দারিদ্র্য দূরীকরণে নোবেলজয়ী ত্রয়ী অর্থনীতবিদই এখন বিতর্কিত

সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি: প্রাসঙ্গিক ভাবনা

ড: মিহির কুমার রায়: অথনৈতিক উন্নয়নের পুর্বশর্ত হলো বিনিয়োগ যার মাধ্যমে অর্থনীতিতে গতির সৃষ্টি হয় যা পরবর্তিতে জিডিপিতে মূল্য সংযোজন করে, কর্মসংন্থান ও আয় বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়। এটাই অর্থনীতির গতি প্রকৃতির চলমান ধারা হলেও সময় সময় তার কিছু ব্যতিক্রমও ঘটে যা বর্তমান সময়ে আমরা দেখতে পাচ্ছি বৈশ্বিক কারনে। বিগত কয়েক বছর যাবত জিডিপিতে বিনিয়োগের হার শতকরা ৩১ এর মধ্যে রয়েছে  যেখানে সরকারি খাতের বিনিয়োগের হার মাত্র শতকরা ৮ এর কাছাকাছি রয়েছে। সরকার তার বাজেটরি কাঠামোর মাধ্যমে অর্থ বিনিয়োগ করে  থাকে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে যা পরিকল্পনা কমিশন কর্তৃক প্রনীত।

বর্তমান আর্থিক বছর (২০২২-২৩) এর নয় মাস অতিক্রান্ত হতে চলছে এবং এই আর্থিক বছরে মূল এডিপির আকার হলো ২ লাখ ৫৬ হাজার ৩ কোটি টাকা যা জিডিপির প্রায় ৬ শতাংশ। প্রতি অর্থবছরেই শেষ দিকে এসে এডিপি সংশোধন করা হয়  যা এ বছরও  করা হয়েছে বিশেষত অভ্যন্তরীণ এবং বিশ্ব প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে। অতি সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় সংশোধিত এডিপি অনুমোদন দেয়া হয়। এখানে উল্লেখ্য যে উক্ত সভায় কাটছাঁট করে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (আরএডিপি)  আকার চূড়ান্ত করেছে পরিকল্পনা কমিশন এবং এই সংশোধনের পর এডিপির আকার দাঁড়ায় ২ লাখ ২৭ হাজার ৫৬৬ কোটি টাকা অর্থ্যাৎ মূল এডিপির আকার কমছে ২৮ হাজার ৪৩৭ কোটি টাকা। ২০২২-২০২৩  অর্থবছরে সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় প্রকল্প সংখ্যা ১ হাজার ৫২৫টি, এর মধ্যে বিনিয়োগ প্রকল্প ১ হাজার  ৪১০টি, কারিগরি সহায়তা প্রকল্প ১১৫টি এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান/করপোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে ১০ হাজার ২টি  প্রকল্পসহ সংশোধিত এডিপি’র সর্বমোট প্রকল্প দাঁড়ায় ১ হাজার ৬২৭টি। মন্ত্রণালয় বা বিভাগভিত্তিক সর্বোচ্চ বরাদ্দ  পেয়েছে এমন খাতগুলো হলো; ১. স্থানীয় সরকার বিভাগ: প্রায় ৩৯ হাজার ৫৬৩ কোটি টাকা (১৭.৬৮%); ২. সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগ: প্রায় ২৯ হাজার ৮৯৭ কোটি টাকা (১৩.৩৬%); ৩. বিদ্যুৎ বিভাগ: প্রায় ২৫ হাজার ২৪৭  কোটি টাকা (১১.২৮%); ৪. রেলপথ মন্ত্রণালয়: প্রায় ১২ হাজার ৫৯৬ কোটি টাকা (৫.৬৩%); ৫. বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি  মন্ত্রণালয়: প্রায় ১২ হাজার ২৪৩ কোটি টাকা (৫.৪৭%); ৬. পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়: প্রায় ১১ হাজার ৩৩২ কোটি টাকা  (৫.০৭%); ৭. স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ: প্রায় ৯ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা (৪.৩৭%); ৮. প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়: প্রায় ৭ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা (৩.৪৮%); ৯. মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ: প্রায় ৭ হাজার ২১৮ কোটি টাকা (৩.২৩%); ১০. সেতু বিভাগ: প্রায় ৭ হাজার ৬৭ কোটি টাকা (৩.১৬%)।

