প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি শেয়ার কি?
বিনিয়োগবার্তা ডেস্ক, ঢাকা: শেয়ারবাজারে নতুন বিনিয়োগকারীদের জন্য বেশ কিছু বিষয় জানা অত্যন্ত জরুরী। কারণ, না জেনে এ বাজারে বিনিয়োগ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তাই পাঠক ও বিনিয়োগকারীদের জ্ঞানের কলেবর সমৃদ্ধ করতে আমাদের নিয়মিত আয়োজন ‘বিনিয়োগ শিক্ষা’। এ সংযোজনে পুঁজিবাজার ও আর্থিক খাতের বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে নিয়মিত ট্রিপস পেতে আমাদের পেজ (www.biniyougbarta.com) এ লাইক দিয়ে সঙ্গেই থাকুন।
প্রাইমারি শেয়ারঃ
বাজারে কোনো কোম্পানি প্রথমে প্রাইমারি শেয়ারের মাধ্যমে প্রবেশ করে। অর্থাৎ নতুন কোনো কোম্পানিকে বাজারে অন্তর্ভুক্ত হতে হলে তাকে প্রথমে প্রাইমারি শেয়ার ছাড়তে হবে। শোনা যায় সবাই বলে প্রাইমারি শেয়ারে কোন লস নাই। সেকেন্ডারি শেয়ারে প্রচুর রিস্ক। এরকম কথা তারা কেন বলে আসুন জেনে নেই। প্রতিটি কোম্পানির শেয়ারের একটা ফেস ভ্যালু থাকে। কোম্পানি যখন তার শেয়ারটি মার্কেটে ছাড়তে চায় তখন সে ফেস ভ্যালুর সাথে প্রিমিয়াম যোগ করে একটি নির্দিষ্ট টাকায় শেয়ারটি অফার করে। বিএসইসি যদি অনুমোদন দেয় তবে তারা তাদের শেয়ার কেনার জন্য দরখাস্ত আহ্বান করে। যাকে আমরা IPO/আইপিও বা ইনিশিয়াল পাবলিক অফার বা প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বলে থাকি।
ধরা যাক কোনো কোম্পানির ফেস ভ্যালু ১০ টাকা এবং তারা ৫ টাকা প্রিমিয়ামসহ শেয়ারের দাম নির্ধারণ করল ১৫ টাকা। এখন আপনি যদি ওই শেয়ার IPO এর মাধ্যমে পেয়ে থাকেন তবে আপনার প্রতি শেয়ারে দাম পরে ১৫ টাকা। আপনি এখন ইচ্ছা করলে এই শেয়ার সেকেন্ডারি মার্কেটে বিক্রি করতে পারবেন। সাধারণত দেখা যায় প্রাইমারি শেয়ারের যে দাম তার তুলনায় সেকেন্ডারি মার্কেটে এর দাম বেশি হয়ে থাকে। আপনার শেয়ারটি যদি সেকেন্ডারি মার্কেটে ২৫ টাকায় ওপেন হয় তবে আপনি তখন বিক্রি করলে প্রতি শেয়ারে ১০ টাকা লাভ পেয়ে যাবেন। আপনি যদি মনে করেন এই কোম্পানি সামনে আরও ভালো করবে তবে প্রাইমারিতে প্রাপ্ত শেয়ার আপনি অনেক দিন ধরেও রাখতে পারেন পরবর্তীকালে বেশি দামে বিক্রির জন্য। আবার ধরুন আপনি যে কোম্পানির প্রাইমারি শেয়ার কিনতে চাচ্ছেন তার প্রিমিয়াম অনেক বেশি। তাহলে সেকেন্ডারি মার্কেটে আপনি যে দামে শেয়ার কিনেছেন তার তুলনায় দাম কমেও ওপেন হতে পারে। তাই প্রাইমারি শেয়ার মানেই লাভ না মনে করে কম্পানিটি কী দামে শেয়ার ছাড়ছে এবং কোম্পানির আয় কেমন অর্থাৎ কোম্পানিটি ভালো কি না তা যাচাই করে কিনুন।
সেকেন্ডারি শেয়ারঃ
প্রাইমারি শেয়ার যখন কেউ বিক্রি করে দেয় তখন তা সেকেন্ডারি শেয়ারে পরিণত হয়। সেকেন্ডারি শেয়ার বাজারে ব্যবসা করতে হলে আপনার শেয়ার মার্কেট সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকতে হবে। অর্থাৎ, আপনাকে ব্যবসা করার জন্য ফান্ডামেন্টাল প্লাস টেকনিক্যাল এনালাইসিস সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। এ ধারণা অর্জন করতে পারলে শেয়ার ব্যবসায় আপনি ভালো লাভ করতে পারবেন। আর আপনি যদি দীর্ঘমেয়াদে শেয়ারে ব্যবসা করেন এবং একে পেশা বা বাড়তি ইনকামের সোর্স হিসেবে ব্যবহার করতে চান তবে সেকেন্ডারি মার্কেট খুবই উত্তম জায়গা।
তবে কেউ যদি মনে করেন শেয়ার ব্যবসার মাধ্যমে রাতারাতি ধনী হয়ে যাবেন তাদের এ ব্যবসায় আসা উচিত নয়। কারণ, প্রতি ব্যবসাতেই লাভ লস থাকে এবং পরিশ্রমের দরকার হয়। তাই যথেষ্ট মেধা ও বুদ্ধি খাটিয়ে ধীরে ধীরে আপনি শেয়ার মার্কেটে অন্যান্য ব্যবসার তুলনায় তুলনামূলকভাবে অনেক ভালো প্রফিট করতে পারবেন।
(এসএএম/২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০)