Shariatpur-dairy-farm-1-2206241329

শরীয়তপুরে প্রাণিসম্পদে সোনালি দিনের হাতছানি

শরীয়তপুর প্রতিনিধি: শরীয়তপুরের গরু মোটাতাজাকরণ ও দুগ্ধ উৎপাদনকারী খামারিদের সংকটের কালো মেঘের আড়াল থেকে আশার আলো ছড়াচ্ছে পদ্মাসেতু। সহজ সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক তৈরির মাধ্যমে এ খাতের দীর্ঘদিনের পরিবহন সংকট দূর করে ৬০০ কোটি টাকারও বেশি আয়ের আশা জাগিয়েছে খামারিদের মাঝে। পদ্মাসেতুকে ঘিরে ব্যাপক সম্ভাবনার আশাবাদ জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের। 

যোগাযোগ সংকটের কারণে থমকে গিয়েছিল সম্ভাবনাময় এ খাত। আগে কোরবানির পশু ও দুগ্ধতাজ পণ্য ঢাকায় পৌঁছাতে যেখানে সময় লাগত ১৪-১৫ ঘণ্টা, সেখানে এখন সময় লাগবে মাত্র দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। ফলে সময় ও খরচ সাশ্রয়ের মাধ্যমে খামারিরা লাভবান হবেন অনেক বেশি। তাইতো পদ্মাসেতুর হাত ধরে খামারিরা এখন নতুন উদ্যমে চলার শক্তি পেয়েছেন। যা নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করে শরীয়তপুরের প্রাণিসম্পদ ও দুগ্ধ শিল্পকে বহু দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

শরীয়তপুর থেকে স্থানভোদে রাজধানী ঢাকার দূরত্ব ৭০ থেকে ৯০ কিলোমিটার। এরমধ্যে পদ্মা নদী থাকায় জেলার গরু মোটাতাজাকরণ ও দুগ্ধ উৎপাদনকারী খামারি ব্যবসায়ীদের ফেরি ও ট্রলার নিয়ে ঢাকায় যেতে অনেক সময় লাগে ও দুর্ভোগ পড়তে হয়, শিকার হয় দুর্ঘটনার। 

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার বিঝারী ইউনিয়নের গরু খামারি আলী আহম্মেদ কাজী  বলেন, গাড়িতে করে গরু ঢাকায় পাঠালেও ফেরিঘাটে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। পাশাপাশি ট্রলারে করে গরু নিলে ডাকাতি হয় এবং অনেক সময়ও বেশি লাগে। কিছু কিছু সময় গরু মারাও যায়। পদ্মাসেতু চালু হলে আমাদের এ অঞ্চলের খামারিরা ঢাকার বাজারে সহজে গরু বিক্রি করতে পারলে পরিবহন ব্যয় কমে বেশি লাভবান হবে।

নড়িয়া পৌরসভার লোনসিং গ্রামের গরু খামারি শহিদুল ইসলাম বাবু রাড়ী বলেন, পদ্মাসেতু চালু হলে ঢাকার মার্কেটে গরু বিক্রি করতে পারলে খামারিরা আগের চেয়ে অনেক বেশি লাভবান হবেন। এতে করে এ খাতে বিনিয়োগ বাড়বে অনেক।

শরীয়তপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুবোধ কুমার দাস বলেন, পদ্মাসেতু উদ্বোধনকে সামনে রেখে জেলার গবাদিপশু পালনকারীরা অনেক বেশি লাভবান হবেন। সেতু চালু হলে গবাদিপশু ও দুগ্ধজাত পণ্য ঢাকাসহ দেশের সব অঞ্চলে সহজে ও কম সময়ে বাজারজাত করতে পারবেন। এতে খামারিরা আগের তুলনায় বেশি লাভবান হবেন বলে আশা করছি।  

শরীয়তপুর জেলায় (দুই বা তার অধিক) গরু মোটাতাজাকরণ ও দুগ্ধ উৎপাদনকারি মোট খামার রয়েছে ১৬ হাজার ২৪৮টি। এরমধ্যে দুগ্ধ উৎপাদনকারি ৮ হাজার ৯৪ এবং মোটাতাজাকরণ গরুর খামার রয়েছে ৮ হাজার ১৫৪টি। মোটাতাজাকরণ গরুর মধ্যে ১০ ভাগ বাছুর। বর্তমানে জেলায় সাড়ে ১৬ হাজার খামারি প্রায় ৩ লাখ গরু পালন করছেন।

বিনিয়োগবার্তা/এসএল//


Comment As:

Comment (0)