বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড ওয়ানডে সিরিজ
হার দিয়ে সিরিজ শুরু বাংলাদেশের
খেলাধূলা ডেস্ক: নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে খেলার তিন বিভাগেই ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ। ৪৪ রানে জিতে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল কিউইরা। তিন দফা বৃষ্টির পর ৩০ ওভারের ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করতে নামা নিউজিল্যান্ড ৭ উইকেট হারিয়ে ২৩৯ রান করে। তবে ডিএলএস আইনে ২৪৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেট হারিয়ে ২০০ রানে থামে বাংলাদেশ।
২৪৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় টাইগাররা। অ্যাডাম মিলনের করা চতুর্থ বলে স্লিপে ক্যাচ দেন দীর্ঘদিন পর সুযোগ পাওয়া সৌম্য সরকার। ৪ বল খেলে শূন্য রানে মাঠ ছাড়েন তিনি। এরপর ইশ সোধির বলে বোল্ড হয়ে মাঠ ছাড়েন নাজমুল হোসেন শান্ত। ১৩ বলে ১৫ রান করেন টাইগার অধিনায়ক।
ভালো শুরু করা এনামুল হক বিজয় ১২তম ওভারে জশ ক্লার্কসনের বলে তাকেই ক্যাচ দেন। ৩৯ বলে ৫টি চারে ৪৩ রান করেন বিজয়। এই বোলার নিজের পরের ওভারে লিটন দাসকে তুলে নেন। লিটন ১৯ বলে একটি চার ও একটি ছক্কায় ২২ রান করেন।
আত্মঘাতী শট খেলে আউট হয়েছেন মুশফিকুর রহিম। অভিজ্ঞ এই ব্যাটার রাচীন রবীন্দ্রর বলে রিভার্স সুইপ খেলতে দিয়ে উইকেটরক্ষক টম ব্লান্ডেলকে ক্যাচ দেন। ১০ বলে ৪ রান করেন তিনি।
আশা জাগিয়ে আউট হয়েছেন তাওহীদ হৃদয় ও আফিফ হোসেন। এই জুটি ৩৮ বলে ৫৬ রান তোলেন। তবে ইশ সোধির বলে তুলে মারতে গিয়ে আউট হন হৃদয়। তিনি ২৭ বলে ২টি চার ও একটি ছক্কায় ৩৩ করেন। আর জ্যাকব ডাফির বলে আউট হওয়া আফিফ ২৮ বলে ৩৮ করেন। তিনি ৫টি চার ও একটি ছক্কা হাঁকান। মেহেদী হাসান মিরাজ ২১ বলে ২৮ রানে অপরাজিত থাকেন।
কিউই বোলারদের মধ্যে ২টি করে উইকেট পান অ্যাডাম মিলনে, ইশ সোধি ও জশ ক্লার্কসন।
এর আগে আজ রবিবার ডানেডিনে খেলতে নামে দুদল। বাংলাদেশ সময় ভোর ৪টায় টসের পরপরই বৃষ্টি নামে। প্রায় ১ ঘন্টা সময় নষ্ট হয়। ফলে ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমে নেমে আসে ৪৬ ওভারে। টস জিতে শুরুতে ফিল্ডিং বেছে নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
বৃষ্টির পর ব্যাটিংয়ে নামা নিউজিল্যান্ড শিবিরে শুরুতেই জোড়া আঘাত করেন শরিফুল ইসলাম। ইনিংসের প্রথম ওভারেই এই পেসার দুই উইকেট নেন। চতুর্থ বলটি অফ স্টাম্পের ওপর গুড লেংথে করেছিলেন এই বাঁহাতি পেসার। আউট সুইং করে বল বের হয়ে যাওয়ার সময় রাচিন রবীন্দ্রের ব্যাটের বাইরের দিকের কানায় লেগে মুশফিকের গ্লাভসে জমা পড়ে। বিশ্বকাপে দুর্দান্ত পারফর্ম করা এই ওপেনার সাজঘরে ফেরেন শূন্য রানে।
ষষ্ঠ বলে আবারও উইকেটের দেখা পান শরিফুল। ব্যাক অব লেংথের বল এবারও আউট সুইংয়ে বিভ্রান্ত হয়েছেন ব্যাটার। সামনের পায়ে ভর করে অফের দিকে খেলতে গিয়ে স্লিপে এনামুল হক বিজয়ের হাতে ধরা পড়েন হেনরি নিকোলস। ২ বল খেলে রানের রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফিরেছেন তিনি।
কিউইরা এরপর উইল ইয়াং ও টম লাথামের ব্যাটে ঘুরে দাড়ানোর চেষ্টা করছে। কিউইরা যখন ম্যাচে ফেরার চেষ্টায় তখন দ্বিতীয়বার হানা দেয় বৃষ্টি। ১৪তম ওভারের খেলা চলাকালে বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ করতে বাধ্য হন আম্পায়ার।
ত্রিশ মিনিট পর আবারও শুরু খেলা হয়। দ্বিতীয় দফা বৃষ্টিতে হারিয়ে গেল আরও ৬ ওভার। ম্যাচের দৈর্ঘ্য নেমে এলো ৪০ ওভারে। দুই দফা বৃষ্টির পর খেলা শুরু হলেও খুব বেশিক্ষণ চালিয়ে যাওয় সম্ভব হয়নি। প্রায় ৬ ওভারের মতো খেলার পর আবারও বেরসিক বৃষ্টির হানা। বৃষ্টির কারণে তৃতীয়বার খেলা বন্ধ হয়। অবশেষে বৃষ্টি শেষে খেলা আবারো শুরু হলে খেলা ৩০ ওভারে নেমে আসে।
অবশেষে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নামা কিউইদের তৃতীয় উইকেট তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। ২৬তম ওভারের প্রথম বলে নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক টম ল্যাথামকে বোল্ট করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এই বাঁহাতি ৭৭ বলে ৯টি চার ও ২টি ছক্কায় ৯২ রান করেন। তৃতীয় উইকেট জুটিতে উইল ইয়ংয়ের সঙ্গে ১৪৫ বলে ১৭১ রান তোলেন ল্যাথাম।
শেষ দিকে দ্রুত কিছু উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। সকটিই রান আউট। এরমধ্যে সৌম্য সরকারের করা ৩০তম ওভারে তিনটি রান আউট হয়। ১১ বলে ২০ রান করা মার্ক চ্যাপমান রান আউট হন। তবে ঝড়ো সেঞ্চুরিতে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তৃতীয় শতক তুলে নেন উইল ইয়ং। এই ডানহাতিও রান আউট হয়ে মাঠ ছাড়েন। তিনি ৮৪ বলে ১৪টি চার ও ৪টি ছক্কায় ১০৫ রান করেন। পরে টম ব্লান্ডেল ও জশ ক্লার্কসনও রান আউট হন।
বাংলাদেশ বোলারদের মধ্যে শরিফুল ২টি ও মিরাজ একটি উইকেট পান।
বিনিয়োগবার্তা/আরএম//