ইসলামি চরমপন্থা মোকাবেলায় মুসলিম দেশগুলোকেই নেতৃত্ব নেয়ার আহ্বান ট্রাম্পের
বিনিয়োগবার্তা ডেস্ক, ঢাকা: ইসলামি চরমপন্থা মোকাবেলায় মুসলিম দেশগুলোকেই নেতৃত্ব নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে ৪০টির মতো সুন্নি মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলোর এক সম্মেলনে প্রদত্ত ভাষণে তিনি এ আহবান জানান।
ট্রাম্প বলেন, আমেরিকার সামরিক শক্তির ওপর ভরসা না করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর উচিৎ হবে নিজেদেরই এই সন্ত্রাসবাদের সাথে লড়াই করা। তাদেরকে এই পৃথিবী থেকে দূর করে দিন।
পুরো মধ্যপ্রাচ্যে জাতিভেদ এবং সন্ত্রাস ছড়ানোর জন্য প্রধানত ইরানকে দায়ী করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
তিনি বলেন, চরমপন্থিদের তাড়ানোর জন্যে মুসলিম দেশগুলোর অ্যামেরিকার জন্যে অপেক্ষা করা উচিত নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রচারণার সময় তিনি যেভাবে মুসলিম-বিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন এবং পরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে কয়েকটি মুসলিম দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন, তার ফলে তিনি ইসলাম ও মুসলিমদের সম্পর্কে কি বলেন সেটা নিয়ে অনেক কৌতূহল ছিলো।
গত বছর এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘আমার ধারণা ইসলাম আমাদের ঘৃণা করে।’
ট্রাম্প তার ভাষণে বলেছেন, ইসলামি উগ্রপন্থার প্রসার মোকাবিলা করতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকেই নেতৃত্ব দিতে হবে।
তিনি বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে এ জন্য বসে থাকলে হবে না যে কখন শক্তিধর আমেরিকা এসে তাদের হয়ে শত্রুদের নির্মূল করে দেবে, বরং সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার ভার তাদেরকেই নিতে হবে।’
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানের সমালোচনা করে বলেন, তারা পুরো অঞ্চল জুড়ে গোষ্ঠী-গত বিভেদ, সংঘাত এবং সন্ত্রাস উস্কে দিচ্ছে। আসাদ সরকারের অবর্ণনীয় অপরাধকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।
ট্রাম্প বলেন, একজন সন্ত্রাসী যখনই একজন নিরপরাধ লোককে হত্যা করে এবং সৃষ্টিকর্তার নাম নেয় -তখন ধর্মবিশ্বাসী সব লোককে অবমাননা করা হয়।
তার ভাষণে ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সবার ঐক্য গড়ে তোলার ওপর জোর দেওয়া হয়।
বিবিসির বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হবার আগে নির্বাচনী প্রচারের সময় ইসলাম ও মুসলিমদের নিয়ে যেসব কথা বলেছিলেন তা সারা দুনিয়া জুড়েই অনেক মুসলিমের মনে ক্রোধ ও ভয় তৈরি করেছিল।
এর পর প্রেসিডেন্ট হবার পরই ট্রাম্প ৬টি মুসলিমপ্রধান দেশের লোকদের আমেরিকায় আসার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন -অবশ্য সৌদি আরব, মিশর বা অন্য উপসাগরীয় আরব দেশগুলো এই তালিকায় ছিল না।
কাজেই ওই সব দেশের নেতাদের জন্য ট্রাম্প কি করেছিলেন তা হয়তো বড় কোন বিষয় হবে না – তারা বরং ট্রাম্পের কাছ থেকে এই আশ্বাস চাইবেন যে এসব দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যেন তিনি তাদের বিব্রত না করেন।
কিন্তু ইরানের ক্ষেত্রে মার্কিন এই নীতি আবার পুরো বিপরীত। রবিবার রিয়াদে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন – সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে পাশে নিয়ে – আহ্বান জানিয়েছেন ইরানি প্রেসিডেন্ট রুহানির প্রতি যেন তিনি তার নির্বাচনী ম্যান্ডেট অনুযায়ী সেদেশের জনগণের অধিকার পুন-প্রতিষ্ঠা করেন।
একই রকম কথা বলেছেন ট্রাম্পও। এ সম্মেলনে ইরান এবং তার প্রভাবাধীন শিয়া প্রধান দেশগুলো আমন্ত্রিত হয়নি।
(এসএএম/ ২২ মে ২০১৭)