আলোচনা সভায় অধ্যাপক রেহমান সুবহান
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য আলাদা সংস্কার কমিশন গঠন করা যেতে পারে
নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য আলাদা একটি সংস্কার কমিশন গঠন করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান।
তিনি বলেন, ‘দেশের পিছিয়ে পড়া বা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষের অধিকার সুরক্ষায় আলাদা একটি সংস্কার কমিশন গঠন করতে পারে অন্তর্বর্তী সরকার। এটা সরকার করতে পারলেই ভালো। তবে তা যদি সম্ভব না হয় তবে এসব জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি এবং নাগরিক সমাজ মিলে এমন একটি কমিশন গঠন করতে পারেন। আর সেই কমিশনের উচিত তাদের প্রস্তাবগুলো অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে তুলে ধরা।’
রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘বৈষম্যের অবসান হোক, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সঙ্গে অংশীদারত্ব উদ্যাপন’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা ও প্রকাশনা উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ব্রাত্যজন রিসোর্স সেন্টার (বিআরসি), সোসাইটি ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট (সেড) এবং পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) সম্মিলিতভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পিপিআরসির নির্বাহী পরিচালক ও অর্থনীতিবিদ হোসেন জিল্লুর রহমান।
অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, তিনি গত শতকের সেই পঞ্চাশের দশকে তার কর্মজীবন শুরু করার সময় থেকেই মানুষের ন্যায্যতা ও অধিকার নিয়ে কথা বলে আসছেন। ১৯৭১-পূর্ব সময়ে এ অঞ্চল বৈষম্যের শিকার হয়েছিল। সেই বৈষম্যের বিরুদ্ধে এ দেশের মানুষ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিল। সেই স্বাধীনতা ছিল আমাদের এক বিরাট অর্জন। তবে স্বাধীনতা লাভের পরও সব বঞ্চনার অবসান হয়নি।
প্রথিতযশা এ অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘সমাজের নানা ক্ষেত্রে এখনো সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য রয়ে গেছে। এ বৈষম্য এখন বাড়ছে। বৈষম্যের বড় শিকার প্রান্তিক বিভিন্ন জনজাতির মানুষ। দুর্ভাগ্য, এসব মানুষের সমস্যার সমাধানের কথা বা বৈষম্য বিলোপের কথা, সেই ষাটের দশক থেকে শুনছি কিন্তু তা এখনো রয়ে গেছে।’
তিনি প্রান্তিক মানুষের উন্নয়নে তার কয়েকটি স্বপ্নের কথা বলেন, যেগুলো তিনি প্রস্তাব হিসেবে তুলে ধরেন। এর মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে প্রান্তিক ও দরিদ্র প্রতিটি মানুষের জন্য মৌলিক আয়ের ব্যবস্থা করা। দ্বিতীয় প্রস্তাব, প্রতিটি মানুষের জন্য ভূমি অধিকার নিশ্চিত করা। তৃতীয় প্রস্তাব হিসেবে সামাজিক ব্যবসার সম্প্রসারণের কথা বলেন তিনি। অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, ‘দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষের সংখ্যা খুব বেশি নয়। তাদের উন্নয়ন তাই কিছুটা সক্রিয় হলেই করা সম্ভব।’
মূল প্রবন্ধ তুলে ধরেন সেডের নির্বাহী পরিচালক ফিলিপ গাইন। এছাড়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান, সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক রওনক জাহান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ এম হাশেমী, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বক্তব্য রাখেন। স্বাগত বক্তব্য দেন ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষক জাকির হোসেন রাজু।
বিনিয়োগবার্তা/এসএএম//