মিউচুয়াল ফান্ডের আ-আ-ক-খ
মিউচুয়াল ফান্ড কী?
মিউচুয়াল ফান্ড নিয়ে একটা সহজ ধারণা দেওয়া যেতে পারে। ধরুন, আপনি শেয়ারবাজারে আপনার টাকা খাটাতে চান। অথচ কোন শেয়ারে কখন কত টাকা খাটাবেন, তা নিয়ে আপনার কোনও ধারণা নেই। এক্ষেত্রে সোজা উপায় হল, মিউচুয়াল ফান্ডে টাকা বিনিয়োগ করা। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অনেক বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে টাকা তুলে সেই টাকা দিয়ে যখন একসঙ্গে প্রচুর শেয়ার কেনা হয়, তাকে বলা হয় মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম।
উদাহরণ: আলোচনার সুবিধার জন্য আমরা ধরে নিচ্ছি যে, সুপার রিটার্স অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি মিউচুয়াল ফান্ডে টাকা খাটায়। ধরা যাক, এরা সুপার রিটার্নস মিউচুয়াল ফান্ড নামে একটি মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম চালু করল। এর আওতায় এরা ১০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করল। এ বার সেই টাকা খাটাতে শুরু করল স্টক মার্কেটে। যদি ইক্যুইটি স্কিমে টাকা ঢালা হয়, তা হলে বিনিয়োগ হবে মূলত শেয়ারে। যদি ডেট স্কিমে টাকা ঢালা হয়, তবে বিনিয়োগ হবে মূলত ঋণপত্রে। ধরা যাক, আপনাকে শুরুতে ইউনিট পিছু ১০ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দিল সংশ্লিষ্ট মিউচুয়াল ফান্ড কোম্পানি। অর্থাৎ একটা ইউনিট আপনি কিনলেন ১০ টাকা দিয়ে। অর্থাৎ এক হাজার ইউনিট কিনতে আপনাকে দিতে হচ্ছে ১০ হাজার টাকা। এক বছর পর দেখা গেল, ওই ইউনিটের বাজারদর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ টাকা। এ বার আপনি সেই এক হাজার ইউনিট বিক্রি করে পেলেন ১২ হাজার টাকা। অর্থাৎ আপনার ফায়দা হল কড়কড়ে দু’হাজার টাকা! ইউনিট কিনতে ইচ্ছুক ব্যক্তির ক্ষেত্রে এ বার কী হবে? আপনার বিক্রি করা ইউনিটগুলি যিনি এ বার কিনবেন, তাঁকে ১২ টাকা খরচ করতে হবে প্রতি ইউনিট পিছু। কারণ, আগেই দেখানো হয়েছে, দাম বেড়ে গিয়েছে। পরে যদি তাঁর কপাল ভালো থাকে, তা হলে তিনি ফায়দা করতে পারবেন।
জেনে নেওয়া যাক, বিভিন্ন ধরনের মিউচুয়াল ফান্ড সম্পর্কে।
বিভিন্ন ধরনের মিউচুয়াল ফান্ড:
১. ইক্যুইটি ফান্ড: এই ফান্ডের আওতায় টাকা মূলত খাটানো হয় ইক্যুইটি শেয়ারে। এ ধরনের শেয়ারে টাকা খাটানো খুব ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ শেয়ারের দাম যদি হঠাৎ পড়ে যায়, তা হলে লোকসান হবে। যাঁরা ঝুঁকি নিতে ভালোবাসেন, তাঁরা এই স্কিমে টাকা ঢালতে পারেন।
২. ডেট ফান্ড: এক্ষেত্রে টাকা ঢালা হয় মূলত বিভিন্ন ধরনের ঋণপত্রে। শুধু সরকারি নয়, বেসরকারি, কর্পোরেট ঋণপত্রও রয়েছে।যাঁরা ঝুকি নিতে পছন্দ করেন না, তাঁদের ক্ষেত্রে সুনিশ্চিত রোজগারের উপায় হল ডেট ফান্ডে বিনিয়োগ করা। টাকা ফেরতের ব্যাপারে নিশ্চিন্ত থাকা যায়।
৩. ব্যালান্সড ফান্ড: এক্ষেত্রে টাকা ইক্যুইটি ও ডেট ফান্ড, উভয় ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করা হয়। উদ্দেশ্য হল, নির্দিষ্ট মেয়াদের শেষে বিনিয়োগকারীকে মোটা অঙ্ক ফেরত দেওয়া। বাজারের গতিপ্রকৃতি অনুযায়ী বিনিয়োগের পরিকল্পনা স্থির করে মিউচুয়াল ফান্ড কর্তৃপক্ষ।
৪. মানি মার্কেট মিউচুয়াল ফান্ড: এ ধরনের ফান্ডকে লিক্যুইড ফান্ড-ও বলে। এক্ষেত্রে সিংহভাগ টাকা স্বল্পমেয়াদি জিনিস যেমন সার্টিফিকেট অফ ডিপোজিট, ট্রেজারি, কমার্সিয়াল পেপারে বিনিয়োগ করা হয়। স্বল্পমেয়াদে বিনিয়োগ এ ধরনের ফান্ডের বৈশিষ্ট্য।
৫. গিল্ট ফান্ডস: সবচেয়ে নিরাপদ হল এ ধরনের ফান্ড। সরকারি সিকিউরিটিজে টাকা ঢালা হয়। ফলে আপনার টাকা মার যাওয়ার ভয় নেই। কষ্টার্জিত টাকা এখানে বিনিয়োগ করে নিশ্চিন্তে থাকা যায়।
সূত্র: ওয়ানইন্ডিয়াডটকম
(এসএএম/১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০)