এডিপির সংশোধনের প্রস্তাবিত খসড়া পর্যালোচনায় দেখা যায় এবারের সংশোধিত এডিপিতে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ কমছে অথচ এ দুই খাতই করোনার সময় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ কমছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের, এ খাতে বরাদ্দ কমছে ৬ হাজার ৬৫৫ কোটি টাকা, মূল এডিপিতে এই বিভাগের ৬৯টি প্রকল্পে ১৩ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল যা কমিয়ে এখন ৭ হাজার ২১৮ কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে তিনটি নতুন প্রকল্প  যোগ করে। বরাদ্দ কমার দিক থেকে দ্বিতীয় শীর্ষ স্থানে আছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, এই বিভাগের বরাদ্দ ৫ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকা কমানো হয়েছে। মূল এডিপিতে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের ৪২টি প্রকল্পে ১৫ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। বরাদ্দ কমানোয় তৃতীয় স্থানে আছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। সংশোধিত এডিপিতে এই মন্ত্রণালয়ের ৯ প্রকল্পে ৭ হাজার ৭৮৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছিল। বরাদ্দ কমছে ৩ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা। আবার জনতুষ্টিমূলক প্রকল্পে বরাদ্দ বেড়েছে বিশেষত: সামনে জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে। সংশোধিত এডিপিতে বরাদ্দ বৃদ্ধির শীর্ষ তিনটি খাত হলো স্থানীয় সরকার বিভাগ, বিশেষ প্রয়োজনে উন্নয়ন সহায়তা ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, সেই হিসাবে বরাদ্দ বাড়ানোর শীর্ষ দুটি খাতই স্থানীয় সরকার বিভাগের বরাদ্দ বেড়েছে ৪ হাজার ৫৩৩ কোটি টাকা, ২৩৮টি প্রকল্পে ৩৯ হাজার ৫৬৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে যা কোনো মন্ত্রণলয়ে সর্বোচ্চ বরাদ্দ। মূল এডিপিতে স্থানীয় সরকার বিভাগের জন্য বরাদ্দ আছে ৩৫ হাজার ৩০ কোটি টাকা যারা গ্রামগঞ্জের রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ করে থাকে। বরাদ্দ বৃদ্ধিতে দ্বিতীয় স্থানে আছে বিশেষ প্রয়োজনে উন্নয়ন সহায়তা খাত, সংশোধিত এডিপিতে এই খাতে বরাদ্দ সাড়ে তিন গুণের বেশি বাড়িয়ে মোট বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩ হাজার ৮৪৩ কোটি টাকা যা মূল এডিপিতে বরাদ্দ ছিল ১ হাজার ১২৬ কোটি টাকা অর্থ্যাৎ জরুরি প্রকল্প নেয়ার জন্য এমন বরাদ্দ রাখে পরিকল্পনা বিভাগ। তৃতীয় স্থানে থাকা মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ বাড়ছে দ্বিগুণ অর্থাৎ সংশোধিত এডিপিতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ বাড়িয়ে ২ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা করা হয়েছে।

এডিপির বাজেট বাস্তবায়ন পর্যালোচনায় দেখা যায় যে ডলার সংকট ও কৃচ্ছ্র সাধনের সরকারি পদক্ষেপের   প্রভাব পড়েছে এডিপি বাস্তবায়নে যেমন চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) এডিপি বাস্তবায়নে অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ২৮.১৬ শতাংশ অর্থাৎ এই সাত মাসে এডিপির মোট বরাদ্দের বিপরীতে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পগুলোতে অর্থ ব্যয়ের এ হার  সর্বশেষ সাত বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন, এর আগে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে ২৮ শতাংশ অর্থ ব্যয় করতে  পেরেছিল প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলো। এর কারন হিসাবে বলা হয়ে থাকে বিদ্যমান অস্থিতিশীল বৈশ্বিক পরিস্থিতির মধ্যে  সরকার কিছুটা ব্যয় সংকোচন নীতি গ্রহণ করেছে যার ফলে অগ্রাধিকারভিত্তিতে এ, বি, সি তিনটি তালিকাও তৈরি করা  হয়েছে, এসব তালিকার ভিত্তিতে অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলোতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দেয়া হলেও কম অগ্রাধিকার পাওয়া প্রকল্পগুলো  কম বরাদ্দ পাচ্ছে। একারণেই মূলত বাস্তবায়ন কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে, তবে বাস্তবায়ন আরও বাড়ানোর জন্য  সম্প্রতি পরিদর্শনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। এখানে আরও উল্লেখ্য যে উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ ব্যয়ে সরকারি তহবিলের ব্যয় হয়েছে কম, অর্থাৎ নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্পগুলোর কাজের অগ্রগতি মাত্র ২৬.৩৮ শতাংশ, অপরদিকে বৈদেশিক  অর্থায়ন ও প্রকল্প সহায়তার খাত থেকে ৩১.৩৫ শতাংশ অর্থ ব্যয় করা সম্ভব হয়েছে, জুলাই-জানুয়ারি সময়ে সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাওয়া ১৫ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রায় ৪৬.৪০ শতাংশ অর্থ ব্যয় করেছে সেতু বিভাগ,  বিদ্যুৎ বিভাগ বাস্তবায়ন করেছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রায় ৪৪.৪৭ শতাংশ এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ প্রায় ৩৭.৪২ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।

