রপ্তানিতে উৎসে কর ০.২৫ শতাংশ করার দাবি বিজিএপিএমইএ’র
নিজস্ব প্রতিবেদক: সব ধরনের রপ্তানির বিপরীতে উৎসে কর ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ গার্মেন্টস এক্সেসরিজ ও প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএপিএমইএ)।
এ সুবিধা আগামী পাঁচ বছর পর্যন্ত কার্যকর রাখলে অর্থনৈতিক সংকটকালীনও পোশাক খাত স্বস্তিতে থাকবে বলে জানায় বাণিজ্য সংগঠনটি।
সোমবার (৩ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয় বাজেটে অ্যাসোসিয়েশনের প্রস্তাবনা অন্তর্ভুক্তির দাবি জানানো হয়।
রপ্তানিতে উৎসে কর শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ করার দাবি জানিয়ে বিজিএপিএমইএর পক্ষে বলা হয়, রপ্তানিকে উৎসাহিত করতে আয়কর আইনে সব রপ্তানির বিপরীতে ১ শতাংশ উৎসে আয়কর সময়ে সময়ে হ্রাস করা হয়েছে এবং দশমিক ২৫ শতাংশও ধার্য করা হয়েছে। তবে বিগত অর্থবছরে ওই উৎসে আয়কর পুনরায় ১ শতাংশে উন্নীত করা হয়।
সেখানে বলা হয়, বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হলে কোনো পণ্যে আর্থিক প্রণোদনা দেওয়া যাবে না। এ কারণে রপ্তানি সক্ষমতা বাড়াতে এরই মধ্যে কিছু পণ্যে রপ্তানি প্রণোদনা হ্রাস আবার কিছু পণ্যে তা একেবারে বন্ধ করা হয়েছে। রপ্তানি প্রণোদনার এরূপ বন্ধ বা হ্রাসের কারণে সেসব পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়তে পারে।
সংগঠনটির মতে, উৎসে কর্তিত কর চূড়ান্ত করা দায় নিষ্পত্তির সময় সমন্বয় হয়ে থাকে। উৎসে অধিক হারে কর কর্তন করা হলে রপ্তানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল ব্লকড হয়ে যায়। তাই রপ্তানি খাতের উৎসে কর আগামী ৫ বছরের জন্য শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ ধার্য করা প্রয়োজন।
বিজিএপিএমইএর প্রস্তাবে আরও বলা হয়, কোম্পানির ক্ষেত্রে অর্জিত ব্যাংক সুদ আয়ের ওপর উৎসে কর ২০ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ কমাতে হবে। রপ্তানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানের স্থানীয় ক্রয় ভ্যাটের আওতা-বহির্ভূত রাখতে হবে। বিজিএপিএমইএর সদস্যভুক্ত সব প্রতিষ্ঠানের অনূকুলে কন্টিনিউয়াস বন্ডের সুবিধা প্রদানেরও দাবি জানানো হয় প্রস্তাবনায়।
এছাড়া কাস্টমস অ্যাক্ট ১৯৬৯ এর ১৫৬(১) ৬৬ এ এ ধারা এবং ১৫১(১) এবং ১৯৬(এ) ধারার সংশোধনের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। ট্যারিফ (বেপজা, বেজা ইত্যাদি) ও নন-ট্যারিফ সব এলাকার বন্ডেড প্রতিষ্ঠানের আমদানি প্রাপ্যতায় সমতা আনা এবং এককালীন তিন বছরের জন্য আমদানি প্রাপ্যতা প্রদানের দাবি জানায় বিজিএপিএমইএ। তাছাড়া বন্ডের আওতায় গার্মেন্টস এক্সেসরিজ ও প্যাকেজিংয়ের ফিনিশড পণ্যের আমদানি নিষিদ্ধ করার দাবিও জানিয়েছে।
ব্যক্তি পর্যায়ে করমুক্ত আয়ের সীমা ৪ লাখ টাকায় উন্নীত করার দাবি জানিয়ে প্রস্তাবনায় বলা হয়, মুদ্রাস্ফীতি, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, জনগণের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করে কর হার পুনর্নির্ধারণ করা প্রয়োজন। তাছাড়া একজন করদাতার সাধারণ জীবনযাপনের জন্য বছরে যে পরিমাণ ন্যূনতম অর্থের প্রয়োজন, সে পরিমাণ অংক করমুক্ত থাকলে কর ফাঁকির প্রবণতা কমবে এবং কর প্রদানে সক্ষম ব্যক্তিরা অধিক সংখ্যায় কর দিতে আগ্রহী হবেন।
সেখানে আরও বলা হয়, ব্যক্তিগত কর হার কমলে সঠিক আয় প্রদর্শনে জনগণ উৎসাহিত হবে। যা দেশের বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং অধিক রাজস্ব আহরণে সহায়ক হবে। এ অবস্থায় ব্যক্তি পর্যায়ে করমুক্ত আয়ের সীমা তিন লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে ৪ লাখ টাকায় উন্নীত করা যেতে পারে। রপ্তানিতে টিকে থাকার এ বহুমুখী সংকট কিছুটা হলেও হ্রাস পাবে, যদি কোম্পানির ব্যাংকের মাধ্যমে অর্জিত সুদের ওপরে ২০ শতাংশের পরিবর্তে ১০ শতাংশ উৎসে কর ধার্য করার কথাও বলা হয়।