Dengue 200923

বেসামাল ডেঙ্গু পরিস্থিতি

সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে আইভি ফ্লুইড কেনার অনুমোদন

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) ২০ লাখ পিস আইভি ফ্লুইড কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এই আইভি ফ্লুইড সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে কেনার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। এবারই প্রথম সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি অবলম্বন করে আইভি ফ্লুইড কেনার অনুমোদন দেওয়া হলো।

বুধবার (২৬ জুলাই) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান সাংবাদিকদের এ সিদ্ধান্ত জানান।


তিনি বলেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করায় পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে জরুরিভিত্তিতে ২০ লাখ পিস আইভি ফ্লুইড সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতেতে কেনার প্রস্তাব স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের পক্ষ থেকে এসেছিল। মন্ত্রিসভা এই প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে।

তিনি জানান, ২০ লাখ পিস আইভি ফ্লুইড’র মধ্যে ১২ লাখ পিস নর্মাল স্যালাইন (এক হাজার এমএল) ও ৮ লাখ পিস গ্লুকোজ স্যালাইন (এক হাজার এমএল)। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অধীন এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) মাধ্যমে এই আইভি ফ্লুইড কেনা হবে।

কোনো ধরনের দরপত্র ছাড়া আইভি ফ্লুইড এবারই প্রথম সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে কেনার অনুমোদন দেওয়া হলো কি না এমন এক প্রশ্নের উত্তরে অতিরিক্ত সচিব বলেন, এটা প্রথম কি না এ বিষয়ে আমার জানা নেই।

দরপত্র আহ্বান ছাড়াই সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি অবলম্বন করে আইভি ফ্লুইড কেনার অনুমোদন দেওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এখন যেহেতু ডেঙ্গু পরিস্থিতিটা একটু খারাপ অবস্থায় রয়েছে এবং জরুরিভাবে এ জিনিসগুলো দরকার। টেন্ডারিং প্রসেসিংয়ে যাওয়ার মতো যথেষ্ট সময় নেই। এ কারণে তারা এ প্রস্তাব (সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি অবলম্বন) দিয়েছে।

যোগাযোগ করা হলে ইডিসিএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ডা. এহ্সানুল কবির জগলুল বলেন, দেশে এবারই প্রথম আইভি ফ্লুইড সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি অবলম্বন করে কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ক্রয়ের ক্ষেত্রে আমরা দু’টি পদ্ধতি অবলম্বন করি। একটি হলো দরপত্র আহ্বান, আর একটি প্রাইস কোটেশন সংগ্রহ করে। দরপত্র আহ্বান করে আইভি স্যালাইন কিনতে গেলে অনেক সময়ের প্রয়োজন। এ জন্য কয়েকটি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাইস নিয়ে, সর্বনিম্ন দাম দেওয়া প্রতিষ্ঠান থেকে স্যালাইন কেনা হবে। এটাকেই সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি অবলম্বনের কথা বলা হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এক লাখ ৭৩ হাজার ৭৯৫ জন। তাদের মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ৭৪ হাজার ৯৭৬ জন ও ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ৯৮ হাজার ৮১৯ জন ভর্তি হয়েছেন। চলতি বছর এখন পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৮৪৬ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার ৫৭৮ জন ও ঢাকার বাইরের ২৬৮ জন। এবছর ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন এক লাখ ৬২ হাজার ৮৪৭ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৭০ হাজার ৫৮৪ জন ও ঢাকার বাইরের ৯২ হাজার ২৬৩ জন। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১০ হাজার ১০২ জন ডেঙ্গুরোগী। তাদের মধ্যে ঢাকায় ৩ হাজার ৮১৪ জন ও ঢাকার বাইরে রয়েছেন ৬ হাজার ২৮৮ জন।

২০২২ সালে ডেঙ্গুতে দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ ২৮১ জন মারা যান। ওই বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে ডেঙ্গুতে ২৭ জনের মৃত্যু হয়। একই সঙ্গে আলোচ্য বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৬২ হাজার ৩৮২ জন। ২০২০ সালে করোনা মহামারিকালে ডেঙ্গু সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। একই বছর দেশব্যাপী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

একই সঙ্গে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক চট্টগ্রাম সাইলোর বিএমআরই কার্যক্রম সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে কেনার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বিনিয়োগবার্তা/ডিএফই//


Comment As:

Comment (0)