মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত
সড়ক পরিবহন আইনের খসড়া অনুমোদন
নিজস্ব প্রতিবেদক: সড়ক পরিবহন (সংশোধন) আইন, ২০২৪-এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে খসড়াটি অনুমোদন দেয়া হয়। পরে বিকালে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিনি প্রস্তাবিত আইনের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন।
বৈঠকে সড়ক পরিবহন আইনের বিভিন্ন ধারায় সাজা কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। পাশাপাশি দুটি ধারা অজামিনযোগ্য থেকে জামিনযোগ্য করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে বিদ্যমান আইনের অন্তত ১২টি ধারায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। বর্তমানে আইনের ৮৪, ৯৮ ও ১০৫ ধারা অজামিনযোগ্য। প্রস্তাবিত আইনে ৮৪ ও ৯৮ ধারাকে জামিনযোগ্য করা হয়েছে। ৯৮ ধারায় ওভারলোডিং বা নিয়ন্ত্রণহীনভাবে মোটরযান চালানোর ফলে দুর্ঘটনায় জীবন ও সম্পত্তির ক্ষতিসাধনের ক্ষেত্রে দণ্ডের কথা আছে। এ ধারায় মোটরযানের মালিককে বীমা করতে বলা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত কোনো মোটরযানের কারিগরি নির্দেশ অমান্যের ক্ষেত্রে দণ্ডের কথা আছে ৮৪ ধারায়।
১০৫ ধারা এখনকার মতোই অজামিনযোগ্য থাকছে। দুর্ঘটনাসংক্রান্ত অপরাধের শাস্তির কথা আছে এ ধারায়। এতে বলা আছে, এ আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন, মোটরযান চালনাজনিত কোনো দুর্ঘটনায় গুরুতরভাবে কোনো ব্যক্তি আহত হলে বা তার প্রাণহানি ঘটলে এ-সংক্রান্ত অপরাধগুলো দণ্ডবিধিতে থাকা বিধান অনুযায়ী অপরাধ বলে গণ্য হবে। তবে শর্ত হিসেবে বলা আছে, দণ্ডবিধিতে যা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো ব্যক্তির বেপরোয়া বা অবহেলাজনিত মোটরযান চালনার কারণে সংঘটিত দুর্ঘটনায় কেউ গুরুতরভাবে আহত হলে বা প্রাণহানি ঘটলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
ড্রাইভিং লাইসেন্সধারী ব্যক্তিকে অযোগ্য ঘোষণা এবং লাইসেন্স বাতিল, প্রত্যাহার ও স্থগিত করার বিষয় আছে আইনের ১২ ধারায়। এ ধারার ৩ উপধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তির ড্রাইভিং লাইসেন্স স্থগিত, প্রত্যাহার বা বাতিল করা হলে তিনি কোনো মোটরযান চালাতে পারবেন না। এটি লঙ্ঘনের জন্য এখন শাস্তি আছে তিন মাসের কারাদণ্ড ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানা। প্রস্তাবিত আইনে জরিমানা কমিয়ে ১৫ হাজার টাকা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
৬৯ ধারায়ও সাজা কমানো হয়েছে। এ ধারা অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যতীত ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রস্তুত, প্রদান বা নবায়নে বিধিনিষেধ রয়েছে। বর্তমানে এ ধারা লঙ্ঘনের জন্য সর্বোচ্চ দুই বছর, তবে কমপক্ষে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা ও কমপক্ষে ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। সেটি কমিয়ে এখন সাজার মেয়াদ দুই বছর রাখা হলেও অর্থদণ্ড কমিয়ে ৩ লাখ টাকা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আইনের বিধান অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি কন্ডাক্টরের লাইসেন্স ছাড়া কোনো গণপরিবহনে এ দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। যদি কোনো ব্যক্তি তা করেন তাহলে অনধিক এক মাসের কারাদণ্ড বা ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। প্রস্তাবিত আইনে এখানে সাজা ঠিক রাখা হলেও সুপারভাইজারের কথা যুক্ত করা হয়েছে। বিদ্যমান আইনে গণপরিবহনে ভাড়ার চার্ট প্রদর্শন করা ও নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলে সর্বোচ্চ এক মাসের কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড রয়েছে।
বিনিয়োগবার্তা/এসএএম//