সংসদ অধিবেশন

গণমাধ্যমকর্মী বিল পরীক্ষায় চতুর্থবারের মতো সময় পেল সংসদীয় কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক: সংসদে উত্থাপিত ‘গণমাধ্যমকর্মী (চাকরির শর্তাবলি) বিল-২০২২’ পরীক্ষা করতে চতুর্থ বারের মতো সময় বাড়িয়ে নিয়েছে সংসদীয় কমিটি। সোমবার (৫ জুন) তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু বিলটি পরীক্ষার জন্য আরো ৯০ কার্যদিবস সময় চান। পরে স্পিকার তার প্রস্তাবটি ভোটে দিলে তাতে অনুমোদন দেয় সংসদ।

গত বছরের ২৮ মার্চ তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বেশ আলোচিত খসড়া এ আইন সংসদে তোলেন। তখন বিলটি ৬০ দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। নির্দিষ্ট সময়ে প্রতিবেদন দিতে না পেরে গত বছরের ৬ জুন ৬০ দিন বাড়তি সময় নিয়েছিল সংসদীয় কমিটি। এরপর আগস্টে আবার দ্বিতীয় দফায় ৬০ দিন সময় বাড়িয়ে নেয় সংসদীয় কমিটি।

এরপর গত ৮ জানুয়ারি আবারো বিলটি পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দিতে ৯০ দিন সময় নেয় সংসদীয় কমিটি।

বিলটি সংসদে ওঠার পর সংসদীয় কমিটি এ নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো বৈঠক করেনি। কিন্তু খসড়া আইনটি সংসদে ওঠার পর থেকেই সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন এবং মালিকদের সংগঠন অনেকগুলো ধারা নিয়ে বিরোধিতা করে এসেছে।

সংসদে উত্থাপিত খসড়া বিলটিতে বলা হয়েছে, কোনো গণমাধ্যমকর্মীর বেতনকাল এক মাসের অধিক হবে না। পরবর্তী মাসের সাত কর্মদিনের মধ্যে এসব কর্মীর বেতন পরিশোধ করতে হবে। গণমাধ্যমকর্মীদের ন্যূনতম ওয়েজ বোর্ড পাঁচ বছর পরপর গঠন হবে। ওয়েজ বোর্ড সংবাদপত্র, সংবাদ সংস্থা, বেসরকারি টেলিভিশন, বেতার ও নিবন্ধিত অনলাইন মাধ্যমের জন্য প্রয়োজনে আলাদা বেতন কাঠামো নির্ধারণ করবে। আগে শুধু সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার জন্য এ ওয়েজ বোর্ড গঠন করা হতো।

প্রস্তাবিত আইনে বলা রয়েছে, গণমাধ্যমে পূর্ণকালীন কর্মরত সাংবাদিক, কর্মচারী এবং নিবন্ধিত সংবাদপত্রের মালিকানাধীন ছাপাখানাসহ নিবন্ধিত অনলাইন গণমাধ্যমে বিভিন্ন কর্মে নিয়োজিত কর্মীদের ‘গণমাধ্যমকর্মী’ বলা হবে। গণমাধ্যমকর্মীদের তিনটি বিভাগ করা হয়েছে এ বিলে। সেগুলো হলো অস্থায়ী বা সাময়িক, শিক্ষানবিশ ও স্থায়ী।

বিলে বলা হয়েছে, গণমাধ্যমকর্মীকে সপ্তাহে অন্যূন ৪৮ ঘণ্টা কাজ করতে হবে। এর বেশি কাজ করাতে চাইলে অধিকাল (ওভার টাইম) ভাতা দিতে হবে।

এর আগে গণমাধ্যমকর্মীরা চলতেন ‘দ্য নিউজপেপার এমপ্লয়িজ (চাকরির শর্তাবলি) আইন-১৯৭৪’-এর আওতায়। এর সঙ্গে শ্রম আইনের কিছু বিষয় সাংঘর্ষিক হচ্ছিল। পরে সাংবাদিকদের শ্রম আইনের আওতায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং তাদের শ্রমিক হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়। এ বিল পাস হলে গণমাধ্যমকর্মীরা আর শ্রমিক থাকবেন না, তাদের গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে অভিহিত করা হবে।

‘দ্য নিউজপেপার এমপ্লয়িজ (চাকরির শর্তাবলি)’ আইনে সাংবাদিক, প্রেস শ্রমিক ও প্রেস কর্মচারীদের চাকরির শর্ত, আর্থিক বিষয় ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নির্ধারণ করা ছিল। সরকার ওই আইনকে রহিত করে সব শ্রমিকের জন্য ২০০৬ সালে ‘শ্রম আইন’ প্রণয়ন করে। যাতে সংবাদপত্রের সাংবাদিক, প্রেস শ্রমিক ও প্রেস কর্মচারীদের বিষয়গুলোও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ২০১৮ সালে বিলটির নীতিগত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা।

বিনিয়োগবার্তা/এসএএম//


Comment As:

Comment (0)