সম্প্রতি সমাপ্ত জেলা প্রশাসক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জেলা প্রশাসকদের খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির ওপর জোর দেয়ার এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের ব্যবস্থা গ্রহণসহ ২৫টি নির্দেশনা বাস্তবায়নের পাশাপাশি শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় প্রকল্পই গ্রহণ করতে বলেছেন যেগুলো এখনই প্রয়োজন হবে। প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনার একটি গুরুত্বপূর্ন দিক ছিল প্রকল্প বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা ও সময়ানুবর্তিতা যেখানে জনগুরুত্বপূর্ন প্রকল্পগুলো যেন বাস্তবায়নে অগ্রাধিকার পায় যা হবে কর্মসংস্থানমুখী, উৎপাদনশীল, আয়বর্ধক, আমদানি বিকল্পবর্ধক এবং এসডিজি স্থানীয়করণের আওতায় নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রাসমূহ অর্জনে তৎপরতা জোরদারকরন ইত্যাদি। আমরা যদি বিগত ৫১বছরের এডিপি বাস্তবায়ন রেকর্ড পর্যালোচনা করি তাতে দেখা যায় যে কেবলমাত্র নির্বাচনের বছর ছাড়া কোন বছরই ৮০ ভাগের বেশি এডিপি বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি যা বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষায় সুন্দরভাবে প্রতিফলিত হয়ে আসছে।

চলমান বছরটি বর্তমান সরকারের বিদায়ী বছর এবং এ বছরে সরকার এডিপি বাস্তবায়নের পূর্ণ বছর হিসাবে পাবে যা আগামী অর্থবছরে (২০২৩-২০২৪) পাবে ছয় মাস সময়। কারন আগামী বছরের জানুয়ারিতে দেশে সংসদীয় নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে যেখানে সরকার পরিবর্তনের প্রসঙ্গটি গুরুত্বপূর্ণ। তাই কৌশলগতভাবে বছরটির গুরুত্ব অপরিসীম। বৈশ্বিক কারনে সরকার ব্যয়ের ব্যাপারে সংকোচন নীতি গ্রহন করেছে মূল্যস্ফীতিকে নিয়ন্ত্রনে আনার জন্য যা সাম্প্রতিক মুদ্রা নীতিতে উল্লেখিত হয়েছে। বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনীতি তিন ঝুঁকিতে রয়েছে যেমন অব্যাহতভাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া, ডলারের বিপরীতে টাকার মানে নিম্নমুখীর প্রবণতা ও বৈদেশিক মুদ্রা আয়-ব্যয়ের মধ্যে ঘাটতি। এসব কারণে মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ বাড়ছে যা অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রে বড় ধরনের আঘাত করে যাচ্ছে। এ কারণে সরকারের সার্বিক ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে, বাড়তি ব্যয় মেটাতে বেড়েছে সরকারের ঋণনির্ভরতা এবং বৈদেশিক মুদ্রা আয়, রাজস্ব বাড়ানো ও ভর্তুকি কমানোর মাধ্যমেই এই চাপ কমানো সম্ভব। অর্থনীতিবিদগন বলছে বিদেশি ঋণের চাপ কমাতে হলে অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ বৃদ্ধির বিকল্প নেই। তবে কর আহরণ বাড়াতে যে ধরনের সংস্কার দরকার তা এখনও করা হয়নি। রাজস্ব খাতে কার্যকর সংস্কার ছাড়া লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে না।

একেতো এডিপিতে বরাদ্ধ কম, তারপর সরকারের রক্ষনশীল মুদ্রানীতি, রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি, সরকারের অত্যাধিক লোননির্ভরতা ইত্যাদি সার্বিক পরিস্থিতির জন্য কিছুটা স্পর্শকাতর বিধায় আগামী ছয় মাসে (জানুযারী-জুন) উন্নয়ন বাজেটের  (এডিপি) ৭৬ শতাংশ প্রচলিত আর্থিক কাঠামোতে কিভাবে ব্যয়িত হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। বৈশ্বিক এই ক্রান্তিকালে সরকার ব্যয় সাশ্রয়ী নীতি গ্রহন করলেও বাজেটভুক্ত উন্নয়ন খাতে অর্থ ব্যয়িত করতে সরকার তো নিরুৎসাহিত করেন নি। এখন শুধু প্রয়োজন দক্ষতার সাথে প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে চলা যা হবে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। তাই প্রশাসনিক মন্ত্রনালয়, পরিকল্পনা কমিশন, অর্থ মন্ত্রনালয় ও প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংন্থা এক যুগে সরকারী নির্দেশনা মেনে এগিয়ে আসবে উন্নয়নের অংশীদার হয়ে এই আশা রইল।

লেখক: অধ্যাপক (অর্থনীতি), ডিন, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ ও সিন্ডিকেট সদস্য, সিটি ইউনিভার্সিটি, ঢাকা।

বিনিয়োগবার্তা/ডিএফই//


Comment As:

Comment (0)