এ সনদ রয়েছে বাংলাদেশের মাত্র শতাংশ মানুষের এটি রয়েছে; সো এইটা একটা হিউজ প্রব্লেম। বাংলাদেশে যেমন বিদেশীরা ইনভেস্ট করতে চায় কিন্তু প্রথম প্রশ্ন আসে- উই ডন্ট হ্যাভ স্কিল ডেভেলপমেন্ট, স্কিলড ওয়ার্কার ইন বাংলাদেশকারণ, আমরা আমাদের হিউম্যান রিসোর্সের আছে ৫০ শতাংশ অব আওয়ার পপুলেশন বিলো ২৫ ইয়ার্স ওল্ড, ইটস গুড নিউজ বাট স্কিলড লাগবে এর জন্য আমরা মনে করি, নেক্সট টার্গেট যেটা মাদের প্রাইভেট সেক্টর এবং সরকারের নেওয়া উচিত সেটিই হলো- স্কিল ডেভেলপমেন্ট। দেখুন, এখানে কিন্তু এক লক্ষ ট্রাক ড্রাইভারের দরকার, এক লক্ষ নার্সের দরকার, কিন্তু আগামী বছরের মধ্যেও অফিসিয়ালি বাংলাদেশ থেকে কোন ওয়ার্কার আসার সম্ভাবনা নাই কারণ আমাদের ইনফ্রাস্টাকচারটা বিল্ড আপ হয় নাই, আমাদের ইন্সটিটিউশনগুলো ডেভেলপড হয় নাই, তাই প্রশিক্ষিত জনবল তৈরি হয় নাই যেমন: আমাদের প্রব্লেম দেখুন আজকে কিন্তু বাংলাদেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা খুব বেশি, কেন এইটা? কারণ সবাই আমরা উকিল, ব্যারিস্টার, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার পথে যাচ্ছি, বেসিক স্কিলের জন্য  কোন ধরনের ট্রেনিং নিচ্ছি না বা আমাদের কারিকুলামের মধ্যেই এটি নাই সরকারের পক্ষ থেকে ইন্সটিউশনালি কোন ইনিশিয়েটিভ নাই যার জন্য বেকার, শিক্ষিত বেকারের সমস্যা বেশি কিন্তু নিচের লেভেলে গিয়ে দেখেন ওদের বেকারত্বের সংখ্যাটা কম সো আমি মনে করি এটা দেখা উচিত আমরা সবাই মিলে, প্রাইভেট সেক্টর এবং পাবলিক সেক্টর

বিনিয়োগবার্তা: ব্যবসা-বাণিজ্য বা সার্বিক পরিস্থিতির ওপর ব্যক্তিগত মতামত ব্যক্ত করুন

বশির আহমেদ: প্রথমত বিনিয়োগবার্তা ও আপনার টিমকে অস্ংখ্য ধন্যবাদ যে আজকে ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অফিসে এসে এই ইন্টারভিউ নেয়ার জন্য, আমাদের সাথে একটা নেটওয়ার্কিং, সেতুবন্ধন করার জন্য আমরা চাই যে, এ্যাজ চেম্বার অব কমার্স্ আমাদের কোর অবজেক্টিভটা হচ্ছে যে, দুই দেশের ব্যবসায়ীদেরকে ইনফরমেশন দিয়ে সহযোগীতা করা। বাংলাদেশে প্রবাসীদের বিশেষ করে যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগ বাড়ুক এবং বাংলাদেশ থেকেও এই দেশে বিনিয়োগ আসুক, এখানে জব ক্রিয়েট হোক, ব্রিটিশ ইনভেস্টররাও বাংলাদেশে ইনভেস্টমেন্ট করুক, নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হোক, নতুন বিনিয়োগ যাক এবং এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। এক্ষেত্রে আমাদের হাই-কমিশন, চেম্বার অব কমার্স্, এফবিসিসিআই সবাই মিলেই কিন্তু আমরা একটা টিম হিসাবে কাজ করছি। আগে কিন্তু আমরা ইনডিভিজুয়াল ইফো্র্ট্ দিতাম সবাই, এখন সবচেয়ে যেটা আমার ভাল লাগে যে এখন আমরা কিন্তু সব কালেক্টিভলি ইফোর্ট্ করছিসরকার আমাদেরকে সহযোগিতা করছেন, প্রাইভেট সেক্টর, ইন্সটিটিউশনগুলো সহযোগিতা করছেআমরা কিন্তু ব্রিটিশ চেম্বার, লন্ডন চেম্বারেরও মেম্বার। ফলে ব্রিটিশ বিজনেস ইন্সটিটিউশনগুললোও আমাদেরকে অনেক সহযোগিতা করছে সো ইনশাল্লাহ আমরা কালেক্টিভলি দেশের এই অর্থনৈতিক উন্নয়নে আমাদেরও কন্ট্রিবিউশনটা করে যাব। এক্ষেত্রে আপনাদের মত সংবাদ মাধ্যমের  সহযোগিতা আমাদের দরকার, তাই আপনারাও এই অগ্রগতিতে নিজেদের অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ

বিনিয়োগবার্তা: বিনিয়োগবার্তাকে সময় দেয়ার জন্য্ আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আমরা আপনার এবং আপনার চেম্বারের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করি আমরা চাই ব্রিটিশ-বাংলার মধ্যে একটা দারুন সেতুবন্ধন যেটা আগে থেকেই ছিল, সেটা দিন দিন আরও সমৃদ্ধ হোকউভয় দেশের জিডিপিতে যেন এই চেম্বার এবং এখানকার উদ্যোক্তারা আরও বেশি ভূমিকা রাখতে পারে-সেটাই আমাদের চাওয়া আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ  

বিনিয়োগবার্তা/মামুন/শামীম//

 


Comment As:

Comment (0)