পুজিবাজারের সাধারণ ও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের প্রশিক্ষণ দিল হাসান সিকিউরিটিজ
প্রতিবেদক, বিনিয়োগবার্তা, ঢাকা: সাধারণ ও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ নিয়ে প্রশিক্ষন দিয়েছে হাসান সিকিউরিটিজ লিমিটেড। প্রশিক্ষণে কোন কোন খাতের শেয়ারে তারা এখনই বিনিয়োগ করবেন সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন মোহাম্মদ আলী।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) পরিচালক ও ঢাকা ব্যাংক সিকিউরিটিজের প্রধান পরিপালন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী উপস্থিত বিনিয়োগকারীদের নানা পরামর্শ দেন।
এর আগে হাসান সিকিউরিটিজ আয়োজিত কার্য্যক্রমটি উদ্বোধন করেন সভাপতি ও প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়লাল সাহা।
মোহাম্মদ আলী বলেন, ঔষুধের পেছনে মানুষের ব্যয় ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। খাদ্য পণ্য যেমন নিত্য প্রয়োজনীয় তেমনি ঔষুধও নিত্য প্রয়োজনীয়। আর ২০৩৩ সাল পর্যন্ত ঔষুধ উৎপাদনে মেধাসত্ত্ব লাগবে না। তাই দেশিও কোম্পানিগুলোর ঔষুধ উৎপাদনে খরচ ও জটিলতা অনেক কমবে। বরং তারা দেশিও চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিশ্ববাজারে বড় রপ্তানিও সম্ভব। আর এ কারণেই শেয়ারবাজারে ঔষুধ খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর এখনই সময়। ইতিমধ্যে বেক্সিমকো ফার্মার শেয়ারের মূল্য গত এক বছরে দ্বিগুণ হয়েছে। এছাড়া খাদ্য এবং খাতে বিনিয়োগে ভাল মুনাফা করা সম্ভব। তবে এসব বিনিয়োগ করতে হবে দীর্ঘ মেয়াদে। এতে ডিভিডেন্ডের পাশাপাশি মূলধনী মুনাফাও আসবে।
ব্যাংকের শেয়ার কেনার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকটির এনপিএল (খেলাপী ঋণের হার) রেশিও দেখে কেনার পরামর্শ দিয়েছেন মো: আলী। তিনি বলেন, ঋণ ব্যবস্থাপনাই ব্যাংকের প্রাণ। ব্যাংক ঋণ প্রদানের মাধ্যমে সুদ আয় কিংবা মুনাফা করে। তবে গ্রাহক ঋণ খেলাপী হয়ে পড়লে ব্যাংকের আয় কমে যাবে। তাই ব্যাংকের এনপিএল পরিস্থিতি দেখে বিনিয়োগ করার পরামর্শ দেন তিনি। ব্যাংকের এনপিএলের তথ্য হাসান সিকিউরিটিজ, ঢাকা ব্যাংক সিকিউরিটিজ সহ বিভিন্ন হাউজের মাধ্যমে জানতে পারবেন বিনিয়োগকারীরা। এছাড়া খাদ্য খাতের ব্যবসা বেশ ভাল। তাই এ খাত থেকে প্রতিবছরই ভাল ডিভিডেন্ড আসছে।
এছাড়া নূন্যতম তিনটি দিক দেখে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরামর্শ দেন মো: আলী। তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীদের কোনো কোম্পানিতে বিনিয়োগ করার আগে তার আয়, লভ্যাংশের ধারাবাহিকতা ও ব্যবস্থাপনার অবস্থা (কোম্পানির বোর্ড এবং ব্যবস্থাপনায় কারা আছেন) সম্পর্কে খোঁজ নিতে হবে।
বিনিয়োগকারীদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একটি কোম্পানির শেয়ারের দর বাড়ার পেছেনে কয়েকটি মৌলিক বিষয় কাজ করে। এই বিষয়গুলো হলো ধারাবাহিকভাবে কোম্পানির আয় বৃদ্ধি, বিক্রি বেশি, খরচ কম, সম্পদ বৃদ্ধি ও লভ্যাংশের ধারাবাহিকতা।
কিন্তু ব্যাংক বহির্ভুত আর্থিক খাত বাড়ছে কেন বিনিয়োগকারীরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আইডিএলসি, আইপিডিসি ও লঙ্কাবাংলা ছাড়া এ খাতে অন্য কোম্পানির ব্যবসা তেমন ভাল যাচ্ছে না। তাছাড়া এ খাতের ব্যবসায় বড় ঝুঁকি রয়েছে। মূলত সূচক বৃদ্ধির ধাক্কায় এসব কোম্পানির দর বাড়ে। দীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগের জন্য ব্যাংক বহির্ভুত আর্থিক খাত ভাল না।
তিনি বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করে বলেন, দৈনিন্দিন খরচের টাকা বিনিয়োগ করার জায়গা পুঁজিবাজার না। যাদের অলস টাকা আছে, তাদেরই পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা উচিত।
শিক্ষা কার্যক্রমে বিনিয়োগকারীদের প্রশিক্ষণ দেন হেদায়েত হোসেন ও একেএম গোলাম রব্বানী।
(এসএএম/ ১৮ জুলাই ২০১৭)