যুক্তরাজ্যের আমদানি পণ্য

৬৫ দেশের পণ্য আমদানিতে শুল্ক কমাবে যুক্তরাজ্য

ডেস্ক রিপোর্ট: বাণিজ্য সংযোগ বাড়ানোর লক্ষ্যে বিশ্বের অর্ধশতাধিকেরও বেশি দরিদ্র দেশের পণ্য আমদানিতে নতুন করে শুল্ক কমাতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য। আগামী জানুয়ারিতে ‘ডেভেলপিং কান্ট্রিজ ট্রেডিং স্কিম’ নামের এ উদ্যোগ কার্যকর হবে। জামা-কাপড়, জুতা ও খাবারের মতো কম উৎপাদিত হওয়া পণ্যগুলো দেশটিতে ছাড় বা শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে। খবর: বিবিসি।

বার্তা সংস্থাটির খবরে বলা হয়, ইউরোপিয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য থেকে বেরিয়ে আসার পর থেকে বৈশ্বিক বাণিজ্য নিয়ে চাপে পড়েছে যুক্তরাজ্য। এরপর থেকেই আঞ্চলিক বাণিজ্য জোট ও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে দেশটি। ব্রেক্সিটের পাশাপাশি বৈশ্বিক সংকটের কারণে দেশটির মূল্যস্ফীতি চার দশকের সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছেছে।

এ অবস্থায় করছাড় দিয়েও উন্নয়নশীল বিশ্বের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়াতে চাইছে লন্ডন।

নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে ৬৫টি উন্নয়নশীল অর্থনীতির পণ্য করছাড়ের আওতায় আসবে। দেশটি আগে থেকেই এমন কিছু সুবিধা দিয়ে রেখেছে। ফলে উন্নয়নশীল দেশগুলো হাজার হাজার পণ্য শুল্ক ছাড়াই যুক্তরাজ্যে রফতানি করতে পারে। নতুন স্কিম কার্যকর হলে আফ্রিকার প্রায় ৯৯ শতাংশ পণ্য ছাড় বা শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে।

যুক্তরাজ্যের ডিপার্টমেন্ট অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড জানিয়েছে, এ স্কিম যুক্তরাজ্যের সমৃদ্ধি বাড়াতে এবং দেশগুলোর দারিদ্র্য দূরীকরণে সহায়তা করবে। পাশাপাশি এটি বাণিজ্য ব্যবহার করে দরিদ্র দেশগুলোর আন্তর্জাতিক সহায়তার ওপর নির্ভরতা কমিয়ে আনার জন্যও একটি বিস্তৃত চাপের অংশ।

স্ক্রিমটিতে মানবাধিকার বা শ্রম আইন লঙ্ঘন এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বাধ্যবাধকতা পূরণ না করার জন্য একটি দেশের এ সুবিধা স্থগিত করার ক্ষমতা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

দেশটির বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রী অ্যান-ম্যারি ট্রিভেলিয়ান বলেন, একটি স্বাধীন বাণিজ্যিক দেশ হিসেবে আমরা আমাদের বাণিজ্য নীতির নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে নিচ্ছি। আমাদের এ উদ্যোগ ব্রিটিশ ব্যবসাগুলোর জন্য সহায়ক এবং জীবনযাত্রার ব্যয় কমাতে সহায়তা করবে। পাশাপাশি এটি উন্নয়নশীল অর্থনীতিগুলোকে উপকৃত করবে।

তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যের ব্যবসাগুলো আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং কম খরচের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। প্রতিবন্ধকতা কম হওয়ায় প্রতিষ্ঠানগুলো উন্নয়নশীল দেশ থেকে পণ্য আমদানিতে উৎসাহিত হবে।

বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে ৬৫টি এরই মধ্যে যুক্তরাজ্যে পণ্য বিক্রি করে উপকৃত হচ্ছে। দেশগুলোর টেক্সটাইল থেকে ফল পর্যন্ত অনেক পণ্য যুক্তরাজ্যে হ্রাসকৃত বা শুল্কমুক্ত সুবিধা পায়। ফলে লন্ডন দেশগুলোর কাছে আকর্ষণীয় একটি গন্তব্যেও পরিণত হয়েছে। নতুন স্কিম সেই শুল্ক আরো কমিয়ে আনবে। যেমন শীতকালে দেশটিতে উৎপাদিত না হওয়া শসা শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে।

এছাড়া নতুন স্কিমটিতে অগ্রাধিকার সুবিধা পাওয়ার যোগ্য কিছু টেক্সটাইলের জন্য বিধিগুলোকেও সরল করা হচ্ছে। এ পরিবর্তনের কারণে আমদানিকারকদের লাখ লাখ পাউন্ড সাশ্রয় হবে। ফলে দেশটিতে ভোক্তা পর্যায়ে দাম কমে যাবে বলে আশা করছে সরকার। একদিকে যখন উন্নয়নশীল দেশগুলোকে দেয়া সহায়তা কমানো হয়েছে, তখন এ স্কিমের মাধ্যমে বাণিজ্য ব্যবহার করে দেশগুলোকে সহায়তা করা হচ্ছে। এটি শসার মতো পণ্যের ওপর কিছু মৌসুমি শুল্ক সরিয়ে দেয়। বছরের বাকি সময়ে আমদানি কর বহাল থাকলেও শীতকালে এসব পণ্য শুল্কমুক্ত সুবিধা পায়। এ পদক্ষেপ দেশটির বাণিজ্যে নিয়মগুলোকেও সরল করে। যেমন উৎপত্তির স্থান হিসেবে সেখানে যেকোনো পণ্যের কত শতাংশ উৎপাদিত হতে হবে তা নির্দিষ্ট করে দেয়া হচ্ছে।

বিনিয়োগবার্তা/এসএএম//


Comment As:

Comment (0)